পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পরকিয়া সন্দেহে যুবক ও গৃহবধূকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পরকিয়া সন্দেহে ১ যুবক ও গৃহবধূকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। রোববার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে মহিপুর থানার সদর ইউপির নিজামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে যুবক ইব্রাহীম ও তিন সন্তানের জননী গৃহবধূ হাসপাতালের শয্যায় যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছেন।
হাসাপাতালের শয্যায় গৃহবধূ জানান, প্রায় ১০ বছর আগে ওই গ্রামের লেহাজ উদ্দিনের পুত্র জামাল উদ্দিনের সাথে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয় তার। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে সন্দেহ করে অমানুসিক নির্যাতন করতো জামাল। তবুও ধর্মভীরু পরিবারের সন্তান হওয়ায় নির্যাতন সহ্য করে সংসার করছিলেন তিনি। মাত্র ১৬ বছর বয়সে ৪০ বছর বয়সী পুরুষের সাথে বিয়ে হলেও সংসার জীবন মেনে নিয়ে ১ ছেলে ও ২ কন্যা সন্তানের জন্ম দেন এই গৃহবধূ।
গৃহবধূর অভিযোগ, বাবার বাড়ি যাওয়া আসার সুবাদে স্থানীয় মোটরসাইকেল চালক ইব্রাহীমের সাথে পরিচয় হয় তার। ওই চালক ভালো মানুষ হওয়ায় তাকে নিয়েই বাবার বাড়ি যেতেন তিনি। কিন্তু নির্যাতনের রাতে পরিকল্পিত নাটক সাজিয়ে বাবার বাড়ি পাঠানোর কথা বলে ইব্রাহীমকে ডেকে নেয় তার স্বামী। পরে ইব্রাহীম বাড়ির দরজায় পৌঁছালে তাকে আচমকাই নির্যাতন শুরু করেন তার স্বামী এবং স্বামী বাড়ির লোকজন। ইব্রাহীমকে টেনে হিচরে বাড়ির মধ্যে নিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালানো হয়। একই সময় বেশ কয়েকজন পুরুষ নিয়ে গৃহবধূকেও অমানুসিক নির্যাতন চালায় বলে অভিযোগ তার।
ভুক্তভোগী মোটরসাইকেল চালক ইব্রাহীম জানান, আমি কিছু বুঝে উঠতেই পারিনি। ফোন দিয়ে ডেকে নেয়ার পর হঠাৎই আমাকে পেটাতে শুরু করে। ছিনিয়ে নেয়া হয় মানিব্যাগ, মোবাইল, মোটরসাইকেল।
তার অভিযোগ, প্রায় দুইঘন্টাব্যাপী মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে বশার,আফজাল,শহীদুল,শাহীনসহ আরো বেশ কয়েকজন তার কাছ থেকে আদায় করা নেয় স্বীকারোক্তি।
তিনি জানান, তার যৌনাজ্ঞে নির্যাতন করা হলে সজ্ঞাহীন হয়ে পরেন। পরে তাকে এক নারী ইউপি সদস্য উদ্ধার করে রক্তাক্তাবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করেন। এদিকে গৃহবধূর স্বামী জামাল হোসেন জানান, বেশ কিছুদিন যাবৎ ফোনে কথা বলতো তার স্ত্রী। ওইদিন ইব্রাহীমের সাথে বাড়ির উঠানে স্ত্রীকে জড়াজড়ি করতে দেখে রাগ সামলাতে পারনি। দুজনকে আমি সামান্য মারধর করেছি। কিন্তু রাস্তার মানুষ এসে দড়ি দিয়ে বেঁধে মারধর করেছে। আমি মারিনি।
কলাপাড়া হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. রনি জানান, ইব্রাহীমের সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এর মধ্যে মুখমন্ডলে এবং পেটে গুরুতর আঘাতের জখম রয়েছে। এবিষয়ে মহিপুর থানার ওসি খন্দকার আবুল খায়ের বলেন, এঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি। মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়েছে। দ্রুতই তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন