শহীদুল আলমের বিষয়ে অপেক্ষা করতে বললেন আপিল বিভাগ

আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠাতে হাইকোর্টের দেয়া আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল আবেদনের শুনানি আগামী ১৩ আগস্ট পর্যন্ত মুলতবি করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ বিষয়টি শুনানি না করে (স্ট্যান্ডওভার) মুলতবি করেন।

আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মমতাজ উদ্দিন ফকির, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ ও অমিত তালুকদার।

অপরদিকে রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসেন, জ্যোতির্ময় বড়ূয়া ও আইনুন নাহার অ্যানি।

নিয়ম অনুযায়ী আপিল আবেদনটি আজ আদালতে শুনানির জন্য আসার পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, হাইকোর্টে আদেশের বিরুদ্ধে আবেদনটি করা হয়েছে। তখন শহিদুল আলমের পক্ষে আইনজীবী সারাহ হোসেন বলেন, হাইকোর্টের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ‘মেডিকেল রিপোর্ট’ এসেছে। তখন আদালত বলেন, ‘অপেক্ষা করুন।’এরপর সোমবার পর্যন্ত বিষয়টি মুলতবি রাখেন আপিল বিভাগ। এর আগে শহিদুল আলমের স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদন আজ হাইকোর্ট জমা দেয়া হয়।

এদিকে, বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবীরের হাইকোর্ট বেঞ্চে বিষয়টি আজ (বৃহস্পতিবার) শুনানির জন্য রয়েছে।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সাম্প্রতিক আন্দোলনের মধ্যে ‘উস্কানিমূলক মিথ্যা’ বক্তব্য প্রচারের অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে করা এক মামলায় গত ৬ আগস্ট শহিদুল আলমকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। ৫ আগস্ট রাতে ধানমন্ডির নিজ বাসা থেকে তাকে ধরে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। এরপর তাকে নির্যাতন ও রিমান্ডে পাঠানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এবং চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশনা চেয়ে তার স্ত্রী রেহনুমা আহমেদ গত ৭ আগস্ট রিট করেন।

ওই রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার (৭ আগস্ট) হাইকোর্ট শহিদুল আলমকে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য অবিলম্বে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে পাঠাতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে তার স্বাস্থ্যের বিষয়ে বৃহস্পতিবার আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ চেয়ে চেম্বার জজ আদালতে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। এর প্রেক্ষিতে বুধবার (৮ আগস্ট) চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালতে শুনানি হয়। তিনি হাইকোর্টের আদেশে স্থগিতাদেশ না দিয়ে আবেদনটি বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন।

হাইকোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (০৮ আগস্ট) শহিদুল আলমকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে নেয়া হয়। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তাকে আবারও গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে নেয়া হয়।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর শহিদুল আলমের শারীরিক অবস্থা ভালো বলে মেডিকেল বোর্ড মত দিয়েছে। এরপরই তাকে আবার ডিবি হেফাজতে নেয়া হয়।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে গত শনি ও রোববার জিগাতলা এলাকায় সংঘর্ষের বিষয়ে কথা বলতে বেশ কয়েকবার ফেসবুক লাইভে আসেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। নিরাপদ সড়কের দাবিতে সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলন চলাকালে একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেন তিনি।