কিশোর গ্যাং একটি জটিল সামাজিক সমস্যা

দেশ জাতি ও বিশ্বের কাছে কিশোরদের অপরাধ এখন জটিল ও মারাত্মক সমস্যা। সংগঠনের সমষ্টিবদ্ধ নৃশংস নাম “কিশোর গ্যাং”। দেশজুড়ে বিরাজমান সমস্যা আগের থেকে বর্তমানে ব্যাপক। এটি একটি চলমান সমস্যা যা শুধু বেড়েই যাচ্ছে। মেয়েদের হয়রানিসহ ধর্ষণ ও ধর্ষনের পর খুন যাদের নিত্যদিনের ঘটনা। এভাবে চললে আগামী প্রজন্ম রক্ষা অসম্ভব। দেশকে বাঁচাতে এখনই নেওয়া উচিত পদক্ষেপ যা বাংলাদেশকে কিশোর গ্যাং মুক্ত করবে।

গ্যাংটি সৃষ্টি হয় ১২ থেকে ১৭ বছরের বাচ্চাদের নিয়ে। শহরের যেখানে কিশোর গ্যাং আছে সেখানে স্কুল থেকে শুরু করে প্রতিটি অলিতে গলিতে তাদের নাম ও লগো থাকে। সেই নামগুলোকে বিভিন্নভাবে প্রমোট করা হয় মেসেঞ্জার, ইউটিউব ও তথ্যপ্রযুক্তির প্রায় সকল যোগাযোগ মাধ্যমে। এছাড়াও বিভিন্ন ব্যাচলেট ও একই জামাকাপড় পরে তারা তাদের বৈশিষ্ট্য সামনে তুলে ধরে।

ক্ষমতা ও অর্থ কিশোরদের জন্য অন্যতম অপ্রোয়জনীয় জিনিস হলেও বহ্যিকভাবে অল্প বয়সে এই প্রয়োজন গুলো মেটানোর জন্য শুরু হয় কিশোর গ্যাং। গ্যাং গড়ে উঠার আরেকটি কারন ব্যক্তিত্ব, অধিপত্য ও অস্তিত্ব তুলে ধরা। পারিবারিক বিশৃঙ্খলা, নেশাগ্রস্ত অভিভাবক, বন্ধুদ্ধের মাদক/নেশাজাতীয় জিনিসগুলো নিয়মিত দৃশ্যমান বিষয়টিও তাদের উৎসাহী করে। এভাবে নেতা হওয়া প্রবণতা, মুভির নায়কদের অনুকরণ, অল্প বয়সে মিলন-সঙ্গম আসক্তি কিশোরদের এই পথে জড়িত হওয়ার কারণ।

কিছু বছর আগে উত্তরায় আদনান হত্যার পর বিষটি নজর কারে সবার। এভাবেই সর্বশেষ ছাত্রলীগের একটি কিশোরগ্যাং চট্টগ্রামে মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শাহজাহানকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এভাবে দেশ ও বিশ্বব্যাপী অনিয়ন্ত্রক একটি বিষয় হয়ে পড়েছে।

সাধারণত দলগত ছায়াপথ এই পৃষ্ঠপোষক। বড় ভাইদের সেল্টার তাদের আরও সক্রিয় করে।
শহর থেকে গ্রাম পর্যায়ে ছোট্ট ছোট্ট পুলিশিং কার্যক্রমের মাধ্যমে তাদের নিয়ন্ত্রন রাখা যায়। পরিবারের উচিত উঠতি বয়সের কিশোরদের বুঝানো এবং সংযত রাখা। নজর রাখা তার সহপাঠী বন্ধুদেরও উপর, শিশু-কিশোরের মানসিক সমস্যা দূর করা, প্রয়োজনে চিকিৎসা দেওয়া।

কিশোরদের মেধা বিকাশের জন্য বিভিন্ন অলিম্পিয়ার, প্রতিযোগিতা ও সংযত সংস্কৃতির ব্যবস্থা করা। বিশেষ ব্যবস্থা করে খুলে দেওয়া উচিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সুস্থ বিনোদন, চারিত্রিক গুনাবলি শিক্ষা ও ধর্মীয় পবিত্র কিতাব ও সুন্নাহ শিক্ষা দেওয়া।

গ্যাংয়ের পৃষ্ঠাপোষক সবাইকে আইনের আওত্তায় আনতে হবে। যে কোন ধরনের অপরাধ পূর্ব সনাক্ত পরিকল্পনা রাখতে হবে। প্রয়োজনে কিশোর পরিকল্পনা সংস্থা গড়ে তুলতে হবে এবং খেলাধুলায় আগ্রহী করে তুলতে পারলে কিশোর গ্যাং নামক দুঃস্বপ্ন হারিয়ে যাবে।

 

লেখক:
রানা আহম্মেদ অভি
শিক্ষার্থী, বাংলা বিভাগ
উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়