জীবন সংগ্রামে সাফল্য অর্জন সাতক্ষীরার তালার পাঁচ নারী
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার পাঁচ নারী। নানা বাঁধা কাটিয়ে জীবন সংগ্রামে সাফল্য অর্জন করেছেন। তৃণমূল থেকে উঠে আসা এসব নারীদের খুঁজে বের করে জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ শীর্ষক কর্মসূচীর আওতায় পাঁচটি ক্যাটাগরিতে সম্মাননা দিয়েছে তালা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর।
সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কাছে তাদেরকে অনুকরণীয় করে রাখতে এ সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। এ সকল নারীদের প্রত্যেকের জীবনে রয়েছে অসীম আত্মশক্তি ও সংগ্রামের আলাদা আলাদা জীবন কাহিনী।
তাদের সেই সংগ্রামী জীবনের কিছু তথ্য পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-
শিক্ষা ও চাকুরীক্ষেত্রে সফল নারী শামসুন নাহার ::
শিক্ষা ও চাকুরীক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী প্রফেসর শামসুন নাহার। একজন শিশুকন্যা থেকে সফল নারী হয়ে ওঠা শামসুন নাহার তালা সদর ইউনিয়নের জাতপুর গ্রামের মৃত সামছুর রহমান মোড়লের কন্যা। অবিবাহিত এ নারী খুলনা বিএল কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। শুধু তালা উপজেলা নয় তিনি সাতক্ষীরা জেলায় শিক্ষা ও চাকুরীক্ষেত্রে সফল নারী হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন। তৎকালীনর ৫০ ও ৬০ দশকের সময়ে গ্রামীণ অর্থনীতি ছিল ভঙ্গুর, আর্থ-সামাজিক অবস্থা ছিল নাজুক। ২/৪ টি পরিবার ব্যতীত গ্রামের প্রায় সকলের আর্থিক অবস্থা ছিল অত্যন্ত দুর্বল। গ্রামে কোন বিদ্যুৎ ছিল না, যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল অনুন্নত। মানুষের চিন্তা-ভাবনা ছিল অনগ্রসর। প্রচলিত ছিল বাল্য বিবাহ, পর্দা প্রথা ছিল সক্রিয়। নারীদের প্রতি গ্রামীণ সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল রক্ষণশীল। ঐ সময়ে মেয়েদের লেখাপড়ার তেমন পরিবেশ ছিল না। গ্রামের ২/৪ টি পরিবারের মেয়েরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতো। কিন্তু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করার সুযোগ খুবই কম ছিল। নারী-পুরুষের মধ্যে বৈষম্য ছিল প্রকট। মেয়েরা স্বাধীনভাবে চলাফেরা ও মতামত প্রকাশ করতে পারতো না। সামাজিক রীতিনীতি ও অনুশাসন ছিল কঠোর। সমাজে নানা ধরণের অন্ধ বিশ্বাস ও কুসংস্কার বিরাজ করতো। তখন তাদের যৌথ পরিবার ছিল কৃষিভিত্তিক ও বেশ সমৃদ্ধ। দাদা,বাবা,চাচাসহ সকলকে নিয়ে ছিল তাদের পরিবার। বাবার আর্থিক অবস্থা ছিল দুর্বল। ৬ বোন ও ৩ ভাই মিলে মোট ৯ ভাই-বোনের মধ্যে তার অবস্থান ৪র্থ। অল্প বয়সে দেখা তার বড় বোনের প্রতি সংঘটিত অবিচার, গ্রামের অন্যান্য নারী ও মেয়েদের প্রতি সংঘটিত অন্যায্যতা ও বৈষম্য, পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা, বাবার আর্থিক দুর্বলতার কারণে তাদের প্রতি অন্যদের মনোভাব ও আচরণ ইত্যাদি ঘটনা প্রবাহ তাকে প্রচÐভাবে আহত ও সর্বদা তাড়িত করে। যা ঐ সময়ের সকল প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে তাকে লেখাপড়া করার জন্য উদ্বুদ্ধ করে। শুরু হয় নিজের মধ্যে এক ধরনের নীরব লড়াই এবং প্রকাশ্যে লেখাপড়া করার জন্য জেদ। এইভাবে নানা টানাপড়েনের মধ্য দিয়ে তিনি লেখাপড়া শেষ করে ১৯৮১ সালে তালা কলেজে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। সর্বশেষ তিনি খুলনা বিএল কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।
সফল জননী বীণাপানি ঘোষ ::
সফল জননী নারী হিসেবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বীণাপানি ঘোষ। তিনি সরুলিয়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষক মৃত নগেন্দ্র নাথ ঘোষের স্ত্রী। ১৯৩৭ সালের আগস্ট মাসে বাবার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর ঘরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। বিণাপানি ঘোষের বয়স যখন মাত্র তিন বছর দ্বিতীয় সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে তার মা মারা যান। বাবা তখন ১০ গ্রামের মেম্বর ছিলেন। প্রথম পক্ষের ৫ বছর বয়সী বোন ও তাকে নিয়ে বিপাকে পড়েন বাবা। বাধ্য হয়ে তিনি ৩য় বিয়ে করেন। কিন্তু ৩য় মা বাচ্চা প্রসব করতে গিয়ে মারা গেলে আবারো মহাবিপাকে পড়ে তার বাবা। এক পর্যায়ে তিনি ২ মেয়ে লালন পালনের জন্য চতুর্থ বিয়ে করেন। একই গ্রামে দুই বোনকে বিয়ে দেন বাবা। কিন্তু স্বামী বেকার থাকায় সংসারে অভাব লেগেই ছিল। ১ম সন্তান হওয়ার পরে তার স্বামী নগেন্দ্র নাথ ঘোষ সাড়ে ৩৬ টাকা মাসিক বেতনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। তবুও সংসার থেকে অভাব যাচ্ছিল না। এক পর্যায়ে চতুর্থ মায়ের অখুশিতে বাবার দেয়া একটি গাভী পালন করা শুরু করেন বীণাপানি ঘোষ। নিজে যখন সৎ মায়ের সংসারে চতুর্থ শ্রেণির গন্ডি পার হতে পারেননি তখন তাঁর অদম্য ইচ্ছাশক্তি সন্তানদের পড়াশুনার সাহায্য যুগিয়েছে। ভোরে উঠে রান্নাবান্না করে স্বামী ও সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়েছেন। রাতে ঘুম থেকে তুলে বাচ্চাদের খাবার খাইয়েছেন। সন্তানদের পায়ে ময়লা থাকলে রাতে ঘুমের ঘরে ঘরমোছা দিয়ে পা মুছিয়ে দিয়েছেন। পাড়া ও গ্রামের লোক ঘুমিয়ে গিলে তিনি ঘুমিয়েছেন। আবার সবার আগে জেগে উঠে বাচ্চাদের পড়াশুনায় বসাতেন। রান্নার সময় ছোট সন্তানদের পড়াতেন তিনি। স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়েছে রতœগর্ভা মা বীণাপানি ঘোষের। তবে আজ বেঁচে নেই তার সাথে সমানে সংসার সামলানো স্বামী নগেন্দ্র নাথ ঘোষ। বীণাপানি ঘোষের রয়েছে ৫ পুত্র ও ৩ কন্যা সন্তান। তার সন্তানরা সকলেই মেধাবী ও পরিশ্রমী। স্কুলের গÐি পেরিয়ে কলেজ এবং পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ে সাফল্যের সাথে পড়াশুনা করে সন্তানরা উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছেন। বড় সন্তান ড. প্রদীপ কুমার ঘোষ (মৃত), আমেরিকার নিউইয়র্ক বিশ^বিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ছিলেন। মেজ ছেলে সমীর কুমার ঘোষ অস্ট্রেলিয়ার সিডনীতে অষ্ট্রেলিয়াস ফাস্ট ব্যাংকের ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত, সেজ ছেলে তপন কুমার ঘোষ বাংলাদেশের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্তি সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, আরেক ছেলে মোহন কুমার ঘোষ খুলনা জোনে কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের ডিডি এবং ছোট ছেলে কল্যাণ কুমার ঘোষ সাতক্ষীরা ছফুরণনেছা মহিলা কলেজের প্রভাষক হিসেবে কর্মরত আছেন। এছাড়া বড় মেয়ে চন্দনা ঘোষ গৃহিনী, মেঝ মেয়ে কৃষ্ণা ঘোষ স্কুল শিক্ষিকা এবং ছোট মেয়ে শ্যামলী ঘোষ আমেরিকার নিউইয়র্ক কলেজে শিক্ষকতা করেন।
নির্যাতিতা থেকে উদ্যমী, কর্মঠ ও স্বাবলম্বী নারী রেহেনা আক্তার ::
নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নব উদ্যমে জীবন শুরু করা নারী মিসেস রেহেনা আক্তার। তিনি উপজেলার খোর্দ গ্রামের শেখ আব্দুল হান্নানের কন্যা। ২০০৮ সালে স্বামী কর্তৃক তালাকপ্রাপ্ত হয়ে একমাত্র পুত্র সন্তান নিয়ে সামাজিক বিমর্ষতার মধ্যে জীবন থমকে দাড়ায় রেহেনা আক্তারের। নানা প্রতিকূলতার মধ্যে থেকেও তিনি মানসিকভাবে থেমে থাকেননি। নতুন করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে দৃঢ়ভাবে জীবন শুরু করেন। জীবনকে এগিয়ে নেয়ার মানসে মুরগী পালন, হাতের কাজ, দর্জির কাজ করে জীবন প্রবাহিত করতেন। একই সাথে লেখাপড়াও চালিয়ে যেতেন তিনি। পর্যায়ক্রমে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন সফলতার সাথে। এক পর্যায়ে নিজ চেষ্টায় বিভিন্ন এনজিও’তে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। সাথে সাথে নিজের জীবনকে আরও উচ্চ পর্যায়ে নেয়ার মানসে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে ডিগ্রী ভর্তি হন। পড়াশুনা এখনও চলমান রয়েছে রেহেনা আক্তারের। তার একমাত্র পুত্রসন্তান শেখ সোহেল রানাকেও শিক্ষা জীবনে প্রবেশ করান তিনি। সোহেল রানা ৫ম শ্রেীণর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় জিপিএ ৫ এবং জেএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন এ প্লাস প্রাপ্ত হয়। বর্তমানে সে নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত আছে। এত কিছুর পাশাপাশি সমাজের উন্নয়নে যেমন- বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ,স্বাস্থ্য সচেতনতা সৃষ্টি, স্যানিটেশন, শিক্ষার প্রসার, মা ও শিশু স্বাস্থ্য, পুষ্টি ইত্যাদি বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে সমান তালে অবদান রেখে চলেছেন অদম্য রেহেনা আক্তার। তার উৎসাহ ও অনুপ্রেরণায় সমাজের অনেকেই তাদের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটিয়েছেন।
অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী আসমা বেগম ::
জীবন সংগ্রামে দারিদ্রতাকে পিছনে ফেলে সাফল্য অর্জন করেছেন আসমা বেগম। তিনি তালার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের নওয়াপাড়া গ্রামের নজরুল ইসলাম মোড়লের স্ত্রী। বিয়ের পর অনেক স্বপ্ন নিয়ে শ^শুর বাড়িতে আসলেও অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতা ও অভাবের কারণে সংসারে দেখা দেয় অশান্তি। স্বামীর কৃষি কাজের সীমিত আয়ে সংসার চলছিল না। তার উপর ৩ মেয়ের স্কুলের খরচ ও ভরণপোষণ দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম পোহাচ্ছিলেন তিনি। এক পর্যায়ে তিনি দর্জির কাজ শুরু করেন। সেই থেকে তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। দর্জির কাজ করে সংসার চালানোর পর বাড়তি টাকা দিয়ে হাঁস-মুরগি ও কয়েকটি গরু-ছাগল ক্রয় করে তা পালন শুরু করেন এবং সেখান থেকে যে অর্থ উপার্জন হয় তা দিয়ে তার সংসারের যাবতীয় খরচ মেটান। বর্তমানে তিনটি মেয়েই লেখাপড়া করছে। বড় মেয়ে কলেজে, মেজ মেয়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এবং ছোট মেয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছে। আসমা বেগমের বর্তমানে বাৎসরিক আয় লাখ টাকা। ঘরে রয়েছে রঙিন টেলিভিশন। সব মিলিয়ে স্বামী-সন্তান নিয়ে সুখে শান্তিতে জীবন যাপন করছেন অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী আসমা বেগম।
সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছেন জয়ন্তী রানী::
একজন নারী হয়েও জীবন সংগ্রামের মাঝে সমাজের উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখে চলেছেন জয়ন্তী রানী মÐল (দাস)। তিনি উপজেলার ইসলামকাটী ইউনিয়নের সুজনশাহা গ্রামের দিলীপ কুমার দাসের স্ত্রী এবং যশোরের অভয়নগর উপজেলার মশিয়াটি গ্রামের কালিদাস মÐলের মেয়ে। ইচ্ছা ছিল লেখাপড়া শিখে মানুষের মতো মানুষ হয়ে সমাজ ও দেশের কল্যাণে সমাজ সেবামূলক কাজ করার। কিন্তু বাবার অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ থাকায় বিএ পাস করার পর পড়াশুনার সমাপ্তি ঘটে। চাষবাস করার সামান্য জমি থাকলেও তা ছিল স্থায়ীভাবে পানিবন্দী। সংসারের কষ্ট দুর করতে একটি বে-সরকারি সংস্থায় চাকুরীতে যোগ দেন তিনি। চাকুরীতে থাকা অবস্থায় একটি দলিত পরিবারের সন্তানের সাথে তার বিয়ে হয়। কিন্তু জাতি ও বর্ণ প্রথার কারণে জয়ন্তী রানীর পরিবার থেকে এ বিয়ে মেনে নিতে পারেনি। শ্বশুর-শ্বাশুড়ীসহ ৭ জনের সংসার চলতো কৃষি কাজের উপর। দিনআনা দিনখাওয়া অবস্থায় অতি কষ্টে তাদের সংসার চলতো।
এ সময় স্বামী বেকার থাকায় তিনি আবারও একটি এনজিওতে চাকুরী শুরু করলেন। কাজ করতে করতে অভিজ্ঞতা হতে থাকে সমাজে নারীরা বিশেষ করে দলিত জনগোষ্ঠী মানুষ কতটা বঞ্চিত-লাঞ্চিত-নির্যাতিত-নিষ্পেষিত-নিপীড়িত। এসব ভেবে দলিত জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়নের জন্য তিনি একটি সংগঠন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। স্বামীর সহযোগিতায় ২০০৩ সাল থেকে গ্রামের নারীদের নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে ক্ষুদ্র্র ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে থাকেন তিনি। ২০১২ সালে রেজিস্ট্রেশন নিয়ে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও মানবিক উন্নয়নের সঠিক পথের সন্ধান দিয়ে নারী ও দলিত জনগোষ্ঠীকে সমাজে প্রতিষ্ঠা করার জন্য প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয় ‘উদীপ্ত মহিলা উন্নয়ন সংস্থা’। সেই থেকে প্রতিষ্ঠানটি স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, সৃজনশীলতা, সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন