বানরের বিরুদ্ধে ইউএনওর কাছে নালিশ
মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার রাজনগর চা বাগানের নতুন টিলা এলাকার বাসিন্দা চা শ্রমিক সুদর্শন যাদব গোয়ালা (৪০)। বাগান এলাকায় তার প্রায় দুই একর ধানি জমি ও দুই-একটি টিলা জমিও রয়েছে। ধানি জমিতে তিনি ধান চাষ করেন আর টিলা জমিতে রয়েছে বিভিন্ন ফল-ফলাদির গাছগাছালি। গ্রীষ্মের ভরা মৌসুমে গাছগুলো আম, জাম, কাঁঠালসহ বিভিন্ন ফলের ভারে নুয়ে পড়েছিল। তিনি ভেবেছিলেন, এবার ফল বিক্রি করে অনেক টাকা আয় করবেন। কিন্তু তার সেই সাধ আর পূর্ণ হলো না। সুদর্শন যাদবের টিলা এলাকায় লাগানো ফলের গাছের সব ফসল নষ্ট করে দিয়েছে শাখামৃগের দল।
বানর তাড়াতে গিয়ে প্রায় হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। একটা দুটো বানর এলে তাড়িয়ে দিতেন, কিন্তু একবার তাড়ালে দল বেঁধে শত শত বানর এসে হামলে পড়ে ফলের বাগানে। তছনছ করে দিয়ে যায় সব। বানরের তাণ্ডবে তার প্রায় দেড় লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বানরের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে অবশেষে প্রতিকার চেয়ে সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শরিফুল ইসলামের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।
চা শ্রমিক সুদর্শন যাদব গোয়ালা জানান, বানরের যন্ত্রণা আর সহ্য করতে পারছি না। চা শ্রমিক হিসেবে যা পাই তা দিয়েতো পরিবার চালানো সম্ভব নয়। বাড়ির আঙিনায় টিলা এলাকায় কাঁঠাল, আম, জামসহ গ্রীষ্মের বিভিন্ন ফলের গাছ লাগিয়েছি। এসব ফল বিক্রি করে সংসার ভালোই চলছিল। কিন্তু গত কয়েক বছর থেকে বাগানের বানরগুলো এসব ফসল নষ্ট করছিল। এরপরও কিছু ফল বিক্রি করা যেত। বানরের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এখন আর একটা দুইটা বানর আসে না। দল বেঁধে হাজারো বানর আসে। এ বছর আমার পুরো ফসলই নষ্ট করে দিয়েছে। এ ক্ষতি আমার পক্ষে পূরণ করা সম্ভব নয়। আমি এর প্রতিকার চাই।
বানরের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘বন্যপ্রাণী রাষ্ট্রীয় সম্পদ। আসলে বন্যপ্রাণীর বিষয়গুলো বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগ দেখে। আমি অভিযোগটি তাদের কাছে পাঠিয়ে দিব।’
এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক তবিবুর রহমান পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ করা সবার দায়িত্ব। বন এলাকা বন্যপ্রাণীদেরই আবাসস্থল ছিল। আমরাই বিভিন্নভাবে তাদের তাড়িয়ে দিয়ে বাগান করেছি। বাঘ যদি কোনো ক্ষতি করে তাতে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আইন রয়েছে। ভারত বা উন্নত বিশ্বের দেশগুলোয় ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নিয়ম চালু আছে। হয়তো এক সময় আমাদের দেশেও সেই নিয়ম চালু হবে।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন