স্বস্তির বৃষ্টিতে সতেজ হয়ে উঠেছে গাইবান্ধার আমনক্ষেত

দেরিতে হলেও ভারী বৃষ্টিতে স্বস্তি নেমেছে গাইবান্ধার কৃষকদের মনে। গত কয়েকদিন ধরে তীব্র তাপদাহে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠলেও তাদের মূল দুশ্চিন্তা ছিলো আমন চাষ নিয়ে। ভরা বর্ষায়ও এবার বৃষ্টি কম হওয়ায় মাঠ ফেটে আমনের চারা শুকিয়ে যাওয়ার শঙ্কা করছিলেন তারা। তবে বৃষ্টি তাদের সেই শঙ্কা দূর করে স্বস্তি এনে দিয়েছে। কয়েকদিনের খরার পর শ্রাবণের শেষে এসে কয়েক দিনের ভারি বর্ষণে সতেজ হয়ে উঠেছে গাইবান্ধার আমনক্ষেতগুলো।

চাষিরা জানান, কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিতে খাল-বিল ভরাট হয়ে গেছে। ফলে এতোদিন ফেলে রাখা জমিগুলোতে আমনের চারা রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন তারা। বৃষ্টির কারণে সেচের খরচ বেঁচে যাবে বলে খুশি চাষিরা।

সদর উপজেলার গোবিন্দপুর এলাকার কৃষক রিয়াজউদ্দিন বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার আষাঢ়ের বৃষ্টি অনেক দেরিতেই হয়েছে। তবুও এই বৃষ্টির জন্য আমাদের সেচ খরচ কম হবে।

ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া এলাকার কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বললে তারা জানান, বৃষ্টি না থাকায় টাকা খরচ করে জমিতে সেচ দিয়ে চারা লাগানো হয়েছিল। কিন্তু এতদিন পানির অভাবে ধানের চারা তেমন একটা বেড়ে ওঠেনি। এখন আল্লাহর রহমতের বৃষ্টি হওয়ায় আমরা খুব খুশি।

সদর উপজেলার সাহাপাড়া ইউনিয়নের খামার পীরগাছার রওশন মিয়া তিন বিঘা জমিতে আমন ধান লাগিয়েছেন। তিনি জানান, এ সময় বৃষ্টি আমন ধানের জন্য খুব দরকার। বৃষ্টি না হলে সেচ দিয়ে আমন ধান রক্ষা করতে হতো না। বৃষ্টি হওয়ায় সেচের বাড়তি টাকা খরচ করতে হয়নি। এজন্য তিনি খুব খুশি। তাদের মতো হাজার হাজার আমন চাষির মাঝে এই বৃষ্টি স্বস্তি এনে দিয়েছে।

গাইবান্ধা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মাসুদুর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে আমন ধান চাষাবাদ করার জন্য জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে বীজতলার কাজ শুরু করেছেন জেলার কৃষকরা। আষাঢ়ের শুরুতে বৃষ্টি না হওয়ায় সেচ দিয়ে আমন রোপণ শুরু করে তারা। এখন আষাঢ়ের অতিরিক্ত বৃষ্টিতে কৃষকদের খরচ অনেক কমে যাবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, চলতি বছরে গাইবান্ধা জেলায় ১ লাখ ২৮ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।