দিনাজপুরে চড়ুই পাখিদের অভয়ারণ্য তাজমহল মোড়
ঝাঁকে ঝাঁকে চড়ুই পাখিদের কলতানে মুখরিত দিনাজপুর বীরগঞ্জের তাজমহল মোড়। সূর্য অস্ত যাওয়ার আগে চড়ুইপাখিদের কিচিরমিচির শব্দে আগমন বার্তা ছড়িয়ে দেয় চারপাশ। প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যা লগ্নে পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে থমকে দাঁড়ায় পথিক, পাখি প্রেমিদের হৃদয় ছুয়ে যাওয়ার এক বিরল দৃশ্য। ভোর হতেই আহারের সন্ধানে বেড়িয়ে যায় আর গোধূলি লগ্নে বিকেল হলেই পাখিরা ফিরে আসে তাদের গন্তব্য অভয়ারণ্যের নীড়ে।
পাখি প্রেমিক তাজমহল মার্কেটের স্বত্বাধিকার ওয়াহেদ মিয়া জানান, মোট চারটি গাছে পেয়ারা,বড়ই, বুকলফুল,আর কাঁঠাল তাদের আবাস। তিনি এক বছর ধরে নিজেই দেখভাল করছেন কেউ যেন ঢিল না ছুড়ে বা কোন রকম হ্মতি সাধন করতে না পারে কেউ বিরক্ত না করায় দিন দিন বৃদ্ধি পাাচ্ছে চড়ুই পাখিদের সংখ্যা। তার এই মানবিকতা সত্যিই প্রশংসনীয়। গাছের পাতার সাথে ফুলের মতো ফুটে থাকে অজস্র চড়ুইপাখীর ঝাক।
চড়ুই পরিবেশবান্ধব ও কৃষকবান্ধব পাখি। এরা ফসলের ক্ষতিকারক পোকামাকড় খেয়ে নেয় এরা মূলত বিভিন্ন পোকার শুককীট, ল্যাদাপোকা-সহ আরও কিছু ক্ষতিকারক পোকামাকড় খেয়ে ফসলের উপকার করে। এরা খেতের নানা রকম অপকারী আগাছার দানা খেয়ে ও কৃষকের উপকার করে। এরা শস্য দানা খায় ঠিকই, কিন্তু তার পরিমাণ খুবই যতসামান্য। পোকামাকড়, দানা শস্য সব মিলিয়ে এক একটা চড়ুই পঁচিশ গ্রামের বেশি খাদ্য গ্রহণ করতে পারে না।
চড়ুই পাখি মোটামুটি ১৬ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ২৫ থেকে ৪০ গ্রাম ওজনের হয়ে থাকে, স্ত্রী চডুই ধূসর বাদামি ও পুরুষ চডুই ধূসর বাদামি রঙের সঙ্গে কিছুটা কালো রঙের হয়। দেহের রঙের সঙ্গে পাকা ফসলের রঙের সাথে মিশে থাকায় এরা শিকারি পাখিদের থেকে আত্মরক্ষা করতে পারে। মানুষের কাছাকাছি থাকা এই পাখিটি প্রতিকূল পরিবেশে খুব দ্রুত খাপ খাইয়ে নিতে পারে।
চড়ুই বছরের একাধিকবার প্রজনন করে। এক এক বারে এরা চার থেকে ছ’টি ডিম পাড়ে। পুরুষ ও স্ত্রী চড়ুই দু’জনে মিলেই ছানা লালন-পালন করে। তিন সপ্তাহের মধ্যেই ডিম ফুটে বাচ্চা হয়। সাধারনত ৭০ শতাংশ ছানাই বেঁচে থাকে। চডুই সাধারণত চার থেকে পাঁচ বছর বাঁচে।
চডুই একাধারে পরিবেশবান্ধব অন্যদিকে কৃষকবান্ধব পাখি। এরা খেতের পোকামাকড় এবং আগাছার দানা খেয়ে ফসলের উপকার করে। এহেন উপকারী পাখিটিকে আমরা নানা ভাবে বিলুপ্ত করে ফেলছি। চডুইয়ের সংরক্ষণের জন্য ২০১০ সাল থেকে প্রতি বছর ২০শে মার্চ বিশ্ব চডুই দিবস হিসেবে পালিত হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন