বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে কারা ছিল একদিন বের হবে : প্রধানমন্ত্রী
১৫ আগস্টে নির্মম হত্যাকাণ্ডের পেছনের ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ উন্মোচন প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার ষড়যন্ত্রের পেছনে কারা ছিল সেটাও একদিন বের হয়ে আসবে।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শনিবার (১৪ আগস্ট) এক বাণীতে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আমরা জাতির পিতার হত্যার বিচারের রায় কার্যকর করেছি। আশা করি, জাতির পিতার হত্যার ষড়যন্ত্রের পেছনে কারা ছিল সেটাও একদিন বের হয়ে আসবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচারও সম্পন্ন হয়েছে। একাত্তরের মানবতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর করা হচ্ছে।
ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় সবাইকে সবসময় প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এবং উন্নয়ন ও গণতন্ত্র বিরোধী চক্রের যে কোনো অপতৎপরতা-ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে।
জাতির পিতাকে হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান বঙ্গবন্ধুকন্যা। ঘাতকচক্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যা করলেও তার স্বপ্ন ও আদর্শের মৃত্যু ঘটাতে পারেনি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে ঘাতকরা বাঙালির ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও অগ্রযাত্রাকে স্তব্দ করার অপপ্রয়াস চালায়। ঘাতকদের উদ্দেশ্যই ছিল অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামাকে ভেঙে আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে ভূলুণ্ঠিত করা।
তিনি বলেন, এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত স্বাধীনতাবিরোধী চক্র ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর থেকেই হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করে। তারা ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথকে বন্ধ করে দেয়।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে দীর্ঘ ২১ বছর পর সরকার গঠন করে। অতীতের জঞ্জাল সরিয়ে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ এই ৫ বছরে দেশে আর্থসামাজিক উন্নয়নের এক নবদিগন্তের সূচনা হয়। আমরা জাতির পিতার হত্যার বিচার শুরু করি। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে আবার এই হত্যার বিচার কাজ বন্ধ করে দেয়।
জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা উল্লেখ করেন টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে অবৈধ ক্ষমতা দখলের পথ বন্ধ করার উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলের সুযোগ বন্ধ হয়েছে।
টানা তিন মেয়াদে দেশের উন্নতি ও অগ্রগতির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত সাড়ে ১২ বছরে দেশের প্রতিটি সেক্টরে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জন করেছে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ বিশ্বে ‘রোল মডেল’ হয়েছে। আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছি। এই সময়ে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে।
তিনি বলেন, বর্তমান প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের মহামারির মধ্যেও আমরা আমাদের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার লক্ষ্য নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী ১৫ আগস্টের শহীদের কথা স্মরণ করেন এবং তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন