সুনামগঞ্জে অবৈধ ভোগ দখলে সরকারী জলমহাল
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলা প্রশাসনের আওতাধীনে থাকা জালধরা নামক জলমহালটি অবৈধভাবে ভোগ দখল করছেন বলে স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের সলপ গ্রামের বাসিন্দা ও সলপ মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি সৈয়দ মিজানুর রহমান নামে প্রভাবশালী ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।
তিনি ওই জলমহালটির ইজারাপ্রাপ্ত না হয়েই গত প্রায় ১৫ দিন যাবত জলমহালটিতে গাছের ডাল ও বাঁশ পুতে অবৈধভাবে দখলে নিয়ে সেখানে তার লোকজনদের দিয়ে মাছ শিকার করে আসলেও রহস্যজনক কারণে বিষয়টি নিয়ে উপজেলা প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করে আসছে।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি জলমহাল ব্যবস্থাপনা নীতিমালা অনুযায়ী এ উপজেলার অনূর্ধ্ব ২০ একর আয়তনের ১৭ টি বদ্ধ জলাশয় ১৪২৯ বাংলা সন হইতে ১৪৩১ বাংলা সন পর্যন্ত ৩ বছর মেয়াদে ইজারা দেওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চলতি বছরের ১ মার্চ দরপত্র আহবান করা হয়। নীতিমালা অনুয়ায়ী নির্দিষ্ট জলমহালের নিকটবর্তী/ তীরবর্তী প্রকৃত মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেড যা সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধিত সেই সব সমিতিগুলোই ওইসব জলমহাল ইজারায় অংশ গ্রহণ করতে পারবে।
এরমধ্যে জালধরা জলমহালটি ইজারা নেওয়ার জন্য স্থানীয় সলপ, মাইজবাড়ি,মাটিকাটা ও ফুলুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড ও সলপ মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড নামে নিবন্ধিত এই দুইটি সমিতি অংশ গ্রহণ করে। তবে ওই দুইটি সমিতির মধ্যে নানান জটিলতার কারনে উপজেলা প্রশাসন ওই জলমহালটির ইজারা সাময়িকভাবে স্থগিত করে দেন।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে ওই জলমহালটি ইজারাপ্রাপ্ত না হয়েই স্থানীয় সলপ মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি সৈয়দ মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে তার লোকজন ওই জলমহালটি অবৈধভাবে দখলে নিয়ে সেখানে গাছের ডাল ও বাঁশ ফেলে ভোগ দখল করছেন।
সলপ, মাইজবাড়ি, মাটিকাটা ও ফুলুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড নামে প্রতিদ্বন্দ্বী সমিতির সভাপতি বাচ্চু মিয়া অভিযোগ করে বলেন, জালধরা জলমহালটি ইজারায় নেওয়ার জন্য তীরবর্তী হিসেবে আমাদের সমিতিও টেন্ডারে অংশ গ্রহণ করে। কিন্তু আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী দুইটি সমিতির মধ্যে বিভিন্ন জটিলতার সৃষ্টি হওয়ায় উপজেলা প্রশাসন ওই জলমহালের ইজারা কার্যক্রম স্থগিত রাখার পরও সলপ মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে জোর পূর্বক অবৈধভাবে ওই জলমহালটি কি ভাবে ভোগ দখল করছেন তা কিছুই বোঝে উঠতে পারছিনা।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সলপ মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি সৈয়দ মিজানুর রহমান বলেন, আমরা জালধরা জলমহালের পাশে থাকা শিমুলতলা নামক জলমহালটি রক্ষনা- বেক্ষণ করে আসছি। তবে ইজারা না পাওয়া পর্যন্ত আমরা জালধরা জলমহালে যাওয়ারতো প্রশ্নই আসেনা।
এ ব্যাপারে উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনতাসির হাসান বলেন, জালধরা জলমহালটি নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী দুইটি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির মধ্যে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনে ৩ সদস্য বিশিষ্ট্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। আশা করি আগামি সপ্তাহের মধ্যেই ওই কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি অবৈধ দখলদারের বিষয়টিও খোঁজ নিয়ে দেখব এবং প্রমান পেলে তাদের বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন