নড়াইলে হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী খেজুর পাটি
নড়াইলে হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী খেজুর পাটি।
বাংলার গ্রামাঞ্চলে সর্বত্র মানুষের কাছে খেজুর পাটির ব্যবহার ও কদর ছিল অত্যান্ত লক্ষণীয়। সময়ের বিবর্তনে আধুনিকতার ছোঁয়ায় শীতল পাটি, বিভিন্ন ধরণের চট ও কপের্ট এবং পলিথিনের তৈরি নানা রকমের উপকারণসহ আধুনিক সরঞ্জাম ব্যবহারের কারণে জেলা থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী খেজুর পাটি।
শীতের এ সময় এখানও কিছু মানুষ খেজুর পাটি তৈরি ও ব্যবহারকে নিজস্ব সংস্কৃতি হিসেবে ধরে রেখেছে।
জানা যায়, ষড়ঋতু অর্থাৎ ঋতু বৈচিত্রের এক অপরুপ নিদর্শন বাংলাদেশ। এক এক ঋতুতে প্রকৃতি সাজে অপরুপ রুপে এবং মানুষও ব্যস্ত থাকে বিভিন্ন কর্মব্যস্ততায়। পৌষ ও মাঘ এ দু’মাস নিয়ে শীতকাল। এ সময় খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ এবং গাছের পাতা দিয়ে তৈরি খেজুর পাটির প্রচলন সেই সু-প্রাচীসকাল থেকে বাংলার গ্রামাঞ্চলের মানুষের কাছে ব্যবহার লক্ষণীয়। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় শীতল পাটি, চট ও কার্পেট এবং পলিথিনের তৈরি জিনিসের ব্যবহার এতটায় বৃদ্ধি পেয়েছে যে, শুধু নড়াইল সহ পাশ্ববর্তী এলাকায় নয় সমগ্র গ্রাম বাংলার মানুষ দিন দিন এর ব্যবহার এবং কদর ভুলে যেতে বসেছে।
এক সময় সাধারণ মানুষ ঘরে ঘরে নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে খেজুর পাটি ব্যবহার করতো। বিশেষ করে কৃষাণ বধুরা খেজুর পাতা সংগ্রহ করে বিশেষভাবে তৈরি করতো এ পাটি। সেই পাটিতে কৃষকের উৎপাদিত ফসল ধান, সরিষা, গম সহ নানাবিধ ফসল রোদে শুকানোর কাজ ও রাতে ঘুমানোর কাজে ব্যবহারসহ নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হত।
এছাড়াও গ্রামের হত দরিদ্র কিছু গৃহবধুরা খেজুর পাটি তৈরি ও বিক্রয় করে স্বামীর সংসারে বাড়তি আয়ের একটি উৎস সৃষ্টি করতো।
গৃহবধূ দিপালী রায় জানান, ঐতিহ্যবাহী খেজুর পাটি তৈরি ও কদর দিন দিন কমে যাচ্ছে। কারণ আজকাল বাজারে শীতল পাটি, নল পাটি, চট ও কার্পেট, পলিথিনের তৈরিসহ হরেক রকম উপকরণ ব্যবহার এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে, এখন অনেকেই এর নাম ভুলতে বসেছে। তাছাড়া প্রতিবছর এখানে বন্যার কারণে খেজুর গাছ অনেক মরে যায়।
তিনি আরোও জানান, বাড়িতে কাজ করার পাশাপাশি খেজুর পাটি তৈরি ও বিক্রয় করে বাড়তি আয় যা হতো, তা দিয়ে সংসার কোনভাবে চলে যেত। কিন্তু এখন আর পূর্বের মত খেজুর পাটির কদর নেই।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন