এপ্রিলে ৪২৭ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫৪৩
চলতি বছরের এপ্রিলে দেশে ৪২৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৪৩ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। আজ শনিবার সংস্থাটি এ তথ্য জানায়।
এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্ঘটনায় ৫৪৩ জন নিহতের পাশাপাশি আহত হয়েছেন ৬১২ জন। নিহতদের মধ্যে ৬৭ জন নারী ও ৮১টি শিশু রয়েছে। সড়কে শুধু মোটরসাইকেল দুর্ঘটনাই ঘটেছে ১৮৯টি। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৪৪ দশমিক ২৬ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ২০৬ জন, যা মোট নিহতের ৩৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন জানায়, গত এপ্রিলে দুর্ঘটনায় ১১৬ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ২১ দশমিক ৩৬ শতাংশ। আর যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৮৭ জন, অর্থাৎ ১৬ শতাংশ। এ সময়ে ছয়টি নৌ দুর্ঘটনায় আটজন নিহত হয়েছেন এবং ছয়জন নিখোঁজ রয়েছেন। একই সময়ে ২১টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত এবং ৫ জন আহত হয়েছেন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন সাতটি জাতীয় দৈনিক, পাঁচটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
প্রতিবেদনে দুর্ঘটনার পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনায় গত এপ্রিলে প্রতিদিন গড়ে ১৮ জন নিহত হয়েছে। মার্চ মাসে প্রতিদিন গড়ে নিহত হয়েছিল ১৯ জন। এই হিসাবে মার্চের তুলনায় এপ্রিল মাসে প্রাণহানি কমেছে ৪.৭৩ শতাংশ। তবে এটা উন্নতির কোনো টেকসই সূচক নির্দেশ করছে না। দুর্ঘটনায় ১৮ থেকে ৬৫ বছর বয়সী কর্মক্ষম মানুষ নিহত হয়েছেন ৪৩১ জন, অর্থাৎ ৭৯.৩৭ শতাংশ। তাছাড়া ট্রাকসহ পণ্যবাহী দ্রুতগতির যানবাহন ও মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ১৩১টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ১৫৬ জন। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ১৯টি দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে কম ২৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। দুর্ঘটনার সময় বিশ্লেষণে দেখা যায়, সকালে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৮৭টি ঘটেছে জাতীয় মহাসড়কে।
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের মধ্যে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, পিকআপে ৩০ দশমিক ১১ শতাংশ, ট্রাক্টর, ট্রলি, লরি, ড্রামট্রাক, তেলবাহী ট্যাংকার, গ্যাস সিলিন্ডারবাহী ট্যাংকার ৬ দশমিক ২০ শতাংশ, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার, অ্যাম্বুলেন্স, পুলিশ জিপে ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ, যাত্রীবাহী বাসে ১০ দশমিক ৪৩ শতাংশ, মোটরসাইকেলে ২৬ শতাংশ, থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক, সিএনজি, অটোরিকশা,অটো ভ্যান, শিশুক) ১৫ দশমিক ৩২ শতাংশ, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন (নসিমন, ভটভটি, আলমসাধু, মাহিন্দ্র, টমটম, লাটাহাম্বা, ডাম্পার) ৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ এবং বাইসাইকেল, প্যাডেল রিকশা, রিকশাভ্যান ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
এই প্রতিবেদনের বিষয়ে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সরকারের তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে কোনো আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে মূলত সড়ক পরিবহন খাতের নৈরাজ্য ও অব্যবস্থাপনার কারণে। এই অবস্থার উন্নয়নে টেকসই সড়ক পরিবহন কৌশল প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করতে হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন