আমেরিকান মুসলিমদের বাদ দিয়ে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের প্রথম ইফতার
মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়ে হোয়াইট হাউসে এবারই প্রথম ইফতার আয়োজন করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু আমেরিকান মুসলিমদের কয়েকটি সংগঠন প্রতিবাদ জানিয়ে তাতে উপস্থিত হয়নি। অনেকেই হোয়াইট হাউসের সামনে বিক্ষোভ করেছেন। তবে উপস্থিত হয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশের প্রতিনিধিরা।
নিয়মিতই মুসলিমবিরোধী কথাবার্তা বলে আসা ট্রাম্প ইফতার আয়োজন করেছিলেন স্ট্যাট ডাইনিং রুমে। ইফতারে ট্রাম্প ‘শান্তি ও ন্যায়বিচারের’ জন্য প্রার্থনা করেছেন।
রমজানের তাৎপর্য তুলে ধরে মধ্যপ্রাচ্যে সহযোগিতার আহ্বানকে পুনরায় মনে করিয়ে দেন ট্রাম্প। বলেন, ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলেই কেবল আমরা সবার জন্য নিরাপদ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ অর্জন করতে পারব।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, এই কারণে প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম সফর মুসলিম বিশ্বের প্রাণকেন্দ্রে হওয়াতে আমি গর্বিত। সেখানে আমি পঞ্চাশটিরও বেশি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের নেতাদের সম্মেলনে ভাষণ দিয়েছি। এটা ছিল অনেক বড় বিষয়।
ইফতারকে বিশ্বের অন্যতম মহান ধর্মের পবিত্র ঐতিহ্য উল্লেখ করে ট্রাম্প মহানুভবতা ও কল্যাণের জন্য প্রার্থনা করেন।
ট্রাম্প যখন হোয়াইট হাউসের ভেতরে এই বক্তব্য দিচ্ছিলেন তখন বাইরে বেশ কয়েকটি মুসলিম সংগঠন প্রতিবাদে নিজেরাই ইফতার আয়োজন করে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, যে সহযোগিতা ও সংহতি আমরা গত এক বছরে অর্জন করেছি তা আরও গভীর হয়েছে। অনেক বৈঠক হয়েছে, এমনকি ওভাল অফিসেও। আমরা অনেক অগ্রগতি অর্জন করেছি।
ট্রাম্পের আমন্ত্রণে ইফতারে যোগ দিয়েছেন মূলত বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিক ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা। ভাষণ শেষে ইফতারে হাজির হওয়া সৌদি দূত প্রিন্স খালিদ বেন সালমান ও জর্ডানের রাষ্ট্রদূত দিনা কওয়ারের টেবিলে যান ট্রাম্প। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূতও।
ইফতারে উপস্থিত ছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসর, তিউনিসিয়া, কাতার, বাহরাইন, মরোক্কো, আলজেরিয়া, লিবিয়া, কুয়েত, গাম্বিয়া, ইথিওপিয়া, ইরাক ও বসনিয়ার প্রতিনিধিরা।
ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সসহ ট্রাম্পের মন্ত্রিসভার অনেক সদস্য ইফতারে উপস্থিত ছিলেন। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি সারাহ স্যান্ডার্স জানিয়েছেন, আমি মনে করি ইফতারে ৩০-৪০ জন উপস্থিত হয়েছিলেন।
কাউন্সিল অন আমেরিকান ইসলামিক রিলেশন্স-এর এক পরিচালক রাবর্ট ম্যাকাউ বলেন, একবছর ইফতার আয়োজন না করে মুসলিমদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা, কঠোর যাচাই প্রক্রিয়া, যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিমদের ওপর নজরদারী বাড়ানো হয়েছে। প্রশাসনের এই ভণ্ডামি আমরা তুলে ধরতে চাই। এতো কিছু পরও আমরা বন্ধু বলে দেখাতে হবে?
যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম সংগঠনগুলো বুধবার জানিয়েছে তাদের ইফতারে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। ইসনা’র আন্তঃধর্মীয় পরিচালক কলিন ক্রিস্টোফার বলেন, দুর্নীতিবাজ দেশের প্রতিনিধি, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ যেসব দেশ নিজেদের নাগরিকদের ওপর বৈষম্য ও অবিচার চালাচ্ছে; তাদেরকেই আমন্ত্রণ জানাতে চায় হোয়াইট হাউস তাহলে এখন হোয়াইট হাউস প্রশাসনের সঙ্গেই যায়।
ইফতার শেষে অনেক সাংবাদিক টুইটারে লিখেছেন, প্রার্থনায় নেতৃত্ব দেওয়া ইমাম ছাড়া আমন্ত্রিতদের মধ্যে কোনও আমেরিকান মুসলিম ছিলেন না। এমনকি রিপাবলিকান ও ট্রাম্প সমর্থক মুসলিম গোষ্ঠীগুলোকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। আমেরিকান মুসলিমস ফর ট্রাম্প নামের সংগঠন সিএনএনকে জানিয়েছে, হোয়াইট হাউস শুধু মুসলিম রাষ্ট্রদূত ও মন্ত্রিসভার সদস্যদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন