কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে গরুর লাম্পি স্কিন রোগে দিশেহারা কৃষক

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে ব্যাপকহারে গবাদিপশুর লাম্পি স্কিন রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। এতে প্রান্তিক কৃষক ও খামারীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের অধিকাংশ বাড়িতেই গরুর এ রোগ দেখা দিয়েছে। ফলে গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। নিত্যপণ্যের উর্ধ্বগতির এই পরিস্থিতিতে আক্রান্ত গরুর চিকিৎসা চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন কৃষকরা।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত চার দিনে উপজেলার প্রায় শতাধিক কৃষক ও খামারী লাম্পি স্কিন রোগ আক্রান্ত পশুর চিকিৎসা নিয়েছে। লাম্পি স্কিন রোগের বিস্তার রোধে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল খামারিদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে এক যোগে কাজ করছে। এটা একধরনের ভাইরাস। যা মশা-মাছি, আটালি ও ইনজেকশনের সুচের মাধ্যমে এ রোগ ছাড়াচ্ছে।

উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তর বলছে, গরুর
লাম্পি স্কিন রোগের বিস্তার রোধে খামারী, প্রান্তিক কৃষক, জনপ্রতিনিধি, পল্লী প্রাণি চিকিৎসক, ইমাম ও ওষুধ ব্যবসায়ীদের নিয়ে জনসচেতনতামূলক সভা নিয়মিত অনুষ্ঠিত হচ্ছে ।

পল্লী প্রাণী চিকিৎসকরা বলছেন, বিরূপ আবহাওয়ার কারণে এ বছর বর্ষা মৌসুমে লাম্পি স্কিনের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। এটা খুব দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ছে গ্রামের পর গ্রামে।

ভূরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নের বাগভান্ডার গ্রামের কৃষক আব্দুল জলিল বলেন, আমার ৩টি গরুর মধ্যে ১টি গরু ল্যাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে, উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসে এসে চিকিৎসা নিয়ে ঔষধ খাওয়াচ্ছি।
কামাত আঙ্গারিয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম বলেন, একটি বাছুর গরর সমস্ত শরীর গুটি গুটি হয়ে ফুলে গেছে। গলায় টিউমারের মত শক্ত হয়ে আছে। এর চিকিৎসায় অনেক টাকা খরচ হয়েছে কিন্তু পুরোপুরি সুস্থ হয়নি।
তিলাই ইউনিয়নের পশ্চিম ছাট গোপালপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন বলেন, তার দুটি গরু লাম্পি রোগে আক্রান্ত হয়েছে। গরুর সারা শরীরে গুটি গুটি দাগের সৃষ্টি হয়েছে।

একাধিক পল্লী প্রাণি চিকিৎসক জানান, তারা প্রতিদিন ৮ থেকে ১০টি আক্রান্ত গরুর প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছেন। গরুর এ রোগ ব‍্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শামীমা আক্তার বলেন, উপজেলায় ব্যাপকহারে লাম্পি স্কিন রোগ দেখা দিয়েছে। তিনি লাম্পি স্কিন রোগের চিকিৎসায় পল্লী প্রাণি চিকিৎসকদের এন্টিবায়োটিক ও ব্যথানাশক ওষুধ ব্যবহারে বিরত থাকার আহ্বান জানান। খামারিদের খামার পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখাতে বলেন। এছাড়া ওষুধ বিক্রেতাদের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া এন্টিবায়োটিক বিক্রি না করার পরামর্শ দেন তিনি ।