চলনবিলে নৌকা ভ্রমণের আড়ালে অশ্লীল নৃত্য, জুয়া-মাদকের আসর জমজমাট
দেশের বৃহত্তম বিল চলনবিল। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমের মতো এবারও চলনবিলে নৌকা ভ্রমণ ও পিকনিকের নামে প্রকাশ্যে চলছে উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে অশ্লীল নৃত্য, দেহব্যবসা, মাদক ও জুয়ার জমজমাট আসর। এতে চরমভাবে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে চলনবিল অধ্যুষিত এলাকাগুলোর জনসাধারণ এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঘুরতে আসা ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকরা।
জানা যায়, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমেই ঐতিহ্যবাহী চলনবিলের সৌন্দর্য্য দেখতে ঢল নামে শত শত ভ্রমণ পিপাসু মানুষের। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি নৌকাভ্রমণ এবং পিকনিকের নামে যাত্রা, ক্লাব থেকে নর্তকীদের ভাড়া করে এনে অশ্লীল কার্যকলাপে মত্ত হয়ে ওঠেন। নৌকার মধ্যেই বসান দেহ ব্যবসা, মাদক ও জুয়ার আসর।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে গত বছর অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে জেল জরিমানা করা হলেও থামেনি অসামাজিক কর্মকান্ড। এ বছরও চলছে বেপরোয়াভাবে এসব কার্যক্রম।
সরেজমিনে গিয়ে ঘুরে দেখা যায়, চলনবিল অধ্যুষিত পাবনার চাটমোহর, সুজানগর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর, নাটোরের গুরুদাসপুর ও সিংড়া, সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া ও তাড়াশ থানা এলাকা থেকে প্রতিদিনই নৌকাভ্রমণ এবং পিকনিকের শত শত ছোট-বড় অসংখ্য ভ্রমণ নৌকা চলাচল করে। কিছু অসাধু ব্যক্তি নৌকা ভ্রমণের নামে উচ্চ শব্দে গান-বাজনা বাজিয়ে হিন্দি ও ডিজে গানের তালে তালে চলে মাদক সেবন, চলে স্বল্প পোষাকে অশ্লীল নৃত্য । প্রকাশ্যে চলছে দেহ ব্যবসা, মাদক ও জুয়ার আসর।
শনিবার (১৬ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চলনবিলে চলাচলকারী বেশ কয়েকটি নৌকায় নেশাজাতীয় দ্রব্য গ্রহণ করে নর্তকী এবং হিজরাদের সাথে উদ্দাম নাচছেন কিশোর-যুবকরা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসব নর্তকী ও হিজড়াদের বিভিন্ন এলাকা থেকে টাকা দিয়ে ভাড়া করে অবৈধ কর্মকান্ড চালায় ভ্রমণে আসা যুবকরা। নর্তকী ও হিজড়া থাকা নৌকাগুলোর বেশিরভাগ অংশই ছাউনি দেওয়া। দিনে অলোতে নাচের মাধ্যমে আনন্দ দিলেও রাতে ঘটছে অসামাজিক কার্যকলাপ। অনেক নৌকায় প্রকাশ্যে চলছে মাদক ও জুয়ার আসর।
চলনবিলে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইজন শিক্ষার্থী বলেন, গত শুক্রবার দুপুরে চলনবিল দেখতে এসেছিলাম বাড়ি থেকে পরিবারের লোকজন নিয়ে। বেশিরভাগ নৌকায় যেভাবে অশ্লীলতা ও নগ্ন নৃত্য চলছিল। এতে আমাদের বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়েছে।
সিংড়া মডেল প্রেসক্লাবের সভাপতি রাজু আহমেদ বলেন, চলনবিলে নৌকা ভ্রমণের নামে অশ্লীলতায় ডুবছে যুব সমাজ। ফলে অভিভাবকরা উঠতি বয়সের সন্তানদের ভবিষ্যত ও নৈতিক অবক্ষয় নিয়ে চরম উদ্বিগ্ন।
সিংড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূর-এ-আলম সিদ্দিকী জানান, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণাত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এমএম সামিরুল ইসলাম বলেন, চলনবিলে অভিযান চালিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন