বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হার্ট অ্যাটাকে, দ্বিতীয় স্ট্রোকে!

সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মানুষ পঙ্গু হন স্ট্রোকের কারণে। আর সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয় হার্ট অ্যাটাকে। সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে স্ট্রোক।

বিশ্বব্যাপী প্রতি ৪ জনে একজন মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

প্রতি ৬ সেকেন্ডে একজন মানুষের মৃত্যু হচ্ছে স্ট্রোকে।

তবি এসব বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়লে স্ট্রোক রোগে আক্রান্তের হার ও মৃত্যু কমে আসবে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের নিউরোসার্জারি বিভাগের আতা এলাহী খান মিলনায়তনে আয়োজিত বিশ্ব স্ট্রোক দিবসের এক কর্মশালায় বক্তারা এসব বিষয় তুলে ধরেন।

সেখানে বক্তারা আরও বলেন, স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর জন্য প্রয়োজন দ্রুত চিকিৎসাসেবা।

এজন্য হাসপাতালগুলোতে স্ট্রোক ইউনিট চালুর প্রতি গুরুত্ব দেয়া উচিত। বিশেষ করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মতো বড় হাসপাতালেও স্ট্রোকের আলাদা কোনো ইউনিট নেই। যার ফলে রোগীরা সময়মত সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন। অথচ সময়মতো সেবা পেলে পঙ্গুত্বের হাত থেকে বাঁচতেন সাধারণ মানুষ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হচ্ছে মায়ের মত। এখানে কোনো রোগীকে ফিরিয়ে দেয়া হয় না। তবে এ হাসপাতালে স্ট্রোক ইউনিট নেই এটা শুনে আমি অবাক হয়েছি। ‍

তিনি বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এখন ক্যাথল্যাব চালু হয়েছে। এখান থেকে সাধারণ মানুষ বিশ্বমানের সেবা পাবেন।

কার্ডিয়াক ক্যাথল্যাব চালুর ফলে এনজিওগ্রাম পরীক্ষার পর রোগীদের নামমাত্র ফি নিয়ে রিং পরানো, পেস-মেকার স্থাপন, হার্টের ভাল্ব রিপেয়ারিংসহ প্রয়োজনে বাইপাস সার্জারি করা যাবে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ সেবা পাওয়ার ফলে রোগীদের ভোগান্তি ও খরচ অনেক কমে যাবে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বর্তমান পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিনের প্রশংসা করে বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, এই হাসপাতালের প্রভূত উন্নয়নে তিনি ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন।

ব্রিগেডিয়ার নাসির একজন রোগীবান্ধব চিকিৎসক। অন্য পরিচালকদের যেসব বিষয়ে গুরুত্ব বুঝিয়েও আদায় করা যেত না, সেখানে তিনি এই হাসপাতালে ক্যাথল্যাব চালু করেছেন, যার কারণে সাধারণ মানুষ সহজেই স্ট্রোকের সেবা পাবেন। তিনি আরও কিছুদিন থাকলে আমাদের এই হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবার অনেক উপকার হতো। তিনি বিদায় নিতে যাচ্ছেন।
নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক এসেছেন, আমরা প্রত্যাশা করি তিনিও এ হাসপাতালের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখবেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বর্তমান পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন বলেন, আমি এ হাসপাতালে আরও কিছুদিন আছি। এখানকার কর্মরত চিকিৎসকদের খুব মিস করব। সাধারণ মানুষের সেবায় এ হাসপাতাল বিশেষ অবদান রেখেছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. অসীত চন্দ্র সরকারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপ্যাল অধ্যাপক ডা. খান আবুল কালাম আজাদ, ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন, ঢামেক হাসপাতালের নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক, ঢামেক হাসপাতালের এনেস্থেশিয়া ও আইসিইউ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. মোজাফফর হোসাইন।

রবিবার অনুষ্ঠিত ওই অনুষ্ঠানে স্ট্রোক নিয়ে একটি বুকলেটের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।