সিলেটের সুতারকান্দি বডার দিয়ে আবারও কয়লা আমদানি শুরু
আগামী মাস থেকে শীত মৌসুমের হাওয়া বইছে। সিলেট থেকে কমতে শুরু করেছে বৃষ্টি, যার ফলে সিলেট জুড়ে ইট ভাটা গুলোতে বৃষ্টি কমতেই ইট নির্মাণের পুরাপুরি প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
এ বছর সিলেটে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ও বন্যার কারণে দীর্ঘ দিন ইট ভাটা গুলো বন্ধ থাকার পর নতুন করে আবার কার্যাক্রম শুরু করেছেন ইট ভাটা মালিক পক্ষ। নানা সমস্যার কারণে ভারত থেকে প্রায় ১৬ মাস বন্ধ ছিল সুতারকান্দি স্থলবন্দরে কয়লা আমদানি।
শুক্রবার (১লা অক্টোরব) থেকে ১১ গাড়ি ও শনিবার (২ অক্টোবর) ১৫ গাড়ি কয়লা নিয়ে মোট ২৬ গাড়ি কয়লা নিয়ে সুতারকান্দি স্থলবন্দরে দেশে প্রবেশ করেছে। বন্দরে কয়লা আমদানি শুরু হওয়ায় দীর্ঘ দিন পর শ্রমিকদের মধ্যে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। পূজার বন্ধের কারণে শনিবার (২ অক্টোবর) থেকে সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ থাকবে। পূজার পরে আমদানি পুরোদমে শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্রে জানা যায়, ভারতের মেঘালয় থেকে আমদানিকৃত কয়লা সারা বাংলাদেশে সরবরাহ করা হতো।
২০২১ সালের মে মাসের দিকে ভারতের মেঘালয়ে একটি মামলার কারণে সুতারকান্দি স্থলবন্দর দিয়ে কয়লা আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ দিন কয়লা আমদানি বন্ধ থাকার পর আসাম থেকে কয়লা আমদানি শুরু করেছেন আমদানিকারকরা।
ব্যবসায়ীরা জানান, সুতারকান্দি স্থলবন্দর হয়ে বাংলাদেশে কয়লা সরবরাহ করা হতো। আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে ছিলেন। কয়লা সরবরাহ বন্ধ থাকায় তাদের বেশি দামে ইন্দোনেশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে কয়লা আমদানি করতে হয়েছে। মেঘালয় থেকে প্রতি মেট্রিক টন কয়লা ৯৫ ডলারে ক্রয় করা যেতো। মেঘালয়ের কয়লা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ইন্দোনেশিয়া থেকে ১৪০ থেকে ১৪৫ ডলার এবং দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে প্রতি মেট্রিক টন ১৫০ থেকে ১৫৫ ডলারে আমদানি করতে হয়েছে। এখন আসাম থেকে কয়লা আমদানি করতে প্রতি মেট্রিক টনে ব্যয় হচ্ছে ১১৫ ডলার।
তারপরও আসামের কয়লা আমদানি শুরু হওয়ায় সিলেটের ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা কিছুটা হলেও স্বস্থি পেয়েছেন।
সিলেট কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের অর্থ সম্পাদক জয়দেব চক্রবর্তী জানান, এক সময় সারাদেশের কয়লা সিলেট হয়ে যেতো। এখন ইন্দোনেশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে কয়লা আমদানি হওয়ায় দেশের অন্য স্থানের ব্যবসায়ীরা এখন সুতারকান্দি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তবে আসাম থেকে আমদানিকৃত কয়লার দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় ব্যবসায়ীরা আবারো সিলেটমুখী হবেন বলে জানান তিনি।
তিনি জানান, কয়লা আমদানি শুরু হওয়ায় শ্রমিকদের মধ্যেও সৃষ্টি হয়েছে কর্মচাঞ্চল্য। আমদানি বন্ধ থাকায় বিপুল সংখ্যক শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন। তারা চরম অর্থ সংকটে দিনাতিপাত করছেন। এখন আবারো আমদানি শুরু হওয়ায় তাদের মধ্যে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। প্রথম দিনে ১১ গাড়ি এবং শনিবার প্রায় ১৫ গাড়ি কয়লা এসেছে। পূজার জন্য সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে।
পূজার পরে আমদানির পরিমাণ আরো বাড়বে বলে রপ্তানিকারকরা জানিয়েছেন। তখন প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ গাড়ি কয়লা আসবে বলে তিনি আশা করছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন