এই নারী বাস্তবের ‘ইন্ডিয়ানা জোন্স’!

এই পৃথিবীতে সবচেয়ে জনপ্রিয় ছবিগুলোর একটি ‘ইন্ডিয়ানা জোন্স’ ফ্রাঞ্চাইজি। পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনের খোঁজে ইন্ডিয়ানার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানগুলো দেখতে বসলে চোখের পাতা ফেলাই কঠিন হয়ে যায়।

এটা তো সিনেমার কাহিনী। কিন্তু এবার খোঁজ মিলেছে বাস্তবের ইন্ডিয়ানার। তবে এখন তিনি ৯৫ বছরের এক বৃদ্ধা। তবুও তাকে ‘ইন্ডিয়ান জোয়ান’ নামেই ডাকছেন সবাই। তার সংগ্রহে রয়েছে প্রাচীনকালের দারুণ সব পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন। মোটামুটি সাড়ে ৭ লাখ ডলারের সংগ্রশালা।

সংগ্রহের তালিকাটা সমৃদ্ধ। তার কাছে আছে একটি রোমান সাম্রাজ্যের ড্যাগার, নিয়োলিথিক সময়ের কুঠারের মাথা, মমির মুখোশ এবং যীশুর সময়কার ক্রুশ বিদ্ধ যীশুর মূর্তি। মিশর, সিরিয়া, ইসরায়েল এবং অন্যান্য দেশ থেকে মাটি খুঁড়ে তিনি এসব অমূল্য সম্পদ সংগ্রহ করেছেন।

কিন্তু এই নারীর পরিচয় প্রকাশের পর পরিস্থিতি কিছুটা ঘোলাটে হয়ে গেছে। যদিও সত্যিকারের ইন্ডিয়ানা জোয়ানকে পাওয়ার পর অনেকেই তার রোমাঞ্চকর জীবনের ইতিহাস জানতে অস্থির হয়ে রয়েছেন। ওয়েস্ট অস্ট্রেলিয়ান মূলত জোয়ান হাওয়ার্ড নামের এই নারীকে আবিষ্কার করে। সংগ্রহের জিনিসপত্র তিনি পার্থে সংরক্ষণ করে রেকেছেন। এদিকে, মিশরের হেরিটেজ টাস্কফোর্স তাদের দেশের সম্পদ চুরির অভিযোগে অস্ট্রেলিয়ার সরকারের কাছে তদন্ত দাবি করেছে। মিশরের কর্তৃপক্ষ জানায়, ১৯৬০ থেকে ৭০ এর মধ্যে জোয়ান তার স্বামী কিথ হাওয়ার্ডের সঙ্গে জাতিসংঘে কাজ করতেন। তাদের কর্মপরিধি ছিল মধ্যপ্রাচ্য।

অস্ট্রেলিয়ার ফরেন অ্যাফেয়ার্স বিভাগ ইতিমধ্যে জানিয়েছে যে, তদন্ত শুরু করা হয়েছে। অন্য দেশের সম্পদ অবৈধভাবে আনার নমুনা পাওয়া গেলে তা ওই দেশকে ফেরত দেওয়া হবে।

ওয়েস্ট অস্ট্রেলিয়ান আরো জানায়, হাওয়ার্ড দম্পতি ওই সময় পুরাতাত্ত্বিক জিনিস আবিষ্কারে খননকার্যে দায়িত্বে ছিলেন। তখনই ওগুলো নিজেরা সংগ্রহ করেছেন। আর এগুলো নেওয়া বা নিজের দেশে আনার বিষয়ে আইন আরো কঠোন হওয়ার আগেই তারা কাজটি সেরেছিলেন। এ ধরনের প্রাচীন অমূল্য সম্পদ নিজের মতো করে নিজের অন্য দেশে নিয়ে যাওয়াকে ইউনেস্কো অবৈধ ঘোষণা করে ১৯৭০ সালে।

মিশরের হেরিটেজ টাস্কফোর্সের পুরাতত্ত্ববিদ মনিকা হান্না এক খোলা চিঠিতে জোয়ানের এহেন কর্মকাণ্ডকে ‘লুটেরার আচরণ’ বলে মন্তব্য করেছেন। কোনো দেশের সাংস্কৃতি ঐহিত্যকে এভানে অন্য দেশে নিয়ে যাওয়া যায় না। এতে ওই দেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কাজেই হাওয়ার্ডের কাছে যে জিনিসগুলো রয়েছে তা সত্যিকার মালিকদের কাছে চলে যাওয়া উচিত।

সূত্র : ফক্স নিউজ