বিবাহবার্ষিকীতে স্ত্রীর জন্য প্রাণ দিলেন স্বামী

প্রথম বিবাহবার্ষিকী উদযাপন করতে স্ত্রীকে নিয়ে পাহাড়ে গেলেন স্বামী। কিন্তু বিধি বাম। হঠাৎ পাথর খসে পড়ে ধেয়ে আসতে লাগলো তাদের দিকে। আর তখনই স্ত্রীকে বাঁচতে নিজের জীবন উৎসর্গ করলেন স্বামী। বাঁচিয়ে গেলেন স্ত্রীকে।

গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের জোসেমিত জাতীয় পার্কের এল ক্যাপিটান শিলাপর্বতে এ ঘটনা ঘটে। শনিবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।

অ্যান্ড্রু ফোস্টার (৩২)ও লুসি (২৮) নামের ওই দম্পতি কার্ডিফে বসবাস করত। তাঁদের প্রথম বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন করতে ক্যালিফোর্নিয়া গিয়েছিলেন তাঁরা। ফস্টার কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকৌশল বিদ্যায় পড়ালেখা করেছেন এবং পাতাগোনিয়ায় একটি পোশাক কোম্পানিতে চাকরি করতেন।

পর্বত আরোহণের সময় ওই দম্পতি লিখেছেন, ‘আমরা তরুণ বিবাহিত দম্পতি। আমরা অন্য কিছুর চেয়ে বাইরে বেরানোই বেশি উপভোগ করি এবং পর্বত আরোহণের অ্যাডভেঞ্চারও।’

লুসি তাঁর পরিবারকে বলেন, তিনি শুধুমাত্র বেঁচে ছিলেন কারণ তাঁর স্বামী দেখতে পাচ্ছিলেন সেখানে কী ঘটতে যাচ্ছে। তিনি তাঁকে রক্ষা করেছিলেন।

অ্যান্ড্রু ফস্টারের খালা জিলিয়ান স্টিফেনস দি টাইমস পত্রিকাকে বলেন, ‘ লুসি বলেছিল-অ্যান্ড্রু আমার জীবন বাঁচিয়েছে। তিনি আমাকে উপরে নিয়ে যান, যেন তিনি দেখতে পাচ্ছিলেন কী ঘটতে যাচ্ছে। তিনি আমার জীবন বাঁচান।’

স্টিফেনস আরো বলেন, এ ঘটনার পর ফস্টারের বাবা ডেভ ও মা জুলি একেবারে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। বলে বোঝানো যাবে না তাঁরা কতখানি মর্মাহত। তিনি বলেন, ‘এটা একটি প্রকৃত প্রেমের গল্প।’

২০১৫ সালে ছুটির দিনে ইউরোপের সবচেয়ে পর্বতশৃঙ্গ আল্পসে স্কিং করতে যান। সেখানেই তাঁরা বাগদান সম্পন্ন করেন। পরের বছর তাঁরা বিয়ে করেন। এই দম্পত্তি ভ্রমণবিষয়ক একটি ব্লগ পরিচালনা করত।

পর্বত আরোহণের সব ধরনের সরঞ্জামাদিসহ এই দম্পতিকে পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, পর্বতের প্রায় ২০০ ফুট উঁচু থেকে পাথরটি পড়েছে।

স্কট গেডিম্যান নামের জোসেমিত জাতীয় পার্কের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ভুল জায়গায়, ভুল সময়ে, এটি ছিল একটি মর্মান্তিক ঘটনা।’

পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, পাথর ধসে গত চার বছরের মধ্যে ফস্টারের মৃত্যুর ঘটনাই প্রথম। সেখানকার ফরেন অফিসের এক মুখপাত্র বলেন, ‘এই মর্মান্তিক ঘটনার জন্য আমরা ওই দুই পরিবারকে সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছি এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।’