সোহরাওয়ার্দীতে ছাত্রলীগের সম্মেলনে লতিফ সিদ্দিকী

হজ সম্পর্কে কটূক্তির অভিযোগে দল ও মন্ত্রিসভা থেকে বহিষ্কৃত আবদুল লতিফ সিদ্দিকী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৯তম সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।

শুক্রবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঐতিহ্যবাহী ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের দুই দিনের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই সম্মেলনের দর্শক সারির প্রথম দিকেই লতিফ সিদ্দিকীকে বসা অবস্থায় দেখা গেছে।

জানা যায়, শুক্রবার দুপুরেই তিনি এই সম্মেলনে যোগ দেন। তার বাম পাশে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম এবং ডান পাশে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনিকে বসা অবস্থায় দেখা গেছে।

ছাত্রলীগের সম্মেলনে লতিফ সিদ্দিকীর যোগ দেয়া নিয়ে সম্মেলনে কানাঘুষা শুরু হয়েছে। অনেকে বলাবলি করছেন, তিনি আবার আওয়ামী লীগে ফিরছেন।

২০১৪ সালের ২৮ সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি সফরে গিয়ে দলীয় এক সভায় হজ নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন লতিফ সিদ্দিকী। ওই বক্তব্য বাংলাদেশে গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে প্রথমে মন্ত্রিসভা এবং পরে দল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। আর লতিফ সিদ্দিকী সংসদ সদস্য পদ ছাড়ার পর ২০১৭ সালের ৩১ জানুয়ারি উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের হাসান ইমাম খাঁন জয়ী হয়ে আসেন।

যুক্তরাষ্ট্রে দেয়া বক্তব্য প্রকাশের পর ধর্মানুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে দেশের বিভিন্ন জেলায় লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে ১৮টি জেলায় ২২টি মামলা হয়। সেসব মামলার বিচার এখনও শেষ হয়নি।

২০১৪ সালের নভেম্বরের শেষ দিকে ধানমন্ডি থানায় আত্মসমর্পণের পর কারাগারে যান লতিফ সিদ্দিকী। ২০১৬ সালের ২৯ জুন জামিনে মুক্ত হন তিনি। এরপর সংসদে দিয়ে বক্তব্য রেখে টাঙ্গাইল-৪ আসন থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।

মুক্তি পাওয়ার পর বেশ কয়েক মাস চুপচাপ থাকা লতিফ আবার আলোচনায় আসেন ২০১৭ সালে। হজ নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করার তিন বছর পর ওই বছর তিনি হজ করে আসেন।

সম্প্রতি টাঙ্গাইলে একটি অনুষ্ঠানে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি কেন দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছি, কেন কারাগারে গিয়েছি তা আমিই ভালো জানি। দল থেকে বহিষ্কার হলেই দলকে বহিষ্কার করা যায় না। আওয়ামী লীগের জন্মদাতা নেতাদের মধ্যে আমিও একজন।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি যখন টাঙ্গাইলে আসি তখন আমার নিরাপত্তার জন্য পুলিশ দিয়ে রাখে। তার মানে নেত্রী আমাকে কাজে লাগাবে। আপনারা শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা রাখুন।’

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার অংশ নেয়ার গুঞ্জন নিয়েও কথা বলেন লতিফ সিদ্দিকী। বলেন, ‘এক বাচাল ফোন করে আমার কাছে মতামত চেয়েছে আমি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসব কি না। আচ্ছা এ ব্যাপারে আমি মতামত বা সিদ্ধান্ত দেবার কে?’

‘মতামত দেবে জনগণ। আমি সিদ্ধান্ত দেয়ার ক্ষমতা রাখি না। সিদ্ধান্ত দেবে সময়। সিদ্ধান্ত দেবে পরিবেশ। নেতার প্রতি আমার আস্থা আছে।’