রংপুরে গণসমাবেশ সফল করতে
গুদাম ঘরে রাতযাপন বিএনপি নেতাকর্মীদের
রংপুরে বিএনপির শনিবারের গণসমাবেশ ঘিরে দুদিন আগে থেকেই জেলা শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিতে শুরু করেছেন দলটির নেতাকর্মী ও সমর্থকেরা। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে সমাবেশে যোগ দিতে যেন অসুবিধা না হয়, সেজন্যই তারা আগেভাগে আসতে শুরু করেছেন। স্থানীয় বিএনপির একাধিক নেতাকর্মীরা সঙ্গে কথা বলে এমনটিই জানা গেছে।
বিএনপির রংপুর বিভাগীয় গণসমাবেশের আগে শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) ভোর ছয়টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রংপুরে পরিবহন ধর্মঘট ডেকেছে জেলা মোটর মালিক সমিতি। এর পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) রাত থেকে রংপুরে আসতে শুরু করেছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার দিনগত রাত দুইটার দিকে ঠাকুরগাঁও থেকে অন্তত আট হাজার নেতাকর্মী এসেছেন শহরে। নগরীর উত্তম বানিয়াপাড়া এলাকায় অবস্থান নিয়ে একাধিক গুদামঘরে রাতযাপন করেছেন তারা। এছাড়াও প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা কর্মী-সমর্থকেরা নগরীর বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছেন।
সরেজমিনে শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) সকাল আটটার দিকে উত্তম বানিয়াপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, গুদাম ঘরের ভেতর গাদাগাদি করে ঘুমিয়ে আছেন নেতাকর্মীরা। সেখানে খোলা মাঠে চুলা জ্বালিয়ে রান্না হচ্ছে সবজি-খিচুড়ি।
ঠাকুরগাঁও থেকে আসা নেতাকর্মীরা জানান, বাস বন্ধের ঘোষণা হবে, এটা আগেই জানতেন তারা। তাই জেলার নেতারা দুদিন আগেই যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। সবাই বিছানার চাদর, কম্বলসহ থাকার জন্য প্রয়োজনীয় কাপড় নিয়ে এসেছেন।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল হামিদ বলেন, রাতে প্রায় আট হাজার নেতাকর্মী নিয়ে আমরা ঠাকুরগাঁও থেকে এসেছি। আরও পাঁচ-সাত হাজার লোক শুক্রবার দুপুরের মধ্যে চলে আসবে। আমরা এসেছি বাস, ট্রাক, পিকআপ, মোটরাইকেলে। রাত ১২টার দিকে ঠাকুরগাঁও থেকে রওনা দিয়ে রাত আড়াইটা-তিনটার দিকে রংপুরে পৌঁছেছি। পথে বাধা পেলেও আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মী তা অতিক্রম করে এসেছেন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, চারটি বড় বড় গুদামে নেতাকর্মীদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঘরের মেঝেতে কেউ চাদর বিছিয়ে শুয়ে আছেন, কেউ নিয়ে এসেছেন কম্বল। গুদামের ভেতর পাটের বস্তা বিছিয়ে শত শত নেতাকর্মীকে শুয়ে থাকতে দেখা যায়। তাদের ঘুম জড়ানো চোখে-মুখে দেখা গেছে রংপুরে পৌঁছাতে পারার স্বস্তির আভা। কেউ কেউ গাছের নিচেও বস্তা বিছিয়ে শুয়ে আছেন।
সেখানকার একটি খোলা জায়গায় সাতটি চুলায় রান্না হচ্ছে সবজি আর খিচুড়ি। রাতে ঠাকুরগাঁও থেকে রংপুরে আসার পথে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ভীতি ও আতঙ্ক থাকলেও শেষ পর্যন্ত আসতে পারায় তাদের সে শঙ্কা আপাতত কেটেছে বলে জানিয়েছেন অনেকে।
ঠাকুরগাঁওয় সদর এলাকার বিএনপির সদস্য আবু সাঈদ বলেন, ঠাকুরগাঁও থেকে রংপুরে আসতে বিভিন্ন জায়গায় বাধা পেয়েছি। তারপরও আমরা সব বাধা উপেক্ষা করে মহাসমাবেশে যোগ দিতে এসেছি।
এদিকে মহাসড়কে নছিমন করিমনসহ অবৈধ যান চলাচল বন্ধ ও রংপুর-কুড়িগ্রাম সড়কে প্রসাসনিক হয়রানির প্রতিবাদে রংপুরে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে মোটর মালিক সমিতি।
শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) ভোর ছয়টা থেকে শনিবার (২৯ অক্টোবর) সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত রংপুর জেলার সব রুটে বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস ও ট্রাক চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন