সংসদ নির্বাচন : খুন বাড়ছে তৃণমূলে, অস্বস্তি কেন্দ্রে
সর্বোচ্চ সতর্কতায় আওয়ামী লীগ। মাঠের দ্বন্দ্ব কমাতে মরিয়া কেন্দ্র। নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হলে দল থেকে আজীবন বহিষ্কার- এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন খোদ দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। অন্তঃকোন্দল বাড়তে পারে বলে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের মনোনয়ন দেয়া হয়নি, আছে কৌশলগত কারণও। আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্ব নিরসনে পুলিশকেও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
নির্বাচন ঘিরে এমন সাবধানতা, এরপরও বন্ধ হচ্ছে না রক্তপাত। রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে রোজ খুন হচ্ছে। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে রক্তের রং যেন আরও গাঢ় হচ্ছে। রক্তের যে ধারা প্রবাহিত হচ্ছে, তাতে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংখ্যাই বেশি।
তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে উল্লেখ করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। গেল সপ্তাহে রাজশাহী অঞ্চলের চার জেলায় আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতাকর্মী খুন হন। ৩ ডিসেম্বর পাবনায় দলীয় সংঘর্ষে আওয়ামী লীগের দুই কর্মী নিহত হন। ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের পটিয়ায় ছাত্রলীগ নেতার ছুরিকাঘাতে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা খুনের অভিযোগ ওঠে। সম্প্রতি নরসিংদীতে দলীয় কোন্দলে খুন হন আওয়ামী লীগের আরও দুই কর্মী। মনোনয়নপত্র নিতে এসে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং ঢাকা দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খানের গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে দুই যুবক নিহত হন।
সূত্র জানায়, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর সারাদেশে অর্ধশতাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের মধ্যকার দ্বন্দ্বের কারণেই বেশি সংঘর্ষ হয়েছে। হতাহতের সংখ্যাও আওয়ামী লীগ শিবিরেই বেশি।
নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে, বাড়ছে শঙ্কাও। প্রতীক বরাদ্দের পর প্রচারণায় নামলে সংঘাত আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা বিভিন্ন মহলে। বিরোধী পক্ষের পাশাপাশি সংঘাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নিজেদের মধ্যকার দ্বন্দ্বের জের ধরেও। প্রার্থী আর মনোনয়ন-বঞ্চিতদের মধ্যে বিরোধ ক্রমশই স্পষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকেও এমন আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে বলে সূত্র জানায়।
গোয়েন্দাদের একটি সূত্র জানায়, নির্বাচন উপলক্ষে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় প্রশাসন। বিশেষ করে সরকারি দলের মধ্যকার দ্বন্দ্ব কমিয়ে আনতে বিভিন্ন সংস্থা মাঠপর্যায়ে কাজ করছে। দ্বন্দ্ব কমাতে পারলে সবার জন্যই মঙ্গল।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নির্বাচনে সাধারণত বিরোধী পক্ষের সঙ্গে সরকারপন্থীদের সংঘর্ষ হয়। গত ১০ বছরে বিরোধী পক্ষ অপেক্ষাকৃত দুর্বল অবস্থায়। এ কারণে সরকারি দলে বিরোধের বিষয়টি সামনে আসছে। অথচ এমন দ্বন্দ্ব আগেও ছিল।
তিনি বলেন, তৃণমূলে যে সংঘাতের খবর আসছে, তা এ মুহূর্তে আমাদের জন্য সুখের নয়। কারণ নিজেদের মধ্যে রক্তপাত বাড়লে অন্যরা সুযোগ নেবে। আমরা সেই সুযোগ দিতে প্রস্তুত নই।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ এ প্রসঙ্গে বলেন, রাজনীতিতে সংঘাত নতুন কিছু নয়। নির্বাচন ঘিরে দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটতেই পারে। এ নিয়ে আমরা শঙ্কিত নই, তবে সতর্ক অবস্থায় আছি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগে এখন দলীয় কোন্দল নেই। সবাই নির্বাচনমুখী। দল যাকে মনোনয়ন দেবে, তার হয়ে কাজ করার জন্য সবাই একাট্টা। তবে বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করতে নানা ষড়যন্ত্র করছে। প্রশাসন ও আওয়ামী লীগ সে ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে সদা সজাগ।সূত্র : জাগো নিউজ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন