শঙ্কা কাটিয়ে সুপার টুয়েলভে বাংলাদেশ
চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শুরুতে স্কটল্যান্ডের সঙ্গে হেরে হোঁচট খায় বাংলাদেশ। পরের ম্যাচে ওমানকে হারালেও মূল মঞ্চে যেতে হলে শেষ ম্যাচে জয়ের কোনো বিকল্প ছিল না বাংলাদেশের সামনে। অন্তত তিন রানে হলেও পাপুয়া নিউ গিনিকে (পিএনজি) হারাতে পারলেই মূল পর্ব নিশ্চিত। এমন সমীকরণে দাঁড়িয়ে আগে ব্যাট করে রানের পাহাড় গড়ে টাইগাররা। ব্যাটে হাতে দলের ভরসার পর বল হাতেও পিএনজিকে ভুগিয়েছেন সাকিব আল হাসান। তার দারুণ অলরাউন্ড নৈপুণ্যতায় ‘বি’ গ্রুপ থেকে প্রথম দল হিসেবে মূল পর্বের টিকিট নিশ্চিত করল বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ওমানের আল-আমেরাত স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে ১৮১ তোলে বাংলাদেশ। ৪২ রানের দারুণ ইনিংসে শুরুটা করে দেন সাকিব। শেষের দিকে ঝড় তোলেন অর্ধশতক করা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও সাইফউদ্দিন। তাতেই বিশাল পুঁজির দেখা মিলে টাইগারদের। জবাবে বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণের সামনে ঠিকমতো দাঁড়াতে পারেনি পিএনজির ব্যাটাররা। প্রথম সাতজনের কেউই ছুঁতে পারেনি দুই অঙ্ক। অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিজে এসে ৪৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন কিপলিন দোরিগা। কিন্তু তা যথেষ্ট ছিল না। ৮৪ রানে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছে পিএনজি। বল হাতে মাত্র ৯ রান দিয়ে চার উইকেট শিকার করেন সাকিব।
মূল পর্বে বাংলাদেশ কোন গ্রুপে পড়বে সেটা এখনো নিশ্চিত নয়। দিনের অপর ম্যাচে ওমান-স্কটল্যান্ডের ফলের ওপর নির্ভর করবে বাংলাদেশের পরের রাউন্ডের গ্রুপ ভাগ্য। আপাতত গ্রুপের দ্বিতীয় দল হলে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের গ্রুপেই যাচ্ছে বাংলাদেশ। তবে যদি কোনো কারণে স্কটিশদের হারাতে পারে ওমান, তবে ভারত, পাকিস্তান গ্রুপে যাবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের দেওয়া বড় লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি পিএনজির। মাত্র ১১ রানেই ফেরেন ওপেনার লেগা সিয়াকা (৫)। নিজের দ্বিতীয় ওভারেই এই ব্যাটসম্যানকে ফেরান সাইফউদ্দিন। পরের ওভারে বল করতে এসে আরেক ওপেনার আসাদ ভালাকে (৬) ফেরান তাসকিন। দুর্দান্ত ক্যাচটি লাফিয়ে গ্লাভসবন্দি করেন সোহান। নিজের তৃতীয় ওভারে বল করতে এসে সেসে বাউকেও ফেরান তিনি। এ নিয়ে বিশ্বকাপের প্রথম পর্বেই আট উইকেট শিকার করেন সাকিব।
দশম ওভারে বল করতে এসে নরম্যান ভানুয়াকে সাজঘরে ফেরান মেহেদী। লং অফে থাকা মুশফিকুর রহিমের তালুবন্দি হন তিনি। পরের ওভারে হিরি হিরিকে নিজের চতুর্থ শিকার বানান সাকিব। তাতেই শহিদ আফ্রিদির সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের মাইলফলক স্পর্শ করেন সাকিব। এই সাত ব্যাটসম্যানের কেউই দুই অংক ছুঁতে পারেনি। ম্যাচের ১৫তম ওভারে চাদ সোপারকে দ্বিতীয় শিকার বানান সাইফউদ্দিন। শেষের দিকে একাই ব্যবধান কমান দোরিগা। তার অপরাজিত ৪৬ রানে ভর করে পিএনজি থামে ৯৭ রানে।
এর আগে, ব্যাট করতে এসে শুরুতেই হোঁচট খায় বাংলাদেশ। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে ফেরেন ওপেনার নাঈম শেখ। তিনে এসে আরেক ওপেনার লিটন দাসকে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামলে তোলেন সাকিব। প্রথম পাওয়ার প্লেতে এক উইকেট হারিয়ে ৪৫ রান তোলে টাইগাররা। খানিক পরই আসাদ ভালার শিকার হয়ে ফেরেন লিটন। ২৩ বলে ২৯ রান করে ডিপ মিডউইকেটে সেসে বাউয়ের তালুবন্দি হন তিনি।
নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিজে এসে আজও ব্যর্থ হন মুশফিক। ৮ বলে খেলেন মাত্র ৫ রান। ৭২ রানের মাথায় সিমন আতাইর শিকার হয়ে ফেরেন তিনি। দারুণ খেলতে থাকা সাকিবকে ফিরিয়ে দলকে বড় ব্রেক থ্রু এনে দেন আসাদ ভালা। ৩৭ বলে ৪৬ করে চার্লস আমিনির দুর্দান্ত ক্যাচবন্দি হন তিনি। আগের ম্যাচেও ৪২ করেন এই অলরাউন্ডার।
শেষের দিকে ব্যাট হাতে ঝড়ো ব্যাটে ২৭ বলে ফিফটি করেন তিনি। এরপর ডেমিয়েন রাভুর শিকার হয়ে ফেরেন তিনি। সাতে এসে আজও ব্যর্থ হন নুরুল হাসান সোহান। প্রথম বলে গোল্ডেন ডাকে এই ব্যাটসম্যানকে ফেরান রাভু। শেষ ওভারে চাদ সোপারের কাছ থেকে ঝড়ো ব্যাটে ৬ বলে ১৯ রান আদায় করেন সাইফউদ্দিন। তাতেই ১৮১ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন