দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে হিন্দু জনগণসহ সকলের সহযোগিতা কামনা : প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির প্রাঙ্গণে দুর্গাপূজা উপলক্ষে দেশের হিন্দু সম্প্রদায়েরর সদস্যদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি কর্মসূচিতে যোগ দেন।
মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) শেখ হাসিনা উক্ত অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে বলেন, দেশের কোনো এলাকায় সংঘটিত কোনো ঘটনাকে বড় করে দেখাবেন না, বরং আপনাদের সবার কাছে আমার অনুরোধ ওই ঘটনার বিরুদ্ধে সরকারের শাস্তিমূলক ব্যবস্থার দিকে নজর দিন।
তিনি দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে হিন্দু জনগণসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন, আমি এ ব্যাপারে আপনাদের সহযোগিতা চাইব এবং আশা করি আপনারা সহযোগিতা করবেন।
তিনি আরও বলেন, সরকার সর্বদা দেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনা বা ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রকে সমুন্নত রাখার চেষ্টা করছে এবং তা বজায় রেখে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, কাউকে কারো ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করতে দেওয়া হবে না, ধর্ম হলো একজনের বিশ্বাস। ‘এটি কারো আল্লাহর প্রতি বা সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাস; আমাদের সেই চেতনা নিয়েই চলতে হবে।’
তিনি বলেন, এই দৃষ্টিকোন থেকে ইসলাম একটি অত্যন্ত উদার ও মহৎ ধর্ম এবং ইসলামে অন্য সব ধর্মের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের নির্দেশ রয়েছে।
শেখ হাসিনা সুরা কাফিরুনের উল্লেখ করে বলেন, এতে বলা হয়েছে যে প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ নিজ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করবে এবং সকল ধর্মের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে। ‘এবং আমরা এটি আমাদের হৃদয় থেকে বিশ্বাস করি।
পঞ্চগড়ের করতোয়া নদীতে গত ২৫ সেপ্টেম্বর মহালয়া উপলক্ষে হিন্দু ভক্তদের বধেশ্বর মন্দিরের দিকে যাওয়ার সময় নৌকাডুবিতে মৃত্যুর জন্য সরকার প্রধান গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ সকল ধর্মের প্রতিটি ধর্মীয় উৎসব ঐক্যবদ্ধভাবে উদযাপন করে যা খুবই অনন্য। এটা আমাদের বড় সাফল্য যে আমরা এই চেতনা সমুন্নত রাখছি,’ তিনি বলেন, অন্যদের অবমূল্যায়ন করার সুযোগ নেই।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশের মানুষ নয়, সারা বিশ্বের মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়েছে এবং উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে।
তিনি সকলকে প্রতি ইঞ্চি জমি ব্যবহার করে কিছু না কিছু উৎপাদনের জন্য অনুরোধ করেন। কারণ, অর্থনৈতিক মন্দা তৈরি হয়েছে, আমি জাতিসংঘে গিয়েছিলাম যেখানে আমি অনেক বিশ্ব নেতার সঙ্গে আলোচনা করেছি। জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গেও আলোচনা করেছি। সকলেই খুব উদ্বিগ্ন এবং আশঙ্কা করছেন যে ২০২৩ সালে একটি গুরুতর দুর্ভিক্ষ হতে পারে যখন অর্থনৈতিক মন্দা আরও গভীর হবে,’ তিনি বলেন। এ বিষয়ে এখন থেকেই সবাইকে প্রস্তুতি নিতে অনুরোধ করেন শেখ হাসিনা।
আমাদের জনগণ আছে, আমাদের খুব উর্বর জমি আছে, কোনো জমি অনাবাদি হতে দেবেন না, আপনি যা পারেন তা উৎপাদন করুন এবং বিদ্যুৎ ও পানিসহ সবকিছু ব্যবহারে কঠোরতা বজায় রাখুন। আমাদের ভবিষ্যৎ বিবেচনা করে বুদ্ধিমানের সাথে কাজ করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী সমাজের বিত্তশালীদেরও কল্যাণ ট্রাস্টকে সহায়তা করার আহ্বান জানান।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন