লোডশেডিং সরকারের উন্নয়নের উদাহরণ : রিজভী
বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির কথা বলে জনগণের পকেট থেকে কোটি কোটি টাকা বের করে নিয়ে জনগণকে দুর্বিষহ লোডশেডিং উপহার দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, দাবদাহে মানুষের যখন স্বস্তি দরকার তখন এই দীর্ঘক্ষণ লোডশেডিং সরকারের উন্নয়নের জলজ্যান্ত উদাহরণ।
মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বর্তমান সরকার বিদ্যুৎ নিয়ে সবসময় ডাহা মিথ্যা কথা বলে এসেছে অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের তথ্য নিয়ে তারা জনগণকে ধোকা দিচ্ছে। মূলত কুইক রেন্টালের নামে বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনের সুযোগ করে ক্ষমতাসীনদের আত্মীয় স্বজনদের মোটাতাজাকরণ ছাড়া আর কিছুই উন্নতি হয়নি।
তিনি বলেন, ভর্তুকি দিয়ে কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ স্থাপন করে মূলত লুটপাটেরই সুযোগ দেয়া হয়েছে। আর কেটে নেয়া হয়েছে সাধারণ মানুষের পকেট। অনুন্নোয়নের শরীরে প্রসাধনী মাখালেই উন্নয়ন হয় না। সেটি হয় ধাপ্পাবাজি। আওয়ামী সরকার শুরু থেকেই এ কাজটি করে আসছে।
বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের এই মুখপাত্র দাবি করে বলেন, ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। শুধু বিপর্যয় বললে ভুল হবে। মানুষের জীবন বিপন্ন হতে চলছে। গরমজনিত রোগে হাসপাতালগুলোতে ভিড় বাড়ছে। গ্রামাঞ্চল ও মফস্বল শহরে লোডশেডিং হচ্ছে প্রায় ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা করে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, রাজশাহীর মতো বড় বড় শহরেও লোডশেডিং হচ্ছে দফায় দফায়।
তিনি বলেন, এদিকে বিদ্যুৎ সংকটে সারা দেশের মানুষের মধ্যে যখন মরণ দশা, তখন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) ওয়েবসাইট দিচ্ছে সম্পূর্ণ ভিন্ন তথ্য। পিডিবির ওয়েবসাইটে দেখা গেছে, গতকাল ও এর আগের কয়েকদিন দেশে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ প্রয়োজন ছিল, উৎপাদিত হয়েছে তার চেয়ে বেশি। তাদের বোর্ডের ওয়েবসাইটে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন সংক্রান্ত তথ্যে দেখা যায়- ২১ মে বিদ্যুৎ চাহিদা ছিল ৮ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট; উৎপাদন ছিল ৮ হাজার ৮৩০ মেগাওয়াট। ২০ মে চাহিদা ছিল ৮ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট; উৎপাদন ৮ হাজার ৮১৯ মেগাওয়াট। ১৯ মে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৮ হাজার ৫৫০ মেগাওয়াট; উৎপাদন ছিল ৮ হাজার ৭৫৩ মেগাওয়াট। অর্থাৎ দেশের কোথাও কোনো লোডশেডিং নেই বরং চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি।
তিনি আরো বলেন, অন্যদিকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু সাংবাদিকদের বলেন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ এ মুহূর্তে আমরা দিতে পারব না। এটা হতে আমাদের আরও ৩-৪ বছর লেগে যাবে। আরইবির কর্মকর্তারা গতকাল বলেছেন রাজধানীর চাহিদা মেটাতে গিয়ে তাদের সরবরাহ অনেকাংশে কাঁটছাঁট করেছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। এ কারণে ঢাকার বাইরের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলোতে গড়ে ৬-৭ ঘণ্টা লোডশেডিং করতে হয়েছে। কোথাও কোথাও আরও বেশি। ঢাকাকে আলোকিত রাখতে রাতে বেশিরভাগ গ্রামকে রাখা হচ্ছে অন্ধকারে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন