বিয়ের কার্ডে শৌচাগারের ছবি!
বিয়েতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের মধ্যে একটি হচ্ছে বিয়ের কার্ড। এই কার্ডের মাধ্যমেই নিকটাত্মীয়, বন্ধু-বান্ধব ও শুভানুধ্যায়ীদের বিয়েতে নিমন্ত্রণ করা হয়। এতে বিয়ের দিনক্ষণ, পাত্র-পাত্রীর নাম, বিয়ে অনুষ্ঠানের সময়সূচি লেখা থাকে। সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টা করা হয় যাতে বিয়ের কার্ড মানসম্মত হয় এবং এতে জৌলুস থাকে। কার্ডকে আকর্ষণীয় করতে নানা ধরনের ডিজাইনও করা হয়।
তাই বলে কখনও দেখেছেন বিয়ের কার্ডে শৌচাগারের ছবি! বিয়ের কার্ডে এমনই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে ভারতের তরুন সৌরভের বিয়েতে।
যে বাড়িতে শৌচাগার নেই, সে বাড়িতে বিয়েও নয়- বিয়ের আগেই এই কথাটা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছিলেন পাত্রী নাগরি। মেয়ের কথামতো বাড়ির লোকজনও ঘটককে অনুরোধ করেছিলেন-পাত্র দেখার সঙ্গে সঙ্গে সে বাড়িতে শৌচাগার আছে কি না সেই বিষয়টা খোঁজ-খবর নিতে।
ঘটক কথা রাখেন। পাত্রের বাড়িতে শৌচাগার আছে বলে তিনি পাত্রীকে জানান। এখন ছাপানো হবে বিয়ের কার্ড। ঠিক সেইসময় পাত্রী সামসাল বেগম আবদার করে বসেন, বিয়ের কার্ডে শৌচাগারের ছবি থাকবে।’
মেয়ের কাছ থেকে এমন কথা শোনার পর বাড়ির সবার চক্ষু যেন চড়ক গাছ। এ আবার কেমন কথা! বিয়ের কার্ডে শৌচাগারের ছবি!’ কিন্তু সামসাল বেগম নাছোড়বান্দা। তিনি বোঝান, শৌচাগার না থাকাটা মেয়েদের কাছে চরম অসম্মানের ব্যাপার। এই কার্ডটা যাদের বাড়ি যাবে তারাও এ ব্যাপারে সচেতন হবেন।
পাঁচথুপি ত্রৈলক্যনাথ হাইস্কুল থেকে ২০১৩ সালে উচ্চ মাধ্যমিকে পাশ করেন সামসাল। প্রায় বিশ বছর আগে বাবা সামসের শেখ মারা গিয়েছেন। মা চারনিহারা বিবি গরু পালন কোনো মতে সংসার চালান। ফলে অভাবের সংসারে সামসালের আর কলেজ যাওয়া হয়নি। দেখা হয়নি ‘টয়লেট, এক প্রেম কথা’। তবে সেই সিনেমার গল্প শুনেছেন। শৌচাগার নেই বলে বিয়ে ভাঙার কথাও তিনি পড়ছেন খবরের কাগজে।
এর আগে ভারতের এক চা বিক্রেতা ও সেলুনের মালিক দোকানের সামনে ফ্লেক্স টাঙিয়ে ঘোষণা করেছিলেন-বাড়িতে শৌচাগার না থাকলে কিংবা থাকলেও তা ব্যবহার না করলে চা মিলবে না। হবে না চুল-দাড়ি কাটাও। সামসালের এটাও অজানা নয়।
তিনি বলেন, সিনেমার গল্প ও চা বিক্রেতার এ পদক্ষেপ তাকে এমন সিদ্ধান্ত নিতে অনুপ্রাণিত করেছে। বিয়ের কার্ডে শৌচাগারের ছবির ওপরে তিনিই ‘ইজ্জত ঘর’ কথাটা লিখতে বলেছেন। যাতে বোঝা যায়, শৌচাগার না থাকাটা কতটা অসম্মানের।
তবে হবু স্ত্রীর এ উদ্যোগে প্রশংসায় পঞ্চমুখ পাত্র তাউসেফ রেজা আহমেদ। আগামী ৩০ অাগস্ট তাদের বিয়ে। মুচকি হেসে তিনি বলেন, ভাগ্যিস, আমার বাড়িতে শৌচাগার আছে!
সূত্র: আনন্দবাজার
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন