সামিরাকে ডিভোর্সের সিদ্ধান্তই কি কাল হলো সালমানের?
দেশে এই মুহুর্তে টক অব দ্য কান্ট্রি অমর নায়ক সালমান শাহ। সম্প্রতি সালমান হত্যার আসামি রাবেয়া সুলতানা রুবির এক ভিডিওবার্তা নিয়ে তোলপাড় চলছে। ওই ভিডিওবার্তায় তিনি দাবি করেন, সালমান শাহকে খুন করা হয়েছে। সালমান শাহর রহস্যজনক মৃত্যুর ২১ বছর মামলায় নতুন মোড় সৃষ্টি হলো। নড়েচড়ে বসেছে তদন্ত সংস্থাও।
এদিকে সালমান শাহ্র মেজ মামা আলমগীর কুমকুম, থাকেন যুক্তরাষ্ট্রে। সালমানের ডাক নাম ইমন তারই দেয়া। তিনি গণমাধ্যমের কাছে এ নায়কের মৃত্যুর নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন সম্প্রতি।
সোমবার (৭ আগস্ট) সালমান হত্যা মামলার অন্যতম আসামি রাবেয়া সুলতানা রুবি ফেসবুক ভিডিওতে জানান, সালমান আত্মহত্যা করেননি, তাকে হত্যা করা হয়েছে। সে সূত্রে কুমকুম দাবি তুলেছেন সালমান শাহর স্ত্রী সামিরা, শ্বশুর শফিকুল হক হীরা ও রুবিকে জিজ্ঞাসাবাদের।
কুমকুম জানান, সালমানের মৃত্যুর এক সপ্তাহ আগে আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে আসেন তিনি। ঢাকায় না গিয়ে সরাসরি সিলেটে চলে যান। সালমানের মৃত্যুর দিন (৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৬) ছোটবোনকে নিয়ে ঢাকায় আসার কথা ছিল তার।
তিনি বলছিলেন, বৃহস্পতিবার (সালমানের মৃত্যুর আগের দিন) রাত ১১-১২টার দিকে ইমন আমাকে ফোন করে পরদিন সকালে ঢাকায় আসছি কিনা জিজ্ঞেস করে। আমি হ্যাঁ বলার পর সে আমাকে না করে। সে আমাকে বলে, সকালে আমি সিলেটে আসতেছি, সকালে তোমার সাথে জুমার নামাজ পড়ব। এক সপ্তাহ থাকব, মানসিকভাবে ফ্রেশ হব।
এরপর সালমান জানান, সকালে ঘুম থেকে উঠে ডিভোর্স লেটারে সাইন করবেন। কুমকুম বলেন, ‘আমি তাকে কারণ জিজ্ঞেস করলে বলে, ওকে নিয়ে আর সংসার করা যায় না। আমি আসলে তোমাকে সব বলব, প্রমাণ দেখাবো। ওকে, ঠিক আছে বলে আমি ফোন রেখে দিই। এটাই ছিল তার সাথে আমার শেষ কথা।
তিনি বলেন, সামিরাকে ডিভোর্সের কারণ মিডিয়া তাকে (সালমান) জিজ্ঞেস করবে। তখন যাতে বলতে না পারে সে জন্য তাকে রাতের মধ্যেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আলমগীর কুমকুম জানান, সালমানের লাশ সিলেটে নেওয়ার মাঝপথ থেকে ফিরে আসেন সামিরাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। তখন সামিরার বাবা শফিকুল হক হীরা তাকে যেতে দেননি।
তিনি বলেন, ‘দিতি আমার ছোট বোনের বান্ধবী। তাকে আমি ফোনে বলি, জানি না সামিরা কী করছে। কিন্তু সামিরাকে তার স্বামীকে শেষ বিদায় দিতে যেতে হবে।
দিতি আমাকে বলল, আসেন বাসায়। দিতি আমাকে নিয়ে গেল। আমি গিয়ে ওখানে অনেক মহিলাকে বসা পাই। ওই হীরা, উনি আগে ছিল বেয়াই। এখন বেয়াই না। উনি এক পুলিশ অফিসারকে নিয়ে বসে ছিলেন। হীরা বললেন, না ও যাবে না।
তখন আমি তাকে বললাম, সামিরার দায়িত্ব স্বামীকে শেষ বিদায় দেওয়ার। সামিরা পাশে দাঁড়িয়ে থাকলেও সে কোন কথা বলেনি। রুবি তখন ওখানে দাঁড়ানো। ও তখন বলেছে, না ও যাবে না। উনি কে? উনাকে তো আমি চিনি না।
মৃত্যুর দশদিন পর সালমান শাহ্র মা নীলা চৌধুরী, বাবা কমর উদ্দিন চৌধুরী, ছোট ভাই, শ্বশুর হীরা, শাশুড়ি লুসি, স্ত্রী সামিরা, গোয়েন্দা পুলিশসহ সালমানের ফ্ল্যাটে যান আলমগীর কুমকুম। সেখানে সালমানের শ্বশুর হাসাহাসি করলে তিনি রেগে যান।
কুমকুম বলছিলেন, ডিবি পুলিশের তৎকালীন ডিসি বদরুল করিম সাহেব সেখানে ছিলেন। পাশের বাসায় লোকজন সাক্ষ্য দিয়েছে তারা রাত দুটা-আড়াইটার দিকে সালমান শাহ্ যে রুমে ছিল সে রুমে ধস্তাধস্তি দেখেছেন। খাবার ছিল না খাওয়া। বাথরুমে ও সুটকেসে ভেজা কাপড় ছিল। সামিরার একটাও দামি কাপড়-চোপড় পাওয়া যায়নি।
ইঞ্জেকশনে অ্যাম্পুল, খালি সিরিঞ্জ পাওয়া গেছে আমার সামনে- ওগুলো গেল কোথায়? সবগুলোর ফটোগ্রাফ আছে আমার কাছে, লাগলে দিব।সালমানকে যে হত্যা করা হয়েছে তার অন্যতম আলামত হিসেবে তিনি বলেন, সালমান শাহ্ মালবোরো সিগারেট খেত। কিন্তু তার রুমে ৩-৪টা বেনসন সিগারেটের টুকরো পাওয়া গেছিল। যেটা ডিসি, ডিবি বদরুল আমিন সাহেব আমার সামনে আলামত হিসেবে জব্দ করেন।
এদিকে সোমবারের (৭ আগস্ট) ভিডিওতে রুবি জানান, তিনিই নাকি একমাত্র জীবিত ব্যক্তি যার কাছে প্রমাণ আছে সালমানকে খুন করা হয়েছে। দায়ী করেন সামিরার পরিবার, নিজের স্বামী চ্যান লিং ও ভাই রুমিকে। তবে বুধবার (৯ আগস্ট) আরেকটি ভিডিওতে বলেন, ইমোশনাল হয়ে বলেছেন সালমানকে হত্যা করা হয়েছে। তিনিও সুষ্ঠু তদন্ত আশা করছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন