বিচার পাওয়ার আসা ছেড়ে দিয়েছে তনুর পরিবার
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকাণ্ডের অর্ধযুগ পার হচ্ছে আজ। এই অর্ধযুগেও তনুকে ধর্ষণের পর হত্যার সাথে সম্পৃক্তদের চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ।
এদিকে গত এক বছর তনুর পরিবারের খবর নেয়নি কেউই। সার্বিক যে অবস্থা, তাতে বিচার পাবার আশা ছেড়ে দিয়েছেন তনুর বাবা-মা।
তনুর মা আনোয়ারা বেগম জানান, কেউ আসে না, কেউ খবর নেয় না। আমরা গরিব মানুষ। এই দুনিয়ায় বিচারের আশা করি না। আল্লাহর কাছে বিচার দিয়ে রাখলাম। আল্লাহর বিচার বড় বিচার।
তনুর বাবা ইয়ার হোসেন জানান, তনুর ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে মসজিদে দোয়া ও এতিম শিশুদের খাওয়ানোর আয়োজন করছি।
বিচার না পাওয়া নিয়ে তিনি বলেন, আমি আর বিচার চাই না। বিচার চেয়ে কী লাভ? গরিবের ওপর জুলুমের বিচার হয় না।
তনুর পরিবার সূত্রে জানা যায় , ২০১৬ সালের ২০ মার্চ সন্ধ্যায় কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরে একটি বাসায় টিউশনি করতে গিয়ে আর বাসায় ফিরেনি তনু। পরে স্বজনরা খোঁজাখুঁজি করে রাতে বাসার অদূরে সেনানিবাসের ভেতর একটি জঙ্গলে তনুর মরদেহ পায়।
পরদিন তার বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কোতয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ ও ডিবির পর ২০১৬ সালের পয়লা এপ্রিল থেকে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি কুমিল্লা।
তনুর দুই দফা ময়নাতদন্তে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফরেনসিক বিভাগ মৃত্যুর সুস্পষ্ট কারণ উল্লেখ করেনি। শেষ ভরসা ছিল ডিএনএ রিপোর্ট। ২০১৭ সালের মে মাসে সিআইডি তনুর জামা-কাপড় থেকে নেওয়া নমুনার ডিএনএ পরীক্ষা করে তিনজন পুরুষের শুক্রাণু পাওয়ার কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল।
সর্বশেষ সন্দেহভাজন হিসেবে তিনজনকে ২০১৭ সালের ২৫ অক্টোবর থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত সিআইডির একটি দল ঢাকা সেনানিবাসে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এর মধ্যে ২০২০ সালের নভেম্বরে মামলাটির দায়িত্ব পিবিআইকে দেওয়া হয়। পিবিআই ঢাকার একটি টিম দায়িত্ব পাওয়ার শুরুর দিকে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে ঘুরে যান। এরপর অন্ধকারে ঢাকা পড়ে মামলার কার্যক্রম।
পিবিআই’র ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার জানান, সিআইডি অনেক কাজ করেছিল। সে হিসেবে আমরা অতটা এগুতে পারিনি। ডিএনও টেস্ট করে যেহেতু শুক্রাণু পাওয়া গেছে, আমরা সাসপেক্টেডদের (সন্দেহভাজন) সংখ্যা বাড়াবো। সে লক্ষ্যেই কাজ করছি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন