নওগাঁর বদলগাছী অফিস করেন ইচ্ছেমতো কমিউনিটি ক্লিনিকের (সিএইচসিপি) ফেন্সি
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2024/03/download-1.jpeg)
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2025/02/475351977_1256003665483861_2959209934144112011_n.jpg)
নিয়মিত কর্মস্হলে আসতে না পারলেও রাজনৈতিক কর্মসূচি ও ভোটের প্রচারনায় ঠিকই আসেন সঠিক সময়ে। নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার ভাতসাইল কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) মোসা: ফেন্সি।এই বিষয়ে কিছুই জানেনা, বদলগাছী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, এই উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সহযোগিতায় নিয়মিত বেতন তুলছেন ফেন্সি।
স্থানীয়রা বলছেন, ফেন্সিকে মাসে একদিনও ক্লিনিকে দেখা যায় না। মাঝে মাঝে তার মন চাইলে তিনি ক্লিনিকে আসেন। এতে স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত হচ্ছেন এলাকাবাসী। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও দায়িত্বহীনতায় এমনটি হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ বিষয়টি সঠিকভাবে তদারকি করছে না।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, বদলগাছী উপজেলায় ২৬টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু রয়েছে। প্রতিটি ক্লিনিকে একজন সিএইচসিপি, একজন পরিবার পরিকল্পনাকর্মী এবং একজন স্বাস্থ্য সহকারী আছেন। নিয়ম অনুযায়ী সিএইচসিপি কর্মীরা সরকারি বন্ধের দিন ছাড়া বাকি দিনে দায়িত্ব পালন করবেন। পরিবার পরিকল্পনা কর্মী ও স্বাস্থ্য সহকারীদের সপ্তাহে দুই দিন ক্লিনিকে এবং অন্য দিনে মাঠে কাজ করার নির্দেশনা রয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সদর ইউনিয়নের ভাতসাইল এলাকায় কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী। মাঝে মাঝে ভাতসাইল গ্রামের রেহেনা পারভিন নামে এক মহিলা ক্লিনিক খুলে এলাকার অসুস্থ মানুষদের ঔষধ দেয়। এখন তিনিও আসা বন্ধ করেছেন। ওই ক্লিনিকের সিএইচসিপি কর্মস্থল রেখে নওগাঁ জেলা শহরে বসবাস করেন। তবে সেখান থেকেই উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শকের যোগসাজশে প্রতি মাসের বেতন তুলে নিচ্ছেন।
স্থানীয়রা বলছেন, মাসের পর মাস ক্লিনিক বন্ধ থাকে। এখানকার সিএইচসিপি ফেন্সি মাঝে মাঝে আসেন। ক্লিনিক বন্ধের কারনে আমরা চিকিৎসার জন্য ওষুধ পাই না।
সেবা নিতে আসা নাম জানাতে অনিচ্ছুক এক বৃদ্ধ মহিলা বলেন, জাতীয় নির্বাচনের পর একদিন হাতে পোস্টার দিয়ে ফেন্সি বলল আমার জন্য দোওয়া করবেন। আমি উপজেলার চেয়ারম্যান পদে ভোট করবো। নিয়মিত ঔষধ পাবেন। আজকে এসে দেখি বন্ধ। ফেন্সি ছাড়া আর কেউ এখানে চাকরি করে না বিষয়ে জানতে চাইলে ঐ বৃদ্ধ মহিলা বলেন,লতা আর শারমিন নামে আরো দুই জন চাকরি করে। তারাও আসে, আসে না। ঠিক নাই।
কমিউনিটি ক্লিনিকের সামনের বাড়ির এক গৃহবধূ বলেন, ভাই আমার বাড়ির সামনে ক্লিনিক। ফেন্সি আপা হঠাৎ একদিন করে আসে। ঔষধ পত্র কিছুই পাওয়া যায় না। আর কেউ আসে না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের গ্রামের রেহেনা মাঝে মাঝে ক্লিনিক খুলে ঘর পরিষ্কার করে চলে যায়। লতা নামে এক আপা আছে সপ্তাহে দু এক দিন আসে। শারমিন আপা তো গর্ভবতি ছুটি নিয়েছে কি না জানি না।
এ বিষয়ে কথা বলতে সিএইচসিপি মোসা: ফেন্সির সাথে কথা হলে তিনি জানান, মাসের পর মাস ক্লিনিকে আসিনা,এমনটি ঠিক না। আমি ক্লিনিকে আসি হয়তো একটু ১৫-৩০ মিনিট দেরী হয়। তাছাড়া আপনি জানেন আমি জেলা মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় অনেক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা লাগে।
বোঝেনই তো? তবে শত ভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে পারি। আমার ক্লিনিকে সেবা নিতে আসা মানুষরা পর্যাত্ব ঔষধ পায়। আপনি ক্লিনিকে নির্বাচনি প্রচারণা করতে পারেন কি না। এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী আমি। এই জন্য জনগনের কাছে ভোট চাইছি ভাই।
বদলগাছী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. কানিজ ফারহানা বলেন, বিষয়টি আমি জানি না। তবে কি উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে কোন পরিদর্শন করা হয় না।এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পরিদর্শন হয় কিন্তুু ক্লিনিকে আসেন না এর আগে কেউ জানায় নি। আপনি জানালেন, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নওগাঁ জেলা সিভিল সার্জন ডা. মুনির আলী আকন্দ বলেন, ‘চাকরিস্থলে না থেকে বেতন নেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2024/12/469719549_122234398946008134_2936380767280646127_n.jpg)
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন