ব্রাজিলকে হারাল আর্জেন্টিনা

মারাকানায় প্রথমার্ধে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা কোন দলই ছিল না স্বাচ্ছন্দ্যে। ফাউলের ঘটনায় একাধিকবার ছড়ায় উত্তাপ। গোলের জন্য দুই দলের চেষ্টা সেভাবে দেখা গেল না। নিষ্প্রভ ছিলেন লিওনেল মেসি।

তবে দ্বিতীয়ার্ধে ভিন্ন চেহারায় আর্জেন্টিনা। দারুণ এক আক্রমণে পেয়ে যায় কাঙ্ক্ষিত গোল। সেই ব্যবধান ধরে রেখে ১-০ গোলের জয় নিশ্চিত করে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা।
উরুগুয়ে, কলম্বিয়ার কাছে হারের পর আর্জেন্টিনা ম্যাচ দিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে চেয়েছিল ব্রাজিল কিন্তু ব্যর্থতার বৃত্তেই আটকে থাকতে হল সেলেসাওদের।

এতে টানা তিন ম্যাচ হেরে ৬ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে পয়েন্ট টেবিলের ছয়ে নেমে গেল ব্রাজিল। আর উরুগুয়ের কাছে হারের পর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াল আর্জেন্টিনা। ৬ ম্যাচে পাঁচ জয় ও এক হারে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আলবেসিলেস্তারা।

মারাকানায় অবশ্য নির্ধারিত সময়ে শুরু হয়নি ম্যাচ।শুরুর আগেই গ্যালারিতে ছড়িয়েছে উত্তাপ। ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার সমর্থকরা জড়িয়ে পড়েন সংঘাতে। স্বাগতিক দর্শকদের সঙ্গে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে আর্জেন্টিনা সমর্থকরা। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে সমর্থকদেরও হাতাহাতি হয়। পুলিশকে লাঠিপেটা করতে দেখা যায়।

বেশ কয়েকজন রক্তাক্ত হয়েছেন। পরিস্থিতিতে সামলানোর জন্য গ্যালারির দিকে ছুটে যান লিওনেল মেসি, মার্কোনিওসরা এবং শান্ত হতে বলেন সমর্থকদের। এরপর মেসিরা মাঠ ছেড়ে যান। এতে ম্যাচ পিছিয়ে যায় আধা ঘণ্টা।
ম্যাচের আগেই উত্তপ্ত হওয়া মারাকানায় ম্যাচ শুরুর পর মাঠের লড়াইয়েও দুই দলের খেলোয়াড়দের দেখা যায় আগুনে চেহারায়। প্রথমার্ধে ২২টি ফাউল করে দুই দল। ব্রাজিল ১৬টি, আর্জেন্টিনা ৬টি। দুই দলের ফুটবলাররা কথার লড়াইয়েও জড়িয়ে পড়ে। নবম মিনিটে প্রথম আক্রমণে উঠে আর্জেন্টিনা। মার্কুস আকুনার বাম পায়ের শট অবশ্য ব্রাজিলের এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে আটকে যায়।

উত্তপ্ত ম্যাচের ১৫ মিনিট যেতে না যেতেই ব্রাজিলের গ্যাব্রিয়েল জেসুস ও রাফিনিয়া হলুদ কার্ড দেখেন। সময় বাড়লে ব্রাজিলও আক্রমণে মনোযোগী হয়। সুযোগ তৈরির চেষ্টায় ছিল ফার্নান্দো দিনিজের দল। কিন্তু সেভাবে পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না রাফিয়ানিয়া-রদ্রিগোরা। সেরা সুযোগ নষ্ট হয় মধ্যবিরতিতে যাওয়ার একটু আগে। বক্সের সামনে থেকে গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লির শট গোললাইন থেকে ফিরিয়ে দেন ক্রিস্তিয়ান রোমেরো।

দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য দুই দল গোলের খোঁজে আক্রমণে বেশি মনোযোগী হয়। ৫৩ মিনিটে ভালো সুযোগ আসে ব্রাজিলের সামনে কিন্তু তা কাজে লাগাতে পারেননি রাফিনিয়া। ব্রুনো গিমারেসের লম্বা করে বাড়ানো পাস রাফিনিয়া নিয়ন্ত্রণে নিলেও তার শট এগিয়ে এসে ফেরান এমিলিয়ানো মার্তিনেস। একটু পরেই আরেকটি দুর্দান্ত সেভ দেন মার্তিনেস। আর্জেন্টিনার দুই ডিফেন্ডারকে পেছনে ফেলে বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন জেসুস, তবে নিজে শট না নিয়ে পাশে থাকা মার্তিনেল্লিকে বাড়িয়ে দেন, কিন্তু মার্তিনেসকে একা পেয়েও বল জালে পাঠাতে পারেননি তিনি। তার দুর্বল শট ফিরিয়ে দেন আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক।

৬৩ মিনিটে মারাকানা স্টেডিয়াম স্তব্ধ করে দেন নিকোলাস ওতামেন্দি। এই ডিফেন্ডারের গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। জিওভানি লো সেলসোর কর্নারে হেডে জাল খুঁজে নেন ওতামেন্দি। এরপর ম্যাচে ফেরার চেষ্টা চালায় ব্রাজিল কিন্তু পারেনি। উল্টো ৮১ মিনিটে জোয়েলিন্তন লাল কার্ড দেখলে দশ জনের দলে পরিণত হয় স্বাগতিকরা। শেষ পর্যন্ত আরেকটি হার সঙ্গী হয় পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের।