খাগড়াছড়িতে ”রিইলং পোয়ে” উৎসব
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাতে বর্ণিল আয়োজনে মারমা স¤প্রদায়ের সাংগ্রাই র্যালী উত্তর ”রিইলং পোয়ে” উৎসব শুরু হয়েছে। পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর প্রাণের উৎসব বৈসাবি-কে ঘিরে পুরো খাগড়াছড়ি জেলায় আনন্দের রং ছড়িয়ে পড়েছে। বৃধবার থেকে শুরু হয়েছে মারমা স¤প্রদায়ের মাস দিন ব্যাপী ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই উৎসব। মারমা স¤প্রদায়ের সাংগ্রাই উৎসবকে ঘিরে খাগড়াছড়ি জেলা শহর নানা রং-এ রঙ্গিন হয়ে উঠেছে। এ উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ছিল মারমা জনগোষ্ঠীর বর্ণাঢ্য সাংগ্রাাই র্যালী উত্তর ’রিইলং পোয়ে বা জলকেলি বা জলোৎসব। সকালে বৌদ্ধ বিহারগুলোতে ক্যং ফুল পূজার মধ্য দিয়ে সাংগ্রাই উৎসবের সূচনা হয়। সাংগ্রাই উৎসব উপভোগ করতে খাগড়াছড়ি এসেছে বিপুল সংখ্যক পর্যটক।
বুধবার(১৩ই এপ্রিল) সকালে খাগড়াছড়ি শহরের পানখাইয়া পাড়ায় মারমা উন্নয়ন সংসদের উদ্যোগে আয়োজিত সাংগ্রাই ও রিই আকজা বা পানি উৎসবের উদ্বোধন করেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভারত প্রত্যাগত শরনার্থী ও উদ্বাস্তুু পুনর্বাসন বিষয়ক টাস্কফোর্স(প্রতিমন্ত্রী সমমর্যাদা সম্পন্ন) চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি। তার সাথে সাথে উৎসবের রং ছড়িয়ে পড়ে চারি দিকে। পরে শহরে বের হয় বণিল শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক ঘুরে মনোজ্ঞ ডিসপ্লে ও ঐতিহ্যবাহী রিইলং পোয়ে বা জলকেলি বা জলোৎসবে মেতে উঠেন মারমা স¤প্রদায়ের তরুন-তরুনীরা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ডিজিএফআইয়ের ডেট কমান্ডার কর্ণেল ইশতিয়াক আহমেদ,খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মংসুইপ্রæু চৌধুরী, খাগড়াছড়ি সদর দপ্তর খাগড়াছড়ি সদর জোন কমান্ডার লে.কর্ণেল সাইফুল ইসলাম সুমন, খাগড়াছড়ি রিজিয়নের স্টাফ অফিসার মেজর জাহিদ হাসান, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ বশিরুল হক ভ‚ইয়া,পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল আজিজসহ উচ্চ পদস্থ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা,জনপ্রতিনিধি ও সুশিল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
মারমা স¤প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী রিইলং পোয়ে বা জলকেলি বা জলোৎসবে তরুন-তরুনীরা একে অপরের দিকে পানি নিক্ষেপ করে উল্লাস প্রকাশ করে। মারমা জনগোষ্ঠীর বিশ্বাস এই পানি উৎসবের মধ্য দিয়ে অতীতের সকল দু:খ-গøানি ও পাপ ধুয়ে-মুছে যাবে। সে সাথে তরুন-তরুনীরা একে অপরকে পানি ছিটিয়ে বেছে নেবে তাদের জীবন সঙ্গীকে। সাংগ্রাই উৎসব উপভোগ করতে খাগড়াছড়ি এসেছেন অনেক পর্যটকও।
এছাড়াও উৎসব উপলক্ষে নানা খেলা-ধুলা,পিঠা উৎসব,মারমাদের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য ও ওপেন কনসার্টের আয়োজন করা হয়।
বুধবার(১৩ই এপ্রিল) চাকমা স¤প্রদায় পালন করছে মূল বিজু। ফলে চাকমা স¤প্রদায়ের প্রতিটি ঘুরে ঘরে চলছে সাধ্যমত অতিথি আপ্যায়ন। বৃহস্পতিবার চাকমা স¤প্রদায় পালন করবে পহেলা বৈশাখ বা গজ্জাপয্যা। একই সাথে বুধবার ত্রিপুরা স¤প্রদায়ের হারিবৈসু, বিযুমা, বিচিকাতাল।ফুল বিজু, মূলবিজু ও বিচিকাতাল নামে নিজস্ব বৈশিষ্টতায় এ উৎসবে আনন্দের আমেজ ছড়ায়। ত্রিপুরা ভাষায় এ উৎসবকে বৈসু, মারমা স¤প্রদায় সাংগ্রাই আর চাকমা ভাষায় বিজু বলা হয়। ১লা বৈশাখ বাংলা নববর্ষকে বরন করতে জেলা প্রশাসনে উদ্যোগে হবে বর্ষবরণের র্যালী। ত্রিপুরা, মারমা ও চাকমা এই তিন স¤প্রদায়ের উৎসবের নাম একত্র করে বৈসাবি শব্দটির উৎপত্তি।
বৈসাবি এক সময় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জন্য হলেও এখন শান্তি-সম্প্রীতি সার্বজমিন ও জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে। এই উৎসবের মধ্য পাহাড়ের সা¤প্রদায়িক-স¤প্রীতি আরো সুদৃঢ় হোক এ প্রত্যাশা জনপ্রতিনিধিসহ সকল সচেতন মহলের।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন