কুড়িগ্রামে ১৪৪ ধারা লঙ্ঘন করে গরিবের জমি দখল

কুড়িগ্রামে ১৪৪ ধারা অমান্য করে আশি শতক জমি দখল নেয়ার অভিযোগ উঠেে ভূমিদস্যু সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। বিবদমান জমিতে বিপজ্জনক পরিস্থিতি এড়াতে আদালতের দেয়া নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বাড়িঘর দখল করায় ভীতসন্ত্রস্ত ভূক্তভোগী পরিবারটি। যেকোন মহুর্তে ঘটতে পারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ।

২০১৭ সালে কুড়িগ্রাম পৌর এলাকার ৮নং ওয়ার্ডের কৃষ্ণপুর কুমারপাড়া টেক্সটাইল মোড়ের বাসিন্দা কমর উদ্দিনের দুই কন্যা কলম বিবি ও কবিজন নেছার নিকট হতে ৪৯ শতক জমি ক্রয় করেন আব্দুর রাজ্জাক গং। ক্রয়কৃত জমিটি সুকৌশলের দখলে নিতে এলাকার প্রভাবশালী ভূমিদস্যু মো. জাফর আলী রাতারাতি বাড়িঘর ভেঙ্গে দিয়ে উক্ত জমির দখল নেয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

৪ ফেব্রুয়ারি-২৪ (সোমবার) সকাল ১১টায় কুড়িগ্রাম সদর থানা কর্তৃপক্ষ বিপজ্জনক পরিস্থিতি এড়াতে পৌর এলাকার কুমারপাড়া গ্রামে অবস্থিত বিবদমান ৮০ শতক জমিতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারা নোটিশ জারি করে। যার পিটিশন নং-১০৫/২০২৪, প্রসেস নং-৩৩৪/২৪। নোটিশে উভয় পক্ষকে বিবদমান জমিতে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় নির্দেশনা দিলেও বিবাদী মো. জাফর আলী তা তোয়াক্কা না করে জমি দখল নিতে সংঘবদ্ধ হয়ে উক্ত জমিতে ট্রাকযোগে দিনব্যাপী বালু ফেলতে থাকে। এতে বাদী রফিকুল ইসলাম বাঁধা প্রধান করলেও তিনি তা কর্ণপাত না করে জায়গাটি দখল নিতে থাকে। ভূমিদস্যু মো. জাফর আলীর বেপরোয়া কর্মকান্ডে বাদী রফিকুল ইসলাম জরুরি সেবা ট্রিপল নাইনে ফোন দিলে পরে পুলিশ এসে কাজ বন্ধের নির্দেশ দেয়। সাময়িক সময়ের জন্য কাজ বন্ধ রাখলেও কিন্তু আজ ৬ ফেব্রুয়ারি পুনরায় জমিটি টিনের চেকার দিয়ে জবরদখল করে জাফর আলী ও তার লোকজন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘জাফর আলী এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায় না। প্রকৃতপক্ষে জমিটি রফিকুল ইসলামদের।

একই এলাকার মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘জমির মালিক অসহায় হওয়ায় ভূমিদস্যু জাফর আলী টাকার জোরে এলাকার বখাটে লোকজনকে ভাড়া করে জমি দখলে নেয়ার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সে এর পূর্বেও এলাকার আরো দুটি পরিবারের জমি দখল নিয়েছে।’

মামলার বাদী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ৮০ শতক জমি দীর্ঘদিন যাবত ভোগদখল করে আসছিলাম। কিন্তু হঠাৎ জাফর আলী ২০২৩ সালের করা একটি ভূয়া দলিল দেখিয়ে উক্ত জমি দখলের হুমকি দেয়। যার কারণে ১৪৪ ধারা জারির আবেদন করেছি। এরই জের ধরে আজ সে সকাল থেকে উক্ত জমিতে ট্রাকযোগে বালু ফেলতে থাকে। থানায় অভিযোগ দিয়েছি। থানা কর্তৃপক্ষ আইনি সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে।’

অভিযুক্ত মো. জাফর আলী বলেন, ‘আমি শরীক অপর পক্ষের কাছে ২০২৩ সালে জাগাটি কিনেছি। আমার জায়গায় আমি বালু ভরাট করেছি। এর বাইরে আমি কোন মন্তব্য করতে রাজি নই।’

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, ‘বিবদমান জমিতে ১৪৪ ধারা জারির পরেও বিবাদী পক্ষের বালু ভরাটের ঘটনায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করা হয়েছে। বিবাদী পক্ষ যাতে আইন অমান্য করতে না পারে সে বিষয়টি দেখবো।’