জানুয়ারিতে রাজপথ ‘দখলে’ রাখবে আ.লীগ
জানুয়ারি মাসজুড়ে রাজপথ দখলে রাখতে দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছে আওয়ামী লীগ। বিএনপি-জামায়াত জোট যেন রাজপথের দখল নিতে না পারে, তার পাশাপাশি সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরার নির্দেশ দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল।
চিঠি অনুয়ায়ী দশম সংসদ নির্বাচনের চার বছর পূর্তির দিন ৫ জানুয়ারি থেকে নেতা-কর্মীরা রাজপথে থাকবেন।
বর্তমান সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বছর ২০১৮। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম অধিবেশন বরে ২৯ জানুয়ারি। সংবিধান অনুযায়ী এর আগের ৯০ দিনের যেকোনো দিন ভোট হবে। এই হিসাবে ২০১৮ সালের ২৮ নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হতে হবে।
এই হিসাবে সরকারের মেয়াদ আছে আর এক বছরের মতো। এই সময়ে রাজপথ নিজেদের দখলে রাখতে চায় আওয়ামী লীগ। আর জানুয়ারি থেকেই এই প্রক্রিয়া শুরু করতে চায় দলটি।
গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সই করা চিঠি দলের তৃণমূল পর্যায়ে পাঠানো হচ্ছে।
চিঠিতে সভা-সমাবেশ, সেমিনার, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে পুরো জানুয়ারি মাস মাঠে সক্রিয় থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের তারিখ ১২ জানুয়ারি থেকে দলের সভাপতিমণ্ডলী ও সম্পাদকমণ্ডলীর সমন্বয়ে শীর্ষ পর্যায়ের দল সারাদেশ সফরে নামবে বলেও জেলার নেতাদের জানানো হয়েছে এই চিঠিতে।
আওয়ামী লীগের তিনজন সাংগঠনিক সম্পাদক কেন্দ্র থেকে সারাদেশে চিঠি যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনের ভোটের দিনটিকে ক্ষমতাসীনরা ‘গণতন্ত্র রক্ষা’ দিবস হিসেবে পালন করে। সেদিন সারাদেশে সভা-সমাবেশের নির্দেশ দিয়েছে দলটি।
এ ছাড়া ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস ও সরকারের চার বছর পূতিতে নানা কর্মসূচি পালন করবে ক্ষমতাসীনরা।
চার বছর আগে ৫ জানুয়ারি ভোটের এক সপ্তাহ পর টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। ভোটের দিনটির পাশাপাশি এই দিনটিও গুরুত্বপূর্ণ দলটির কাছে।
আবার মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগে আগে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে গ্রেপ্তারের পর পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তি পেয়ে পরের বছর ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরেছিলেন। এই তারিখটিও আওয়ামী লীগ বরাবর ব্যাপকভাবে পালন করে।
কেন্দ্র থেকে পাঠানো চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নরুউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বাক্ষরিত একটি চিঠি আমাদের হতে এসেছে। সেখানে জানুয়ারি মাসব্যাপী কর্মসূচি পালনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে আমাদের জেলার অন্তর্গত বিভিন্ন থানা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে ৩০টি কর্মসূটি হাতে নিয়েছি।’
চিঠিতে আর কী বলা হয়েছে- জানতে চাইলে এই নেতা বলেন, ‘সরকারের চার বছর উপলক্ষে উন্নয়নের প্রচার, বিএনপি-জামায়াত জোট যাতে কোনো ধরনের নাশকতা সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখার কথা বলা হয়েছে। এসব কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে জনমত তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে চিঠিতে।’
চাঁদপুর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটোয়ারী দুলাল বলেন, ‘৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র রক্ষা দিবস, ১০ জানুয়ারি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস ও ১২ জানুয়ারি সরকারের চার বছর পূর্তি উপলক্ষে আমরা আলোচনা সভা, সমাবেশ, শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। আমরা জেলার ৩০টি স্পটে ৩০ দিনই কর্মসূচি পালন করব।’
সুনামগঞ্জ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এনামুল কবির ইমন বলেন, ‘সরকারের চার বছর পূর্তি, গণতন্ত্র রক্ষা দিবস, বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে কর্মসূচি নিয়ে মাসব্যাপী মাঠে থাকার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র।’ বগুড়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান মজনু বলেন, ‘চিঠি গিয়েছে শুনেছি। আমি ঢাকায়। তাই এখনো চিঠি হাতে পাইনি।’-প্রতিবেদন ঢাকাটাইমসের সৌজন্যে প্রকাশিত
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন