সিলেটের দিঘী গুলি সংস্কার হলে পর্যটন নগরীরি হিসেবে পরিচিতির সম্ভাবনা বাড়বে
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2023/01/IMG_20230126_113805.jpg)
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2025/02/475351977_1256003665483861_2959209934144112011_n.jpg)
সিলেটের প্রতিটি দিঘী মরা দিঘীতে পরিনত হয়ে পড়েছে। একসময় ‘দিঘীর শহর’ হিসেবে পরিচিত ছিল পর্যটন নগরী সিলেট। মজুমদার দিঘী, দস্তিদার বাড়ী দিঘী, রামের দিঘী, লালদিঘী, ধোপাদিঘী, মাছুদিঘী, কাস্টঘর দিঘী, সুপানিঘাট দিঘী, কাজলশাহ দিঘী, সাগরদিঘী, চারাদিঘীসহ অসংখ্য দিঘী ছিল নগরজুড়ে। তবে নগরীতে মানুষের কোলাহল বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একের পর এক ভরাট হয়েছে এসব দিঘী। যেগুলো অবশিষ্ট আছে, দখল- বেদখলে তার বেশিরভাগই চির চেনারূপ সংকটে পড়েছে। এক সময়কার ঐতিহ্যবাহী ধোপাদিঘীও পরিণত হয়েছিল ভাগাড়ে।
প্রায় হারিয়ে যেতে বসা এই দিঘী পেয়েছে নান্দনিক রূপ। নগরীর মানুষকে নির্মলতার স্বাদ দিতে এই দিঘীকে বদলে দেওয়া হয়েছে নান্দনিকতায়। দিঘির চারপাশে প্রায় ৫০০ মিটার দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। দিঘীতে নামার জন্য রয়েছে সুদৃশ্য দু’টি ঘাট। দর্শনার্থীদের বিশ্রামের জন্য রাখা হয়েছে টাইলস বসানো বেঞ্চ, রয়েছে টয়লেটও।
ধোপাদিঘী এলাকায় সিটি করপোরেশনের মসজিদের উত্তর পাশ দিয়ে দিঘিতে প্রবেশের পথ রাখা হয়েছে। সন্ধ্যা বেলায় দিঘী এলাকায় রাখা হয়েছে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা।
তবে শিশুদেও খেলার জায়গা ও দিঘীর পানিতে প্যাডেল বোট রাখার কথা রয়েছে। সব মিলিয়ে এক সময়ের নোংরা ধোপাদিঘী এখন নগরবাসীর ফুসফুস হয়ে উঠেছে। নির্মলতার স্বাদ প্রতিদিন বিকেল হলেই সেখানে দলবেধে ছুটছেন নানা বয়সি মানুষ। অনেককে আবার ওয়াকওয়ে-দিঘীর ঘাটে সেলফি তুলছেন, টিকটক ভিডিও করতেও দেখা গেছে। বিনোদন প্রেমিদের কাছে ক্রমেই ধোপাদিঘী পরিচয় পাচ্ছে সেলফি দিঘী’ হিসেবে।
গত বছরের ১১ জুন ধোপাদিঘীর চারপাশজুড়ে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে উদ্বোধন করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ড. একে আবদুল মোমেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৩ এপ্রিল সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল শাখা থেকে এই প্রকল্পের পরিকল্পনা করা হয়। সিসিক ধোপাদিঘীকে নতুন রূপ দেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর ভারত সরকার এগিয়ে আসে এর অর্থায়নে। ধোপাদিঘী এরিয়া ফর বেটার এনভায়মেন্ট অ্যান্ড বিউটিফিকেশন’ নামে প্রকল্প গ্রহণ কওে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ শুরু হয়।
সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানান, দীঘিতে পানি ছিল ৩ দশমিক ৪১ একর জায়গাজুড়ে। চারপাশে দখল হওয়া জায়গা উদ্ধারের পর পানির সীমানা বেড়ে কমপক্ষে ৩ দশমিক ৭৫ একরে উন্নীত হয়। নোংরা দুর্গন্ধময় পরিত্যক্ত এই দীঘিকে অপরূপ সৌন্দর্যে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ধোপাদিঘীতে সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। চারদিকে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। বসার জন্য রয়েছে বেঞ্চ। পুকুরে নামার জন্য রয়েছে দৃষ্টিনন্দন ঘাট। পরিষ্কার করা হয়েছে পুকুরের নোংরা পানি। নৈসর্গবিদের পরামর্শে গাছ লাগানো হয়েছে। স্থাপন করা হয়েছে পাবলিক টয়লেটও।
তবে পরিবশেবীধদের মতে যদি সিলেটের প্রতিটি দিঘী সংস্কার ও অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে উদ্ধার করে সংস্কার করে নান্দনিক ভাবে সাজানো হয় তাহলে সিলেট নগরীর একটি পর্যটন নগরীরি হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে পৃষ্ঠপোষকতায় সিলেট সিসিক ও সরকারের সহযোগীতার একান্ত প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন।
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2024/12/469719549_122234398946008134_2936380767280646127_n.jpg)
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন