ঠাকুরগাঁর পীরগঞ্জে রাস্তার কাজে বালুর পরিবর্তে মাটি! সংবাদ প্রকাশের পর কাজ বন্ধ
ঠাকুরগাঁয়ের পীরগঞ্জে পাকা রাস্তা পুনঃস্থাপন ও প্রশস্ত করণ কাজে পাথরের সাথে বালুর পরিবর্তে মাটি মেশানোর অভিযোগে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর। এ নিয়ে জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে মঙ্গলবার সকালে কাজ বন্ধ করে দিয়ে পাথর ও মাটি মিশ্রনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলী।
উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকায় পীরগঞ্জ পৌর শহরের টিএন্ডটি থেকে চৌরঙ্গী পর্যন্ত প্রায় ৬ কিঃ মিঃ পাকা রাস্তা পুনঃস্থাপন ও প্রশস্ত করণের জন্য গত বছরের প্রথম দিকে কাজ শুরু করেন এস এম মঈন নামে ঠাকুরগাঁওয়ের এক ঠিকাদার। পাকা রাস্তার দু’ধারে গর্ত খুড়ে রেখে দীর্ঘ দিন কাজ বন্ধ রাখেন তিনি। এতে ভোগান্তিতে পড়ে রাস্তায় চলাচলকারীরা।
এর পর এলাকাবাসির পীড়াপিড়িতে গত জুন-জুলাই মাসে খুড়ে রাখা সে গর্ত মাটি দিয়ে ভরাট করে ঠিকাদারের লোকজন। এরপর সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে পৌর শহরের টিএন্ডটি থেকে মহিলা কলেজ পর্যন্ত প্রায় দেড় কিঃ মিঃ রাস্তার কার্পেটিং তুলে সাথেই রোলার করে আবার কাজ বন্ধ রাখেন ঠিকাদার। কাজ বন্ধ থাকা সময়ে ঐ রাস্তায় নিয়মিত পানি ছিটানোর কথা থাকলেও তা করা হয়নি। পানি না দেয়ায় রাস্তার ধুলা বালিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে এলাকার বাসিন্দা সহ ঐ রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী জাবরহাট, বৈরচুনা ও সেনগাও ইউনিনেয়র কয়েক লাখ মানুষ। যান বাহনের ধুলায় রাস্তার দু’ধারের বসবাসকারীদের অনেকের শ্বাসকষ্ট সহ এজমা জনিত রোগে আক্রান্ত হন। এলাকার লোকজন আবারো ধরনা দেন কাজ বাস্তবায়নে নিয়োজিত স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরও দ্রুত
কাজ বাস্তবায়ন করার জন্য চিঠি দেন ঠিকাদারকে। এতেও ঘুম ভাঙ্গেনি ঠিকাদারের। অবশেষে ঠিকাদার তার মর্জি মত কয়েকদিন আগে কাজ শুরু করেন। রোলার করা কার্পেটিং এর উপরে পাথর-বালির ডাব্লিউ. ভি. এম. কাজে পাথরের সাথে বালু না মিশিয়ে মাটি মিশিয়ে কাজ করছেন। পানি, মাটি আর পাথরের ঐ মিশ্রন অন্যত্র থেকে ট্রাকে করে এনে রাস্তায় ফেলা হচ্ছে। এরপর রোলার করা হলে পুরো রাস্তা কাদায় ভরে যাচ্ছে। কাদা ভরা ঐ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে সমস্যায় পড়ছেন পথচারীরা।
এলাকাবাসি এর প্রতিবাদ জানিয়ে উপজেলা প্রশাসন সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন। এ নিয়ে সোমবার খোলা কাগজ সহ বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিষয়টি নিয়ে সোমবার উপজেলা পদিষদে উপজেলা আইন শৃংখলা সভায়ও ব্যাপক আলোচনা হয়।
এর পর উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনা মতে মঙ্গলবার সকালে পরিদর্শন শেষে কাজ বন্ধ করে দেন উপজেলা প্রকৌশলী আবু সাঈদ। তিনি জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে আপাতত কাজ বন্ধ করা হয়েছে। পাথরের সাথে মাটি মেশানো হয়েছে কিনা পরীক্ষার জন্য সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে মতামত জানতে ঠিকাদার এস এম মঈনের মোবাইলে (০১৭৮৯৬৬৯৫৬৯) ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন