যশোরের শার্শায় বঙ্গবন্ধু ব্রি-১০০ ধানের বীজ পাওয়া যাচ্ছে
জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু’র জন্মশতবর্ষ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের নতুন আবিষ্কার দেশের সাড়া জাগানো ‘বঙ্গবন্ধু ব্রি-১০০’ ধান এখন সরবরাহ ও সংরক্ষণ করছে শার্শার একমাত্র বীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান “আল-আমিন এগ্রো সীড ফার্ম”।
শার্শা উপজেলার গোগা ইউনিয়নাধীন ৬নং ওয়াডের আমলাই বাজারে অবস্থিত “আল-আমিন এগ্রো সীড ফার্ম” এর স্বত্তাধীকারী এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ দেলোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, “ধান চাষে ভাল ফলন পেতে হলে “বঙ্গবন্ধু ব্রি-১০০” এর বিকল্প নেই। এ ধান চাষে জমিতে বিঘা প্রতি প্রায় ৩০ মণ ধান পাওয়া যায়। এতে রোগ-বালাই ও পোকা-মাকড় আক্রমণের পরিমাণ কম হওয়ায় অনেক কৃষকই ঝুঁকছেন এই ধান আবাদে। গত ইরি-বোরো মৌসুমে আমি আমার নিজস্ব ১ একর(প্রায় ৩ বিঘা) কৃষি জমিতে “বঙ্গবন্ধু ব্রি-১০০” ধানের চারা রোপণ করে বিঘা প্রতি প্রায় ৩০ মণ ধান পেয়েছি।
এলাকার অন্য চাষিদেরকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য এবং এই ধান, চাষের উপযোগী করে আমার বীজ উৎপাদন খামারে প্রায় ৫০ মণ বীজ ধান সংরণ করেছি,যা আগামী ইরি-বোরো মৌসুমে এই ধান চাষ করে চাষীরা যাতে ব্যাপক লাভবান হতে পারে। শুধুমাত্র নাম মাত্র মূল্যে সরবরাহ বাড়াতে বাজার জাত করণে সকল প্রস্তুতি আমার রয়েছে। প্রয়োজনে যে কোন ধান চাষী “বঙ্গবন্ধু ব্রি-১০০” ধান চাষে আমার পরামর্শ এবং সহযোগীতা নিতে পারেন”। তিনি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে বলেন “বঙ্গবন্ধু ব্রি-১০০” ধান চাষে আমাকে সর্বপ্রথম উদ্বুদ্ধ করেন শার্শা উপজেলার কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর। সেখানকার কৃষি অফিসার প্রতাপ কুমার মন্ডলের সার্বিক তত্বাবধানে ও একান্ত সহযোগীতায় আমার “আল-আমিন এগ্রো সীড ফার্ম” উৎসাহের সাথে “বঙ্গবন্ধু ব্রি-১০০” ধান চাষে মনোযোগী হই।
মোঃ দেলোয়ার হোসেন আরও বলেন, জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে বঙ্গবন্ধু’র নামের এই বীজ ধানের ফলন বাড়িয়ে দেশকে খাদ্যে স্বয়ং সম্পুর্ণ করতে ধান চাষীদের প্রতি আমার বিনীত আহবান রইল।
আগামী ইরি-বোরো মৌসুমী ধান চাষে “বঙ্গবন্ধু ব্রি-১০০” এর চাহিদার কথা জানতে সরেজমিনে “আল-আমিন এগ্রো সীড ফার্ম” পরিদর্শনে গেলে সেখানে উপস্থিত ১০ জন কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, ” বঙ্গবন্ধু ব্রি-১০০” এর ফলন বৃদ্ধিতে কৃষক কুলে ব্যাপক সাড়া যুগিয়েছে। আগামী ইরি-বোরো মৌসুমে তারা “বঙ্গবন্ধু ব্রি-১০০” ধান চাষ করবেন বলে সকলে জানিয়েছেন।
শার্শা উপজেলার কৃষি অফিসার প্রতাপ মন্ডল এক সাাৎকারে বলেন, “বঙ্গবন্ধু ব্রি-১০০” জাতটি ২০০৬ সালে সংক্রায়ণ করা হয় । পরে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা মাঠে ৫ বৎসর ফলন পরীা করা হয়। ২০২০ সালে বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি কতৃক ফলন পরীায় (পিভিটি) সন্তোষ জনক হওয়ায় জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক ছাডকরণ করা হয়।
ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার বঙ্গবন্ধু’র আশা পূরণে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট “বঙ্গবন্ধু ব্রি-১০০” জাতের ধান উদ্ভাবন করে। জিংক সমৃদ্ধ এ জাতটি তাদের উদ্ভাবিত ৬টি জাতের মধ্যে অন্যতম।এই ধানের আবাদ দ্রুত কৃষকদের মাঝে সম্প্রসারণ করতে কৃষি বিভাগ ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। পোকামাকড়ের আক্রমণ ও রোগবালাই কম থাকায় উচ্চ ফলনশীল এ জাতের ধানকে জনপ্রিয় করার লে কৃষকদের উৎসাহিত করে চলেছে কৃষি বিভাগ। কিছু চাষীদের সার ও বিজ সরবরাহ ও ধান চাষের পদ্ধতি শেখানো হয়েছে।
কৃষি অফিস সুত্রে আরও জানা যায়, “বঙ্গবন্ধু ব্রি- ১০০” ধানের বৈশিষ্ট্য হলো- আধুনিক উফশী ধানের সকল বৈশিষ্ট্য এ ধানে বিদ্যমান। গাছের বৃদ্ধি পর্যায়ে আকার আকৃতি “ব্রি ধান ৭৪” এর মত, ডিগ পাতা খাড়া, প্রশস্থ ও লম্বা এবং পাতার রং সবুজ। পূর্ণবয়স্ক গাছের উচ্চতা ১০১ সেমি, ১০০০টি পুষ্ট ধানের ওজন ১৬.৭ গ্রাম। চাল মাঝারি চিকন ও সাদা, জিংকের পরিমাণ ২৫.৭ মিঃ গ্রাম, চালে অ্যামাইলোজ ২৬.৮ শতাংশ এবং প্রোটিন ৭.৮ শতাংশ বিদ্যমান।
দেশের যে সকল অঞ্চলে বোরো মৌসুমে জিরা নামক জাতের চাষাবাদ করা হয় সেসব অঞ্চলে এ জাতটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাবে বলে ঐ কৃষি অফিসার জানিয়েছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন