সংসদীয় আসন ৯৮
বাগেরহাট ৪ আসনে কে পাচ্ছেন নৌকার মনোনয়ন
আগামী ৭ জানুয়ারী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সংসদীয় আসন ৯৮, উপকূলীয় মোড়েলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলা নিয়ে বাগেরহাট-৪ আসন গঠিত। শরণখোলা উপজেলায় ৪টি ও মোড়েলগঞ্জ উপজেলায় ১৬ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। যার ভোটার সংখ্যা প্রায় তিন লক্ষাধিক। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাট-৪ আসনে কে পাচ্ছেন আওয়ামীলীগের দলীয় টিকিট তা নিয়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা।
তবে, বিভিন্ন সংস্থার গোয়েন্দা, দলীয়ভাবে সংগৃহিত গোপনীয় তথ্য ও প্রার্থীদের কর্মকান্ড দলীয় সভানেত্রীর হস্তগত। নির্বাচনী এলাকায় জনসমর্থন আছে এবং ক্লিন ইমেজে যে এগিয়ে থাকবেন তাকেই দলীয় মনোনয়ন দেয়া হবে বলে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ সূত্র জানিয়েছেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই নড়েচড়ে বসেন আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রির ঘোষণার সাথে সাথে প্রার্থীরা দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ এলাকা ছেড়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও আশপাশের হোটেলে অবস্থান করছেন।
দলীয় বিভিন্ন প্রার্থীর সমর্থক সূত্র জানায়, বর্তমান সংসদ সদস্য এ্যাড. আমিরুল আলম মিলন, বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ডা. মোশারফ হোসাইন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ, মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু যুব সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা মো. জামিল হোসেন, মোড়েলগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র এ্যাড. মনিরুল হক তালুকদার।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ কমিটির সাবেক সহ সম্পাদক মিজানুর রহমান জনি, সাবেক পুলিশের অতিরিক্ত আই জিপি আঃ রহিম খান, আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা প্রবীর হালদার, বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মোড়েলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাড. শাহ ই আলম বাচ্চু, কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহম্মেদ দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
একাধিক সূত্র জানায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা প্রায় এক বছর ধরে নির্বাচনী আসনের প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার গ্রাম, পাড়া, মহল্লা ও হাটবাজারে প্রচারণা চালিয়েছেন। তবে এদের নির্বাচনী প্রচারণার কৌশল ছিল ভিন্ন। সরকারের উন্নয়নের কর্মকান্ড তুলে ধরার পাশাপাশি স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে পুনরায় নৌকায় ভোট দেবার আহবান জানিয়ে গণসংযোগ, উন্নয়ন সভা ও শান্তি সমাবেশ অংশ নেন। পাশপাশি বিতরণ করেছেন সরকারের উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ড সম্বলিত লিফলেট।
প্রার্থীরা ভোটারের বাড়ি, কর্মস্থল, মাঠ, হোটেল, রেস্তারা, চায়ের দোকানে গণসংযোগ করেন এবং এসব গনসংযোগের চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করেছেন অনেকেই। তবে, প্রত্যেক প্রার্থীই সরকারের উন্নয়নের বার্তা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পুনরায় বিজয়ী করার আহŸান জানান।
প্রবীণ ভোটার ও সাধারণ জনগণের সাথে কথা বলে জানা গেছে, যারা দীর্ঘ দিন ধরে সকল পেশার জনগণের সাথে সম্পর্ক রেখেছে এবং দলীয় কর্মকান্ডে যার অবদান রয়েছে তাকে প্রার্থী করলে ভোটারদের মাঝে স্বস্তি আসবে বলে তারা মনে করেন। নতুন ভোটাররা জানান, প্রযুক্তির ব্যবহারে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। তাই উন্নয়নের সাথে প্রযুক্তির সম্পর্ক বিদ্যমান।
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি মনোনয়ন পেলে এলাকাবাসি দলে দলে তার পক্ষে কাজ করবেন বলে অনেকেই মতামত দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মনোনয়ন জমাদানকারী বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার সুবাদে সাধারণ মানুষের কল্যানে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। এ আসনে নমিনেশন পেয়ে নির্বাচিত হতে পারলে শিক্ষার মানোন্নয়ণে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
এছাড়া মনোনয়ন জমাদানকারী বাংলাদেশ ছাত্রলীগ শরণখোলা উপজেলা শাখার সাবেক সভাপতি মালয়েশিয়া যুব সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা মাস বাংলা গ্রুপের চেয়াম্যান মোঃ জামিল হোসাইন বলেন, বঙ্গবন্ধু কণ্যা শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিলে এবং আমি যদি জয়লাভ করতে পারি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে বেকার সমস্যার সমাধান, পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন ও শরণখোলা-মোড়েলগঞ্জে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে লবন পানি নিষ্কাষণ করে সুপেয় পানি সরবরাহ করার চেষ্টা করব।
মনোনয়ন জমাদানকারী বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ডা. মোশারফ হোসাইন বলেন, দলের ত্যাগী ও অভিমানে দূরে সরে যাওয়া নেতা-কর্মীদের ফিরিয়ে এনে যোগ্য মূল্যায়ন করার পাশাপাশি নির্বাচনী এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা, নদী ভাঙ্গন, শরনখোলায় ট্যুরিজমের উন্নয়ন সহ জনগনের সেবক হিসেবে কাজ করব।
এ ব্যাপারে বাগেরহাট ৪ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড. আমিরুল আলম মিলন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও মনোনয়ন পাবেন বলে শতভাগ আশাবাদি। এবার মনোনায়ন পেয়ে নির্বাচিত হতে পারলে বঙ্গবন্ধু কণ্যা শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে গ্রাম হবে শহর। এছাড়া মোড়েলগঞ্জের পানগুছি সেতু নির্মাণ ও এর পশ্চিম পার্শে গাইড ওয়াল নির্মাণ, পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন সহ এলাকার উন্নয়নে সরকারের ধারাবাহিকতায় কাজ করবেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন