রংপুরে শ্বশুর বাড়ি থেকে লাশ হয়ে ফিরলেন ঘরজামাই রানা শাহ্
পরিবারের লোকজনের কথা অমান্য করে শ্বশুর বাড়িতে ঘরজামাই হিসেবে বসবাসের পর অবশেষে পোস্ট মর্টেম শেষে রানা শাহ (৩৫) এর নিথর মরদেহ মিঠাপুকুরে তার অসহায় বাবার বাড়িতে ফিরেছে।
রবিবার (১ অক্টোবর) সকালে পীরগন্জ থানা পুলিশ ফাঁসিতে টাঙানো অবস্থায় রানা শাহর মরদেহ উদ্ধার করে। ঘটনার পর থেকে শ্বশুর বাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় পীরগঞ্জ থানায় বাদী হয়ে মৃতের বাবা সুলতান শাহ তিনজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
রানা শাহ মিঠাপুকুর উপজেলার লতিবপুর ইউনিয়নের হাতিমপুর গ্রামের হোটেল ব্যবসায়ী সুলতান মিয়ার ছেলে। এ ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে স্ত্রী রুমানা বেগম,শাশুড়ী এবং শ্যালক।
পুলিশ ও স্বজনরা জানান, প্রায় ৭ বছর পূর্বে পীরগঞ্জ থানাধীন বড়দরগাহ ইউনিয়নের শাহাপাড়া হাজীপুর গ্রামের আব্দুস সালামের মেয়ে সালমা বেগমের (২৮) সঙ্গে রানা শাহের বিয়ে হয়। সংসার চলাকালে সালমা বেগমের বড় ভাই (সম্পর্কে সমন্ধি) সুমন মিয়ার স্ত্রী রুমানা বেগমের সঙ্গে (৩০) রানা শাহের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ নিয়ে পাঁচ বছর পূর্বে রানা শাহ তার স্ত্রী সালমা বেগমকে তালাক দিয়ে সমন্ধির স্ত্রী রুমানা বেগমকে পালিয়ে নিয়ে বিয়ে করেন। প্রায় এক বছর আগে রানা শাহ শ্বশুর বাড়ীর পাশে জনৈক্য রবি চন্দ্রের জমি কিনে টিন সেটের একটি বাড়ী তৈরী করে বসবাস করছিলেন। প্রায় সময় রানা শাহ ও রুমানার মধ্যে পারিবারিক ঝগড়া লেগে থাকতো। দাম্পত্য জীবনে তাদের চারবছর বয়সি এক কন্যা সন্তান রয়েছে।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে স্বামী-স্ত্রী মোটর সাইকেলে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করে রাত অনুমান ১০ টার দিকে বাড়ীতে ফেরেন। রবিবার সকাল ৭টার দিকে রানা শাহের শাশুড়ী রেজেকা বেগম ওই বাড়ীতে গিয়ে বারান্দার কাঠের পাইরের (তীরের) সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো রানা শাহের ঝুলন্ত মরদেহ দেখা যাচ্ছে বলে পাশ্ববর্তী লোকদের জানান। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, যেভাবে রানা শাহর মরদেহ তীরে টাঙানো ছিলো তাতে বোঝা যায়, তাকে হত্যা করা হয়েছে। লাশের শরীর মাটিতে নুয়ে পড়া ছিলো এবং শরীরে আঘাত রয়েছে। মরদেহ দেখে নিশ্চিত করে বোঝা যায়, এটা পরিকল্পিত হত্যাকান্ড!
এদিকে রানা শাহের বাবা সুলতান শাহ জানান, রানার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে হত্যার পর মরদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। গতকাল দিবাগত রাতে তাকে অন্য কোথাও হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক সাজানো হয়। যেভাবে মরদেহ উদ্ধার হয়েছে তাতে সুস্পষ্ট দেখা যাচ্ছে মাটির নিচে ১ ফুট পা লেগে আছে।
এ ব্যাপারে পীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম বলেন মরদেহ থানায় নিয়ে আসার পর আজ সোমবার (২-অক্টোবর) পোস্ট মর্টেম শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন