সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে একাধিক টিসিবির পণ্য তুলছেন চেয়ারম্যানের শ্যালক!
সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নে টিসিবির পণ্য ক্রয়ের কার্ড বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে পরিষদের চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে। প্রকৃত নামধারি সুবিধাভোগীদের কার্ড না দিয়ে ২শত থেকে ১ হাজার টাকার বিনিময়ে অন্যের কাছে টিসিবি কার্ড বিক্রি করেছেন। এছাড়াও চেয়ারম্যানের আত্মীয় স্বজনদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে অসংখ্য টিসিবি কার্ড। এই ইউনিয়নের ৩ হাজার ৮০ টি কার্ড রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় অধিকাংশ নামধারি কার্ডের মালিক প্রাপ্ত টিসিবির পণ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
সোমবার (২৪ জুলাই) সকালে সরজমিনে ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে গেলে দেখা যায় টিসিবি পণ্য নিতে আসা বিভিন্ন এলাকার নারী পুরুষ লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। যাদের হাতে থাকা টিসিবি কার্ডের নামের সঙ্গে তাদের নাম ঠিকানার কোন প্রকার মিল নেই। এছাড়া টিসিবি’র কার্ডে নাম মিল না থাকা ব্যক্তিরা জানান, আমাদের নতুন কার্ড দেওয়ার কথা বলে পুরাতন কার্ড ফেরত নেয়, কিন্তু নতুন কার্ড দেওয়ার কথা বলে চেয়ারম্যান টালবাহানা শুরু করেন। পরবর্তিতে টাকার বিনিময়ে কার্ড নিয়েছি তাও আবার কার্ডের সাথে নামের মিল নেই। এ সময় লাইনে দাড়িয়ে অনেকে এক সাথে ৪ থেকে ৫ টা কার্ডের টিসিবির পণ্য তুলছেন। অনেকে প্যাকেজের মধ্যে থাকা ৫ কেজি চাউল তুলে কালো বাজারির নিকট বিক্রি করছেন। ইউনিয়ন পরিষদের সামনে দেখা যায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পরে আছে বস্তা এর মধ্যে ৫ কেজি করে ১০ প্যাকেট চাউল।
এছাড়াও ঐ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের শ্যালক সিহাবুল আলম বাবু দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তিদের উপেক্ষা করে ক্ষমতার দাপটে ২০ কার্ডের টিসিবির পণ্য তুলে ভ্যান যোগে নিয়ে যাচ্ছেন। চেয়ারম্যানের শ্যালক সিহাবুল আলম বাবুর সাথে কথা বলতে গেলে জানান, আত্মীয় স্বজনের কার্ডের পণ্য একসাথে তুলে নিলাম এই বলেই পরিষদ থেকে তাৎক্ষণিক সটকে পরেন। বানিয়াগাঁতী গ্রামের তাহমিনা খাতুনসহ একাধিক কার্ডধারীরা জানান, তামাই পশ্চিম পাড়া গ্রামের আমিরুল ইসলাম ও আদাচাকী গ্রামের মাসুদ সিকদারের নিকট থেকে অর্থের বিনিময়ে টিসিবির কার্ড নিয়েছেন। কিন্তু কার্ডের সাথে তাদের নামের কোন প্রকার মিল নেই। পণ্য নিতে আসা লাইনে দাঁড়ানো বানিয়াগাঁতী গ্রামের আমিনা খাতুন জানান, আমার হাতে থাকা কার্ডটি আমার নয়। আন্না বেগম নামের এক ব্যক্তির নাম লেখা আছে কার্ডে। ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার জহুরুল ইসলাম জানান, সকালের দিকে ৪-৫ টা করে একেক জন টিসিবি কার্ডে পণ্য তুলেছেন। আমি এসে এটা বন্ধ করে দিয়েছি। এক জন সর্বোচ্চ দুইটা করে টিসিবি কার্ডের পণ্য তুলতে পারবে। কার্ডের সাথে নামের মিল নেই এমন প্রশ্ন তুললে তিনি সদুত্তর দিতে পারেনি। এ ব্যাপারে ভাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম ভূঁইয়া সাথে একাধিক বার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সে ফোন রিসিভ করেননি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফিয়া সুলতানা কেয়া জানান, যদি এ ধরনের অনিয়ম থাকে তাহলে আমরা সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন