হাতীবান্ধায় পুলিশ হেফাজতে হিমাংশুর লাশ : ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যের কমিটি
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় স্ত্রীর মৃত্যুর কারণ জানতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক হিমাংশু পুলিশ হেফাজতে মারা গেছেন। পুলিশের দাবী সে ওয়াইফাইয়ের তার জানালার গিরিল ও গলায় পেচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনার রহস্যের কারন জানতে ও পুলিশের দায়িত্ব পালনে কোনো অবহেলা ছিলো কি না তা দেখতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ওই কমিটিতে লালমনিরহাট পুলিশের এ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফা জামানকে প্রধান করা হয়েছে। কমিটি’র অন্য সদস্যরা হলেন, ডিবি পুলিশের ওসি আমিরুল ইসলাম ও কোর্ট ইন্সপেক্টর জাহাঙ্গীর আলম।
লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা শনিবার রাতে সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান ওই কমিটি ৩ কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবেন ।
জানা গেছে, ওই উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের পুর্ব কাদমা এলাকা থেকে শুক্রবার সকালে স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যুর কারণ জানতে হিমাংশু রায় নামে এক স্বামীকে আটক করে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে একটি রুমে একা রাখলে সেই স্বামী আত্নহত্যা করেন এমন দাবী পুলিশের। শনিবার সকালে ময়না তদন্তের জন্য হিমাংশু র মরদেহ লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে মৃগে প্রেরণ করা হয়েছে।
হাতীবান্ধার ইউএনও সামিউল আমিন ও হাতীবান্ধা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার হিরনময় বম্মর্ণ সাগরও প্রাথমিক ভাবে ধারনা করেছেন আত্নহত্যায় হিমাংশু রায়ের মৃত্যু হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার সকালে ওই উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের পুর্ব কাদমা মালদাপাড়া থেকে রহস্যজনক মৃত্যুর শিকার ছবিতা রানী নামে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় তার স্বামী হিমাংশু রায়কে মৃত্যুর কারণ জানতে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। সন্ধ্যায় পুলিশ হেফাজতে তার মৃত্যু হয়।
হাতীবান্ধা থানার ওসি এরশাদুল আলম বলেন, ওই এলাকার বিশেশ্বর রায়ের পুত্র হিমাংশু রায়ের বাড়ীতে তার রহস্যজনক মৃত্যুর শিকার স্ত্রী ছবিতা রানী (৩০)’র মরদেহ দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়।
পুলিশ লাশ উদ্ধারসহ মৃত্যুর কারণ জানতে ওই নারীর স্বামী হিমাংশু রায়কে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে থানার একটি রুমে রাখা হয়। সেই রুমে হিমাংশু রায় আত্নহত্যার চেষ্টা করেন । টের পেয়ে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষনা করেন।
হাতীবান্ধা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার হিরনময় বম্মর্ণ সাগর বলেন, হিমাংশু রায়কে হাসাপাতালে নিয়ে আসার আগে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে হিমাংশুর মৃত্যু হয়েছে আত্নহত্যা করে। তার গলায় দাগ পাওয়া গেছে।
রাত সাড়ে ৮ টার দিকে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সামিউল আমিন হাসপাতালে গিয়ে মরদেহ’র প্রাথমিক তদন্ত করেন। প্রায় দুই ঘন্টা তিনি তদন্ত শেষে জানান, আমরা প্রাখমিক ভাবে ধারনা করছি, আত্নহত্যার কারণেই পুলিশ হেফাজতে হিমাংশু রায়ের মৃত্যু হয়েছে।
লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক হিমাংশু রায়ের আত্নহত্যার কারণ জানতে ও ওই ঘটনায় পুলিশের দায়িত্ব পালনে কোনো অবহেলা ছিলো কি না তা দেখতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন