মারামারি মামলার প্রধান আসামি কোলে চড়ে আদালতে, অতঃপর…

মারামারি সংক্রান্ত ১০৭ ধারার একটি মামলার প্রধান আসামি মায়ের কোলে চড়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের একটি আদালতে উপস্থিত হলে আসামি শিশু হওয়ায় আদালত সেই মামলা খারিজ করে দিয়েছেন।

রবিবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে।

মামলার ১নং আসামি চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার আজাইপুর মহল্লার রমজান আলীর ছেলে নাদিম আলী (৭) এবং ৪নং আসামি সদর উপজেলার রামজীবনপুর গ্রামের আবু তালহার ছেলে মোঃ সেরাজুল ইসলাম (১৩)। এ সময় একই মামলার অপর ২ আসামি শিশু সেরাজুলের পিতা আবু তালহা ও নাদিমের মাতা আলিয়া বেগমও আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, মামলার প্রধান আসামি শিশু নাদিমের মা তার পিতাকে বিদেশ পাঠানোর জন্য বছর খানেক আগে চড়া সুদে একই এলাকার গোলাম রসুলের কাছে ১ লাখ টাকা ঋণ নেয়। সেই টাকা সুদসহ দিতে বিলম্ব হলে ঋণদাতা আজাইপুর বটতলাহাটের মো. গোলাম রসুল চাঁপাইনবাবগঞ্জের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। যার নম্বর ৫৬৮ সি/১৯(নবাব)। এর আগে এ মামলায় টাকা প্রদানের মাধ্যমে আপোষের শর্তে আসামিরা জামিন লাভ করলে পরবর্তীতে আলেয়া বেগম নির্দ্দিষ্ট সময়ে টাকা দিতে ব্যর্থ হলে গোলাম রসুল তার উপর প্রধান আসামি শিশু নাদিমের নেতৃত্বে হামলা হয়েছে বলে একই আদালতে অপর একটি মামলা দায়ের করে।
যার নম্বর-১২পি/২০(নবাব)।

এ মামলায় রবিবার দুপুরে ২ শিশু, তাদের একজনের পিতা এবং অপরজনের মাতা জামিনের জন্য আদালতে উপস্থিত হলে আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন।

এ ব্যাপারে শিশু নাদিমের মা আলিয়া বেগম জানান, ১ লাখ টাকা ধার নিয়ে অল্প সময়ে মামলাকারী গোলাম রসুল দেড় লাখ টাকা দাবি করেন। কিন্তু তিনি আদালত থেকে জামিন পেয়ে নির্দ্দিষ্ট সময়ে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা দেয়ার পরও তার কোলের শিশু ও তাকে জড়িয়ে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়।

অন্যদিকে মামলার ৪নং আসামি অপর শিশুর পিতা আবু তালহা জানান, তার আত্মীয় আলিয়া বেগমের প্রথম মামলায় জামিন করতে সহায়তা করায় পরবর্তীতে পরিকল্পিতভাবে তাকে ও তার শিশু সন্তান সেরাজুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে আসামি পক্ষের আইনজীবি মোঃ জোবদুল হক জানান, জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট অনুযায়ী শিশু ২টির বয়স ১৮ বছরের নিচে হলেও বয়স গোপন করে অসৎ উদ্দেশে গোলাম রসুল একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে শিশুদের প্রধান আসামি করেছে, যা আইনবহির্ভূত। বিষয়টি আদালত অবগত হয়ে তাৎক্ষনিকভাবে মামলাটি খারিজ করে দেন। তবে তিনি এ ধরনের মামলা দায়েরকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন আদালতের কাছে।

অন্যদিকে মামলার বাদী গোলাম রসুল জানান, ভুলবশত শিশুদের আসামি করা হয়েছে।
মামলাটি তিনি আসামিদের সাথে বসে মিমাংসা করে নিয়েছেন।
তথ্যসূত্র: বিডি প্রতিদিন