ময়মনসিংহের ভালুকায় বনের ৫ শতাধিক গাছ কর্তন করেছে দুর্বৃত্তরা
ময়মনসিংহের ভালুকায় অসাধু বন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে হবিরবাড়ি মৌজার বনের গেজেটভূক্ত জমি থেকে গত রোববার রাতের আধারে গজারিসহ ৫শতাধিক গাছ কেটে নিয়ে গেল দুর্বৃত্তরা।
সেই আলামত নষ্ট করার জন্য বনের মাঝে তারা আগুন ধরিয়ে দেয়। পরদিন দুপুরে স্থানীয় বনবিভাগের লোকজন ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু গাছের গুঁড়ি জব্দ করেছে।
এলাকাবাসী ও বন বিভাগের সূত্রে জানাযায়,উপজেলার হবিরবাড়ি মৌজায় রাধুর ভিটার বনের গেজেটভূক্ত ৪৩৮ ও ৪১৩ নং দাগের অর্ধশত বছরের পুরনো গজারি ও আকাশমনি গাছেরবাগান থেকে ৫ শতাধিক গাছ দুর্বৃত্তরা কেটে নিয়ে গেছে। বন বিভাগের লোকজন খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু কাটা গাছের গুঁড়ি জব্দ করে স্থানীয় রেঞ্জ অফিসে নিয়ে আসেন।
একটি সূত্র জানায়,ঢাকার পলমল গ্রুপ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গার্মেন্টস করার জন্য আব্দুর রশিদের কাছ থেকে ২০১৫ সালে ৪৩৮ ও ৪১৩দাগসহ বিভিন্ন দাগে ৮৭বিঘা জমি ক্রয় করেন। ওই জমিতে গজারিসহ বিভিন্ন বনজ গাছের বাগান রয়েছে। সেই জমিতে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি করার জন্য রাতের আধারে গজারিসহ বিভিন্ন বনজগাছ কেটে নিচ্ছে দুর্বৃত্তরা।
গাছগুলো কেটে নেয়ার পর গাছের অস্তিত্ব ধ্বংস করার জন্য সেখানে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ অভিনব কায়দায় বন ধংস করে হবিরবাড়ি এলাকার সরকারী বনভূমির জাল কাগজপত্র তৈরি করে কয়েক হাজার একর বনের দখল করে নিয়ে ঢাকার বিভিন্ন শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েক শ ভূমি দালাল।
আসপাডা পরিবেশ উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুর রশিদ জানান, আমি পলমল গ্রুপের কাছে জমিটি বিক্রি করেছি। ওই জমির উপর হাইকোর্টে আমি একটি রিট করেছিলাম। হাইকোর্ট বন বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছে ওই জমিতে আমরা কাজ করলে বনবিভাগ যেন বাধা না দেয়।
হবিরবাড়ি বিট অফিসার আশরাফুল আলম বলেন, ৪৩৮ দাগে মোট ১১১ একর জমি রয়েছে যার মধ্যে ৮৩ একর জমি বনের গেজেট বাকী ২৮জমি সরকারী খাস ও জনগণের রেকর্ডিও। আব্দুর রশিদ নামে এক ব্যক্তি বিভিন্ন দাগের ৪৩ একর জমির উপর আদালত থেকে একটি নিষেধাজ্ঞা এনেছেন বন বিভাগের উপর।
হবিরবাড়ি রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা(চলতি)রইছ উদ্দিন বলেন, ৪১৩ ও ৪৩৮নং দাগে বনের গজারি গাছ কাটা হয়েছে শুনে আমি আমার স্টাফ পাঠিয়েছি। ৩০/৪০ টি গজারি গাছ জব্দ করা হয়েছে। বাকীগুলি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আব্দুর রশিদকে আসামি করে বন আইনে একটি মামলা প্রক্রিয়াধিন রয়েছে।
বিভাগীয় সহকারী বনসংরক্ষক হারুন অর রশিদ জানান, কে বা কারা গাছ কেটে নিয়েছে তার আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন