প্রেমের টানে ফিলিপাইনের তরুণী কুড়িগ্রামে
ভালবাসাকে নিজের করে পেতে প্রাসাদ ছাড়ে কুঁড়ে ঘরে উঠার উদাহরণ অনেক আছে। সম্প্রতি তো জাপানের রাজকুমারী তার প্রেমিকের জন্য প্রাসাদ ছেড়ে সাধারণ এক ফ্লাটে উঠেছেন। শুধু প্রেমিকা নয় অনেক প্রেমিকও এমন দৃষ্টান্ত রেখেছেন- তেমিন মালয়েশিয়ার এক রাজকুমারীকে পেতে ডাচ এক সাধারণ ছেলে মুসলিম হয়ে রাজকুমারীকে বিয়ে করেছেন। এতো গেল বিদেশিদের কথা। প্রেমিককে পেতে সাত সমুদ্র তের নদী পড়ি দিয়ে বাংলাদেশে জীর্ন কুঠিরে এসে ঠাঁই নিয়েছেন আনেক ধনীর দুলাল ও দুলহানিরা। ব্রাজিল, আয়ারল্যান্ড, ভিয়েতনাম, রাশিয়া, মালয়েশিয়ার, পোল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্রের পর এবার ফিলিপাইনের তরুণী প্রেমের টানে সুদূর সিঙ্গাপুর থেকে ছুটে এসেছেন কুড়িগ্রামে ফুলবাড়ীতে।
গত এক সপ্তাহ আগে ইয়াসমিন নামের ওই ফিলিপাইনি তরুণী ঢাকায় আসেন। এর পর সোমবার (২৬ মার্চ) ফুলবাড়ী উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা ও ওই তরুণীর প্রেমিক রুবেল আহমেদের বাড়িতে আসেন ইয়াসমিন।
বুধবার (২৮ মার্চ) বিকেলে উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের অনন্তপুর মাঠেরপাড় গ্রামে রুবেল আহমেদের বাড়িতে গিয়ে ওই তরুণীকে দেখা গেছে। ওই বিদেশি তরুণীকে একনজর দেখার জন্য রুবেল আহমেদের বাড়িতে শতশত মানুষ ভিড় করে।
রুবেল আহমেদ জানান, সিঙ্গাপুরে একটি গ্লাস কোম্পানিতে কর্মরত থাকার সময় ফিলিপাইনের ফারান্দ ইসলামের মেয়ে ইয়াসমিনের তার পরিচয় হয়। সেই পরিচয় থেকেই তাদের মধ্যে পরিণয়।
রুবেল ১০ বছর ধরে সিঙ্গাপুরে ছিলেন এবং গত ৫ বছর ধরে তাদের প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। সম্প্রতি রুবেল আহমেদ ছুটিতে বাংলাদেশে আসেন। পাঁচ মাস থেকে তাদের মধ্যে দেখা স্বাক্ষাৎ না থাকায় প্রেমের টানে ইয়াসমিন বাংলাদেশে তার কাছে চলে আসেন।
তিনি বলেন, ইয়াসমিন আমার বাসায় আসার পর পরিবারের লোকজন বিষয়টি শুনে আমাদের সম্পর্ককে স্বীকৃতি দেয় এবং আমরা ২৫ মার্চ ঢাকায় একটি আদালতে এফিডেভিট করার মাধ্যমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি। বর্তমানে আমরা দুইজনেই ইসলাম ধর্মমতে স্বামী-স্ত্রী । আমরা বাকিটা জীবন এক সঙ্গে কাটাতে চাই।
রুবেলের বাবা বেলাল হোসেন জানান, ‘আমি কৃষক মানুষ। ছেলের ভালোই আমার ভালো। তারা যেহেতু একজন আর একজনকে পছন্দ করে সেজন্য তাদের সুখের কথা চিন্তা করে আমরা তাদের সম্পর্ক মেনে নিয়ে কোর্টের মাধ্যমে তাদের বিয়ে দিয়েছি। বাড়িতে অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই এলাকাবাসী ও আত্মীয়-স্বজনদের বৌ ভাত খাওয়ানো হয়েছে। সবাই আমার ছেলে ও ছেলের বউয়ের জন্য দোয়া করবেন যেন ভালো থাকে।’
রুবেলের চাচা সাবেক ইউপি মেম্বার আব্দুল খালেক জানান, মঙ্গলবার (২৭ মার্চ) রুবেল ও ইয়াসমিনের বিয়ে উপলক্ষে বাড়িতে বৌভাতের আয়োজন করা হয়েছে। এক সপ্তাহ পর নতুন এই দম্পতি আবার সিঙ্গাপুরে তাদের কর্মস্থলে ফিরে যাবে।
কাশিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলজার হোসন ও ফুলবাড়ী থানার ওসি খন্দকার ফুয়াত রুহানী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন