ঠাকুরগাঁওয়ের বুড়ি বাঁধে মাছ ধরা উৎসব শুরু
হাতে জাল, সারি বদ্ধ হয়ে পানিতে ফেলছেন কয়েক হাজার মানুষ৷ কেউ ভেলায়, কেউ ছোট নৌকায় করে চলছে মাছ ধরার এক প্রতিযোগিতা। প্রতি বছরের ন্যায় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার শুক নদীর বুড়ি বাঁধে মাছ ধরা উৎসব শুরু হয়েছে।
সদর উপজেলার চিলারং ও আকচা ইউনিয়নের মাঝামাঝি জায়গায় অবস্থিত এ বাঁধটি৷ মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) বিকালে বাঁধের গেট ছাড়ার পর সন্ধ্যা সাতটা থেকে এ মাছ ধরা উৎসব শুরু হয়েছে।
জানা যায়, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ১৯৫১-৫২ সালের দিকে শুষ্ক মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষি জমির সেচ সুবিধার জন্য এলাকায় একটি জলকপাট নির্মাণ করা হয়। জলকপাটে আটকে থাকা সেই পানিতে প্রতিবছর মৎস্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে বিভিন্ন জাতের মাছের পোনা ছাড়া হয়। আর এ পোনাগুলোর দেখভাল করে আকচা ও চিলারং ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি)।
এ উৎসবকে ঘিরে বাঁধে মাছ ধরতে ছুটে আসেন দূর-দূরান্ত থেকে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ৷ অধিক মাছের আশায় নয় বরং সকলে মিলে একসাথে মাছ ধরার আনন্দ-উল্লাসকে ভাগাভাগি করে নিতেই আসেন বলে জানিয়েছেন তারা৷
সদর উপজেলার নারগুন থেকে আসা হুমায়ুন কবির বলেন, প্রতিবারে আমি এখানে মাছ ধরতে আসি৷ বিভিন্ন জায়গা থেকে এখানে অনেক মানুষ আসেন মাছ ধরতে । সবাই মিলে একসাথে মাছ ধরতে খুব ভালো লাগে। এটা আজকের দিনে একটা মেলায় পরিণত হয়েছে।
বালীয়াডাঙ্গী উপজেলার ধনতলা গ্রাম থেকে আসা অমলেশ বলেন, গতকাল সন্ধ্যা থেকে জাল দিয়ে মাছ মারছি৷ খুব বেশী মাছ ধরতে পারেনি৷ গতবারে অনেক মাছ পেয়েছিলাম। এবারে তেমন মাছ পাওয়া যাচ্ছেনা। রিং জাল ব্যবহারের কারণে এবারে মাছ অনেক কম।
মাছ ধরতে আসা স্থানীয় স্কুল শিক্ষক আসাদুজ্জামান বলেন, আমি ভোর সকালে মাছ ধরতে এসেছি। মূলত আনন্দ-উল্লাসের জন্য প্রতিবারে আমি আসি। ভোর সকাল থেকে নয়টা পর্যন্ত মাছ ধরেছি। পুটি, ষোল, শিংসহ প্রায় তিনকেজি দেশী মাছ ধরেছি।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ঠাকুরগাঁওয়ের উপ-সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ রাফিউল বারী বলেন, ১৯৫১-৫২ সালের দিকে বুড়ি বাধ সেচ প্রকল্পটি নির্মাণ করা হয়। বাধটির সামনে একটি অভয়াশ্রম আছে। প্রতি বছর বাঁধটি ছেড়ে দেওয়ার পরে এখানে অনেক মানুষের সমাগম ঘটে। যারা এখানে মাছ ধরতে আসেন৷ আমরা মনে করছি এটার মাধ্যমে আমিষের যে চাহিদা সেটি পূরণ হবে৷
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকতা আয়েশা আক্তার বলেন, প্রতিবছরের ন্যায় এবারো মাছ ধরা উৎসব শুরু হয়েছে। কেউ যাতে অভয়াশ্রমে মাছ না ধরে সে বিষয়ে আমরা তৎপর রয়েছি৷ বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা মানুষেরা স্বতস্ফূর্তভাবে মাছ ধরছেন৷
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন