এই বিচার মাইলফলক হয়ে থাকবে : মাহবুবে আলম

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষণাকে মাইলফলক হিসেবে দেখছেন আটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

তিনি বলেন, আমি মনে করি আজ এই রায় ঘোষণার মধ্য দিয়ে বিচার বিভাগের ইতিহাসে একটা মাইলফলক হল। যে মামলাটিকে পূর্ববর্তী সরকার (বিএনপি- জামায়াত) একেবারে শেষ করে দিতে চেয়েছিল। সেই মামলাকে যে দুর্দশা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এটাকে বিরাট জয় বলবো।

তিনি বলেন, আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছিল রাষ্ট্রপক্ষ। কিন্তু সবার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হয়নি।

রাষ্ট্রপক্ষে আপিল করা হবে কিনা? এই প্রশ্নের জবাবে মাহবুবে আলম বলেন, রায় না পড়েতো বলা যাবে না। রায় পেলে, তা পড়ে পরে আপিল বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় আজ বিচারিক আদালত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাবেক বিশেষ সহকারী হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে।

আর তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপি নেতা লূৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তাদের প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ডও দেয়া হয়েছে। আর বাকিদের বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত অস্থায়ী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন এ রায় ঘোষণা করেন।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে আজকে রায় ঘোষণার জন্য দিন ঠিক রেখেছিলেন বিচারক।

এ রায়কে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারাদেশে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

গ্রেনেড হামলার দুই মামলায় মোট আসামি ছিল ৫২ জন। বিচার চলাকালীন আসামি জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় এবং হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান ও শরিফ শাহেদুল ইসলাম বিপুলের ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর হামলার মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় তাদের এই মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এজন্য বর্তমানে মামলা দুটিতে মোট আসামি ৪৯ জন।

কারাগারে থাকা ৩১ আসামিকে আজ সকালে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের জনসভায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। এতে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন।

তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান ওই ঘটনায়। আহত হন শতাধিত নেতাকর্মী।