টেকসই উন্নয়ন চলমান রাখতে সার্কুলার ইকোনমি মডেল অনুসরণ : শিল্পমন্ত্রী
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন এমপি বলেছেন, এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পর দেশের টেকসই উন্নয়ন এর ধারা চলমান রাখতে বাংলাদেশকে সার্কুলার ইকোনমি মডেল অনুসরণ করে কাজ করতে হবে। এর জন্য যথাযথ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ণ করা জরুরী।
ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস্ অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) আয়োজিত “বাংলাদেশে সার্কুলার ইকোনমির বর্তমান অবস্থা: সমস্যা ও সামাধান” শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
রবিবার মতিঝিলে এফবিসিসিআই ভবন অডিটোরিয়ামে এ সেমিনার আয়োজন করা হয়।
এফবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট মোঃ জসিম উদ্দিন এর সভাপতিত্বে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো: শাহাব উদ্দিন এমপি বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিবেশ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সুজাউদ্দিন।
অন্যদের মধ্যে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এনামুল হক, আইসিসিসিএডি এর উপপরিচালক অধ্যাপক ড. মিজান আর খান, ন্যাচারাল রিসোর্স এন্ড ব্লু ইকোনমি গ্লোবাল প্রাকটিস এর সিনিয়র পরিবেশ বিশেষজ্ঞ মিসেস ইয়ান জু আলিসন ই এবং আইএফইএস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন পিএইচডি এবং এফবিসিসিআই এর প্যানেল উপদেষ্টাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, পৃথীবীর অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ দেশ হিসেবে আমাদের সার্কুলার ইকোনমির গুরুত্ব অনেক। বর্ধিত নগরায়নের সাথে সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে পড়েছে। শিল্প বর্জ্য, মেডিকেল বর্জ্য, প্রাণীজ বর্জ্যসহ বিভিন্ন রাসায়নিক বর্জ্যে দুষিত হচ্ছে বায়ু, পানি, মাটি ইত্যাদি। এর প্রভাব পড়ছে জীববৈচিত্র্যের ওপর। পড়ছে জলবায়ুর ওপর প্রতিকূল প্রভাব। জলবায়ু পরিবর্তনে বিভিন্ন প্রাণীর জটিল ও কঠিন রোগ দেখা দিচ্ছে। পরিবেশের ওপর জলবায়ুর প্রভাবের জন্য ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত, খাদ্যাভাবজনিত রোগসহ নানা জটিল ও অপরিচিত রোগ দেখা দিচ্ছে।
শিল্পমন্ত্রী আরও বলেন, সম্প্রতি ফেলে দেওয়া ব্যাটারী, মুঠোফোন, কম্পিউটার, টেলিভিশনসহ ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম (ই-বর্জ্য) থেকে পরিবেশদূষণের ঝুঁকি মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তর-এর ২০১৮ সালে একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশে বছরে ৪ লাখ টন ইলেকট্রনিকস বর্জ্য জমা হয়। এর মধ্যে কেবল ৩% রিসাইক্লিংশিল্পে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু সম্প্রতি আমরা দেখতে পেয়েছি ২০২০ সালের জাপান অলিম্পিকে ই-বর্জ্য ব্যবহার করে তৈরী করে অলিম্পিকের পদক। আমাদেরকেও ইলেক্ট্রনিক বর্জ্যের মধ্যে মূল্যবান ধাতু পুনরায় কাজে লাগানোয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন বলেন, দেশে “সার্কুলার ইকোনমি বা বৃত্তাকার অর্থনীতি”বাস্তবায়ন হলে ভূগর্ভস্থ ও ভূ-উপরিস্থ সম্পদ আহরণের পরিমাণ হ্রাস পাবে, কাঁচামালের টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত হবে, সম্পদের অপচয় কমবে, প্রক্রিয়া চলাকালীন উৎপন্ন বর্জ্যের পরিমাণ হ্রাস পাবে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জলবায়ু পরিবর্তনে দায়ী গ্রীন হাউজ গ্যাস নির্গমনের পরিমাণ হ্রাস করা সম্ভব হবে।
সভাপতির বক্তব্যে এফবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, বর্তমানে অর্থনীতিতে এ সময়ের এক বহুল আলোচিত বিষয় হচ্ছে ‘সার্কুলার ইকোনমি’। অনেক সরকার, প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি ও পরিবেশ সংগঠনের পরিকল্পনার একটি মুখ্য উপাদান হয়ে উঠেছে এই ‘সার্কুলার ইকোনমি’। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে কার্বনের উদগীরণ কমিয়ে আনা। অন্যান্য টেকসই উন্নয়ন মডেলের মতো, সার্কুলার ইকোনমি এর মাধ্যমে সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার, উৎপাদন বৃদ্ধি করে তুলনামূলক কম প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহার নিশ্চিত করে অপচয় কমিয়ে আনা এবং বর্জ্য উৎপাদন হ্রাস করা সম্ভব হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন