বরেণ্য সঙ্গীতশিল্পী সুবীর নন্দী মারা গেছেন

সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দী মারা গেছেন। বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৪টায় তিনি মারা যান।

বাংলাদেশে সুবীর নন্দীর চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন এ তথ্য জানিয়েছেন।

মৃত্যুকালে সুবীর নন্দীর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। তিনি স্ত্রী, কন্যাসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

১৮ দিন ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ৩০ এপ্রিল সিঙ্গাপুরে নেয়া হয় সুবীর নন্দীকে।

সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছিল। সেখানে তার সঙ্গে কন্যা ফাল্গুনী নন্দী ছিলেন।

শুরুতে শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতি হলেও এরপর অবনতি হতে থাকে। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা চলাকালীন পরপর তিনবার হৃদরোগে আক্রান্ত হন।

সুবীর নন্দী গত ১২ এপ্রিল পরিবারের সবাইকে নিয়ে মৌলভীবাজারে আত্মীয়ের বাড়িতে যান। সেখান থেকে ১৪ এপ্রিল ঢাকায় ফেরার পথে ট্রেনে ওঠার পর শ্রীমঙ্গলে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

ওইদিনই রাতেই সুবীর নন্দীকে সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। আইসিইউতে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ও হার্টের অসুখে ভুগছিলেন।

সুবীর নন্দী ১৯৫৩ সালের ১৯ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং থানায় নন্দীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। দীর্ঘ ৪০ বছরের ক্যারিয়ারে আড়াই হাজারেরও বেশি গান গেয়েছেন তিনি। বেতার থেকে টেলিভিশন, তারপর চলচ্চিত্রেও উপহার দিয়েছেন অসংখ্য জনপ্রিয় গান।

১৯৮১ সালে তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘সুবীর নন্দীর গান’ বাজারে আসে ডিসকো রেকর্ডিংয়ের ব্যানারে। সুবীর নন্দী প্রথম গান করেন ১৯৭৬ সালে আবদুস সামাদ পরিচালিত ‘সূর্যগ্রহণ’চলচ্চিত্রে।

চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করে চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন সুবীর নন্দী। আর চলতি বছরে সংগীতে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করে।

সুবীর নন্দীর জনপ্রিয় গানের কয়েকটি হলো- আমার এ দুটি চোখ, বন্ধু হতে চেয়ে, আমি বৃষ্টির কাছ থেকে কাঁদতে শিখেছি, চাঁদের কলঙ্ক আছে, দিন যায় কথা থাকে, একটা ছিল সোনার কন্যা, হাজার মনের কাছে, কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো, পাহাড়ের কান্না, বন্ধু হতে চেয়ে তোমার ইত্যাদি।