কুমিল্লায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে, প্রাণ হারিয়েছেন ৯৬০ জন
কুমিল্লায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে। ২০২০ সালে সংক্রমণ শুরুর পর থেকে দুই লাখেরও বেশি মানুষ করোনা পরীক্ষা করিয়েছে। করোনার শুরু থেকে কুমিল্লা জেলায় সরকারি হিসেবে মৃত্যুবরণ করেছেন ৯শ’ ৬০ জন। ২০২১ সালে জেলায় করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ৩০ হাজার অধিবাসীর। তবে এই জেলায় করোনার লক্ষণ ও উপসর্গ নিয়ে কতজন মারা গিয়েছে তার কোন হিসেব নেই। ওই বছর কুমিল্লায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৬শ’ ৯৯ জন। এর মধ্যে বেশির ভাগই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণে মৃত্যু। ২০২২ সালের শুরুর ২৫ দিনে জেলায় করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ১ হাজার ১৭৫ জন। সারাবিশ্বে করোনার ততৃীয় ঢেউ শুরুর পর গত এক সপ্তাহে কুমিল্লা জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যটা আবারো বাড়তে শুরু করেছে। এর আগে গত বছরের জুন-জুলাই-আগষ্ট-সেপ্টেম্বর মাসে কুমিল্লায় করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ হার ছিলো সারা দেশের মধ্যে অন্যতম শীর্ষে।
এদিকে, কুমিল্লায় গত ২৪ ঘন্টায় আরো ১৯৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৪১ দশমিক ৯ শতাংশ। আক্রান্তদের মধ্যে ৭০ জন কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন এলাকার বাসিন্দা। এছাড়াও লাকসাম উপজেলায় সর্বোচ্চ ৩৬ জন এবং দেবিদ্বার উপজেলায় ১৩ জন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হন।
এ নিয়ে কুমিল্লায় মোট করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৪০ হাজার ২৯৩ জনে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছে ৩৮ হাজার ৩০৬ জন, প্রাণ হারিয়েছেন ৯৬০ জন।
বুধবার সকালে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, কুমিল্লায় করোনা পরীক্ষাকারীদের মধ্যে অর্ধেকই পজেটিভ শনাক্ত হচ্ছেন। কুমিল্লা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিবেদনে দেখা গেছে গত ২৪ ঘন্টায় কুমিল্লা জেলায় করোনা সংক্রমণ শনাক্তের হার ৪১ শতাংশের বেশি। এই হার প্রতিদিনই দ্রুত বেগে বাড়ছে। যত বেশি করোনা পরীক্ষা হচ্ছে তত বেশিই করোনা আক্রান্ত বলে শনাক্ত হচ্ছে। শনাক্তদের বেশির ভাগই কুমিল্লা নগরীর বাসিন্দা এবং এর পরেই আছে লাকসাম উপজেলা। এছাড়া অন্যান্য উপজেলায় করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হচ্ছে প্রতিদিন।
কুমিল্লার ডেপুটি সিভিল ডা. সার্জন নিসর্গ মেরাজ চৌধুরী জানান, কুমিল্লায় এখনো পর্যন্ত করোনা শনাক্তের যে হার তা স্বাভাবিক ভাবেই উর্দ্ধমুখী। কিন্তু যে হারে বাড়ছে সে পরিস্থিতিতে বলা যায়- সেটি ওমিক্রণ হতে পারে।
এদিকে কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন জায়গায় বেড়েছে ঠান্ডা, জ্বর ও সর্দির প্রকোপ। একই উপসর্গ করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের। অনেকে আবার সাধারণ অসুখ মনে করেও করোনা পরীক্ষা করছেন না।
তবে জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. নিসর্গ মেরাজ চৌধুরী বলেন, এই ধরনের লক্ষণ থাকলেও করোনা পরীক্ষা করা প্রয়োজন। আর ওমিক্রনের লক্ষণ খুবই মৃদু হয়। আর এই ঢেউয়ে কুমিল্লা জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে একে বারে খারাপ অবস্থায় হাসপাতালে এসেছেন এমন রোগীর খবরও পাওয়া যায় নি। তবে যেহেতু একই সময়ে সিজনাল ফ্লু এবং ওমিক্রনের সংক্রমন দেখা দিয়েছে, যে কারনে আরো ১৫ থেকে ২০ দিন পর বুঝা যাবে আসলে কত মানুষ করোনায় সংক্রমিত হয়েছে। তবে এই মুহুর্তে স্বাস্থ্যবিধি মানা সবচেয়ে বেশি জরুরী।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন