লাইসেন্স প্রদানে হয়রানি বন্ধে ইজিবাইক চালকদের সমাবেশ ও বিক্ষোভ

৩০০ জনের নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ঘােষিত নতুন রিকশা, ভ্যান ও ঠেলাগাড়ির লাইসেন্স প্রদানে সময়ক্ষেপণ ও হয়রানি বন্ধে সমাবেশ ও বিক্ষোভ করেছে রিকশা, ব্যাটারি রিকশা, ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদ।

শুক্রবার (১১ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের আহ্বায়ক খালেকুজ্জামান লিপন। বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি রতন মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট কারু হােসেন প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, সারাদেশে গ্রাম থেকে নগর, মহানগরে প্রায় ৫০ লাখ রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক চালক মানুষকে সেবা দিয়ে আসছে। কিন্তু ব্যাটারি রিকশা ও ইজিবাইকের চলাচলে অনুমতি নেই বলে তা চলতে বিভিন্ন জায়গায় বাধা দেয়া হচ্ছে। রিকশা কিংবা ব্যাটারি আটক করা হচ্ছে। ব্যাটারি বিক্রি বৈধ, ইজিবাইক বিক্রি বৈধ, তা রাস্তায় চললে অবৈধ; তা মেনে নেয়া যায় না।

তারা বলেন, এ সংগ্রাম পরিষদ নকশা আধুনিকায়ন ও নীতিমালা প্রণয়ন করে বাটারি রিকশা ও ইজিবাইকের লাইসেন্স প্রদান, সড়ক-মহাসড়কে স্বল্পগতির গাড়ির জন্য সার্ভিস রােড বা বাইরােড নির্মাণ, বিকল্প ব্যবস্থা করা, উচ্ছেদ বন্ধসহ তিন দফা দাবিতে গত সাত বছর ধরে আন্দোলন পরিচালনা করে আসছে। তিন দফা দাবি বাস্তবায়নে গত ১৫ মার্চ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

তারা আরও বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে ইতােমধ্যে লাইসেন্স প্রদান ইস্যুতে একটি টিম গঠন করা হয়েছে। এরইমধ্যে সিলেট মহানগরসহ বিভিন্ন জেলায় রিকশা আটক অব্যাহত রেখেছে প্রশাসন। আটক রিকশা মুক্ত করার দাবিতে আন্দোলন করায় মিথ্যা মামলায় সিলেট জেলা সংগ্রাম পরিষদ ও বাসদ নেতা আবু জাফর, প্রণব জ্যোতি পাল, জোবায়ের চৌধুরী সুমনসহ ৩০০ জনকে হয়রানি করা হচ্ছে।

বক্তারা আরও বলেন, ঢাকা মহানগরে প্রায় ১২ লাখ রিকশা-ভ্যান চলাচল করলেও লাইসেন্স আছে মাত্র ৮৭ হাজারের। নতুন লাইসেন্স দেয়া বন্ধ রয়েছে গত প্রায় ৩০ বছর। নতুন লাইসেন্স দেয়ার জন্য বিভিন্ন সময় দাবি জানানাে হলেও তা নিয়ে গড়িমসি করে আসছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।

আন্দোলনের মুখে গত বছর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নতুন লাইসেন্স দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে। লাইসেন্সপ্রতি ১১০০ টাকা ও আবেদন ফরম প্রতি ১০০ টাকা হিসাবে মােট ১২০০ টাকা একটি রিকশার জন্য নেয়া হয়েছে ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে। আমাদের জানামতে ইতােমধ্যে প্রায় তিন লাখ আবেদন জমা পড়েছে। কিন্তু টাকা জমা দেয়ার ছয়-সাত মাস অতিবাহিত হলেও নতুন লাইসেন্স প্রদান নিয়ে সিটি করপোরেশন সময়ক্ষেপণ ও হয়রানি করছে। যার ফলে প্রায় তিন লাখ রিকশাচালকের জীবন-জীবিকা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

আমরা ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্তৃক প্রদত্ত নতুন রিকশা, ভ্যান, ঠেলাগাড়ির লাইসেন্স প্রদানে সময়ক্ষেপণ ও হয়রানি বন্ধ করে দ্রুত লাইসেন্স প্রদানের দাবি জানাই। অন্যথায় মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নতুন লাইসেন্স প্রদানের দাবিতে সংগ্রাম পরিষদ দেশব্যাপী কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে।