খালেদার মামলা পরিদর্শনে হাইকোর্টে ইইউ বিশেষজ্ঞ

কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মামলা পরিদর্শনে হাইকোর্টে এসেছেন এরিনি মারিয়া নামে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) একজন লিগ্যাল এইড বিশেষজ্ঞ। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে খালেদা জিয়ার মামলার শুনানির সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন।

দুর্নীতির অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণ অনেকটা অনিশ্চিত। তার নামে ফেনী-১, বগুড়া-৬ ও ৭ আসনে মনোনয়ন নেয়া হয়।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) খালেদার তিনটি আসনেরই প্রার্থিতা বাতিল করেছে। ইসির এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিট করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। এ বিষয়ে আজ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিনি নির্বাচন করতে পারবেন কি-না সে বিষয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার সিদ্ধান্ত দেবেন আদালত।

বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি ইকবাল কবীরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে অনুষ্ঠিত শুনানিতে আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার নওশাদ জমির, ব্যারিস্টার মীর হেলাল ও ব্যারিস্টার ফাইয়াজ জিবরান।

এর আগে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার নওশাদ জমির। রিটের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্যারিস্টার ফাইয়াজ জিবরান। রোববার দুপুর ২টার দিকে নির্বাচন কমিশন থেকে আদেশের কপি নিয়ে আসেন আইনজীবী ব্যারিস্টার ফাইয়াজ জিবরান।

মনোনয়নপত্র গ্রহণের বিষয়ে করা আবেদনের বিষয়ে ব্যারিস্টার ফাইয়াজ জিবরান বলেন, ‘নির্বাচনবিধি (১২)-১ এর ‘ঘ’ অনুসারে মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। সেখানে যে সব সেকশন রয়েছে সেসব কানেক্টেড নির্বাচনী আচরণ-সংক্রান্ত।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের মাঠে কেউ যদি কোনো অপরাধ করে যেমন- মনোনয়নপত্র দাখিলের সময়, নির্বাচনী প্রসেস শুরুর সময়, কাউকে মারধরের ফলে, কাউকে গুলি করে আহত করা, ভোট কেন্দ্রে অরাজক অবস্থা তৈরি করে আচরণবিধি লঙ্ঘন করা- এসব ক্ষেত্রে নির্বাচন-সংক্রান্ত বিধিতে মনোনয়নপত্র বাতিল করা যায়। এখনও সে অবস্থাই তৈরি হয়নি। সবশেষ কথা হলো, বেগম খালেদা জিয়া এখন কারাগারে। তার দ্বারা এসব কোনো অপরাধে জড়িত হওয়ার সুযোগ নেই।’

গত ৮ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনে আপিলের শুনানির পর সংখ্যাগরিষ্ঠের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার তিনটি আসনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন এ সিদ্ধান্ত দেন।
শুনানিতে প্রার্থিতা বহালের পক্ষে মত দেন মাহবুব তালুকদার। এর বিপক্ষে মত দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ চারজন।

প্রার্থিতা বাতিল করা নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে খালেদা জিয়ার পক্ষে রিট দায়ের করা হয়।

নির্বাচন কমিশনের পুনঃতফসিল অনুযায়ী, আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। আজ ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে প্রার্থী ও তার সমর্থকরা নির্বাচনী এলাকায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন।