দিনাজপুরে জ্বীনের বেগমসহ প্রতারক চক্রের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার
নিজেকে জ্বীনের বেগম পরিচয় দিয়ে আমেরিকা প্রবাসি দিনাজপুরের একটি পরিবারের কাছে প্রতারনা করে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় ব্যাংক কর্মকর্তা নারীসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে কোতয়ালী থানা পুলিশ। রিমান্ডের আবেদনসহ তাদেরকে আদালতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
প্রতারনার বিষয়ে রবিবার ( ৫ মার্চ) দুপুরে গণমাধ্যমের কাছে বিস্তারিত তুলে ধরেন পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ। তিনি জানান, ঢাকার নিউ মার্কেটের একটি মসজিদে নামাজ আদায়ের সময় আমেরিকা প্রবাসি রোকেয়া রহমানের সাথে পরিচয়ের সূত্রপাট ঘটে কথিত জ্বীনের বেগম মিসেস লাইজুর সাথে। নিজেকে জ্বীনের বেগম পরিচয় দিয়ে সহজ সরল রোকেয়া রহমানকে টার্গেট করে প্রতারনার ফাঁদ পাতেন সিসেস লাইজু । জ্বীনদের জন্য মসজিদ নির্মান করে দেওয়া এবং ভেহেস্ত যাবার কথা বলে ভয়ভীতির ফাঁদে ফেলে প্রথমে বিকাশ এবং পরবর্তীতে ব্যাংকিং চ্যানেল ২০১২ সাল থেকে গেল ১১ বছরে ৩ কোটির অধিক টাকা হাতিয়ে নেন তিনি।
এব্যাপারে প্রতারিত রোকেয়া রহমানের আমেরিকা প্রবাসি ছেলে সারোয়ার রহমান গতকাল শনিবার ( ৪ মার্চ) কোতয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন মামলা নং-১৩/১৮২, ধারা-৪১৯, ৪২০,৪০৩,৪০৬,৫০৬(২),৩৪পেনাল কোড ১৮৬০। পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ জানান, আগে জ্বীনের বাদশা পরিচয়ে প্রতারনার ঘটনা ঘটতো তবে এবারের রাতভর ঝটিকা অভিযানে বাদশার পরিবর্তে কথিত জ্বীনের বেগম পরিচয় দেওয়া জনৈক বাবুর স্ত্রী লাইজু বেগম (৪০) কে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছেস তারা। তাকে ছাড়াও সহযোগি চক্রের সদস্য তার ভগ্নিপতি আলতাফ হোসেন (৪০), আলতাফ হোসেনের মেয়ে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের দিনাজপুর ব্যাঞ্চের কর্মকর্তা ( ভাগ্নি) আখি সুবর্না (৩০) এবং ছেলে ( ভাগ্না) অনুরাগ আল ইমরান আনন্দ (২৭) কে গ্রেপ্তার করেছে কোতয়ালী থানা পুলিশ।
প্রতারক পরিবারটির বাড়ী গাইবান্ধা জেলায়। বর্তমানে তারা দিনাজপুর শহরের পাটুয়াপাড়া মহল্লায় বসবাস করে আসছেন। অভিযানে ব্যাংকের চেকের পাতা, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ভিসা ডেভিট কার্ড একটি মোটর সাইকেল এবং প্রতারনার কাছে ব্যবহৃত মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন আলামত জব্দ করা হয়েছে। মার্কেন্টাইল ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসির কাছে টাকা হাতিয়েছে চক্রটি এমন তথ্যের সত্যতা পেয়েছেন তারা।
কোতয়ালী থানার ইনচার্জ তানভীরুল ইসলাম জানান, রাতভর ওই অভিযানে নের্তৃত্ব দেন পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( প্রশাসন) মমিনুল করিম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( অপরাধ) মাসুম বিল্লাহ, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিন্নাহ আল মামুন এবং তিনিসহ পুলিশ পরিদর্শক ( তদন্ত) গোলাম মাওলা শাহ।
মামলা তদন্তে ভার দেওয়া হয়েছে উপ পরিদর্শক ইন্দ্র মোহন রায়কে। রিমান্ডের আবেদনসহ আজ তাদেরকে আদালতে উপস্থাপন করেছেন আইও। তবে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত— শুনানী হয়নি।প্রাথমিক তদন্তে চক্রটির সৌদি প্রবাসি এক ব্যক্তির কাছে কয়েকলাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানতে পেরেছেন তারা। এছাড়াও আরো কেউ প্রতারনার শিকার হয়েছে কিনা? তা খতিয়ে দেখছেন তারা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন